পুলিশ নৃশংস বর্বরতা চালিয়ে পঙ্গু করে দিল ৩ শিবির নেতাকে
পুলিশ নৃশংস বর্বরতা চালিয়ে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করে দিল নিরাপরাধ তিন শিবির নেতাকে। তারা হলেন ছাত্রশিবির জয়পুরহাট জেলা সভাপতি আবু যর গিফরী, সেক্রেটারী ওমর আলী ও আল আমিন।
গত ৮ ডিসেম্বর ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় আসার পথে রাজধানীর আব্দুল্লাহপুরে বাস থেকে নামিয়ে ছাত্রশিবির জয়পুরহাট জেলা সভাপতি আবু যর গিফরী ও সেক্রেটারী ওমর আলী কে আটক করে আইন শৃংখলা বাহিনী। কিন্তু বেআইনিভাবে তাদের গ্রেপ্তারের কথা অস্বীকার করে পুলিশ। এ নিয়ে তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। গত ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে ছাত্রশিবির দেশব্যাপি বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে। ৯ দিন পর ১৭ ডিসেম্বর ছাত্রশিবিরের নিখোঁজ দুই নেতাকে আটক করার কথা জানায় র্যাব। র্যাব-৫ এর পক্ষ থেকে বলা হয়, শিবিরের এই ২ নেতাসহ আরো একজনকে ভোররাতে জয়পুরহাটের পাচবিবি উপজেলার কদমতলী থেকে আটক করা হয়। এর সাথে কথিত অস্ত্র উদ্ধারের নাটকও সাজায় র্যাব। ওই দিন দুই ছাত্রনেতাকেই সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির করা হয়। তখন তারা স্বাভাবিকভাবে হেটে সকলের সামনে আসেন। র্যাব তাদের আটকের কথা জানানোর পরই পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। পুলিশ তাদের পাওয়ার পরই কথিত বন্ধুক যুদ্ধের নাটক সাজিয়ে তাদের পায়ে ঠান্ডা মাথায় গুলি করে। পরে আশংকাজনক অবস্থায় তাদের হাসপাতালে ভর্তি করে। আহতদের প্রথমে জয়পুরহাট জেলা আধুনিক হাসপাতালে ভর্তি করা হলে তাদের অবস্থা অবনতি হওয়ায় বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। এরপর তাদের ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। কিন্তু তাদের পায়ের অবস্থা খারাপ হতে থাকে। পরে তাদের তিনজনেরই গুলিবিদ্ধ পা হাটু থেকে কেটে ফেলতে হয়েছে।
পুলিশের নৃশংস অমানবিক বর্বরতায় প্রশ্ন দেখা দিয়েছে এভাবে আর কত নিরাপরাধ ছাত্রজনতা পঙ্গু হবে? কত সম্ভাবনা এভাবে অকালে ঝরে পড়বে? স্বজনদের প্রশ্ন আইন শৃংখলা বাহিনী এভাবে নিজেরাই আইন হাতে তুলে নিলে মানুষ কোথায় যাবে? কেউ অপরাধ করলে তাকে আইনের আওতায় আনা যেতে পারে। যেখানে তার আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ থাকবে। কিন্তু আটক করেই পরিকল্পিত ভাবে মানুষকে চিরদিনের জন্য পঙ্গু করে দেয়া মানবাধিকারের চরম লংঘন। কোনভাবেই তা সমর্থন যোগ্য হতে পারে না।
পুলিশের এই দায়িত্বহীন বর্বরতার নিন্দা জানিয়ে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান ও সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত বলেন, তারা বলেন, পুলিশের এই নৃশংসতায় জাতি হতবাক। দেশ ও জনগণের প্রতি তাদের ওয়াদার কথা বেমালুম ভুলে গিয়ে একের পর এক বর্বরতা চালিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর বেআইনিভাবে হাজির না করা এবং রাতের আধাঁরে গুলি করা কোন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্ব হতে পারেনা। এই নৃশংসতা পুলিশের মহান পেশার সম্পূর্ণ বিপরীত ও প্রতারণা। তাদের কিছু বর্বর কর্মকান্ড বার বার পুলিশের পবিত্র অবস্থানে কলঙ্ক লেপন করছে। পুলিশের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন অমানবিক কর্মকান্ডে তাদের প্রতি জনগণের আস্থা শুন্যর কোটায় নেমে এসেছে। আমরা এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এই ঘটনার মাধ্যমে আবারো প্রমাণিত হয়েছে যে, দেশে আইনের শাসন ও মানবাধিকার আজ শুন্যের কোঠায়।
নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে আহত শিবির নেতাদের উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করে মুক্তি দিতে এবং ভবিষ্যতে এমন নারকীয় নৃশংসতা থেকে বিরত থাকতে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহবান জানান।
সংশ্লিষ্ট
- কাছে কিংবা দূরে থাকি হৃদয়ের বন্ধন অটুট রাখি
- এসো আলোর পথে
- পরিকল্পিত সময় ব্যবস্থাপনা পৌঁছে দিবে সাফল্যের স্বর্ণদুয়ারে
- সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গঠনে প্রত্যয়দীপ্ত পদচারণার ৪১ বছর
- ৪১তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কেন্দ্রীয় সভাপতির শুভেচ্ছা বক্তব্য
- 'শৃঙ্খলা ও পরিচ্ছন্নতা' জীবন-সৌন্দর্যের নান্দনিক প্রতিচ্ছবি
- ঈদুল ফিতর ও আমাদের সংস্কৃতি
- নিশ্চয়ই আল্লাহ ভালোবাসেন
- মে দিবসের রক্তাক্ত ইতিহাস শ্রমিক অধিকার ও আমাদের দায়িত্ব
- আমাদের পথচলা থামবে না কোনো দিন