বৃহস্পতিবার, ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫

জনদূর্ভোগ নিরসনে সরকারের উদাসিনতায় মানুষের জীবন দূর্বিষহ হয়ে পড়েছে

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল জব্বার বলেছেন, সুখ সমৃদ্ধি নয় বরং জনগণকে কষ্ট দেয়াই রাষ্ট্রীয় শক্তির প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনদূর্ভোগ নিরসনে সরকারের উদাসিনতায় মানুষের জীবন দূর্ভিষহ হয়ে পড়েছে। তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের মাসিক সেক্রেটারীয়েট বৈঠকে সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সেক্রেটারী জেনারেল আতিকুর রহমানের পরিচালনায় বৈঠকে সেক্রেটারীয়েট সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, অবৈধ ভাবে ক্ষমতাসীন সরকারের সীমাহীন শোষন-নিপীড়নে জনজীবন আজ বিপন্ন। একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্তে মানুষের জীবন আজ দূর্ভিষহ হয়ে পড়েছে। সম্প্রতি সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ভাবে অস্বাভাবিক হারে গ্যাস এবং বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করেছে। যার সরাসরি প্রভাব পড়ছে জনজীবনে। এর কারণে যানবাহনের ভাড়া বাড়তে শুরু করেছে, বাসা ভাড়া বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যও অস্বাভাবিক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। সঙ্গত কারণেই শিল্প ও কল-কারখানায় উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে। মানুষের জীবন যাত্রার ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে দরিদ্র মানুষেরা সিমাহীন ভোগান্তিতে পড়ে গেছে। অন্য দিকে বৃষ্টির পর পানি অপসারণের উপযুক্ত ব্যবস্থা না করায় ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন শহরে এখন জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানীর বেশির ভাগ রাস্তাঘাট পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। সরকার ও তাদের সমর্থক মেয়রা বড় বড় কথা বললেও এই জনদূর্ভোগে তাদের মুখও দেখতে পাচ্ছেনা জনগণ। মনে হচ্ছে জনগণের দূর্ভোগ সরকার উপভোগ করছে।

তিনি আরও বলেন, জনবিচ্ছিন্ন সরকারের অধীনে জনজীবনকে যে কত দূর্বিসহ হতে পারে তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ বর্তমান বাংলাদেশের সার্বিক ভয়ানক পরিস্থিতি। দূর্বিষহ জীবন নিয়ে মানুষ হাহাকার করলেও সরকার তাতে পাত্তা না দিয়ে আবোল তাবোল বকে যাচ্ছে। কিন্তু জনগণের জীবন যাত্রা নিয়ে এই অমানবিক তামাশা মেনে নেয়া যায়না। আমরা জনগণের কাছে আহবান রেখে বলতে চাই, এই সরকার জনবিরোধী তা প্রমাণ হয়েছে। সুতরাং জনগণকেই জনগণের অধিকার আদায় করতে হবে। অপশাসনে চুপ থাকা মানে নিজেদের দূর্ভোগের মাত্রা বৃদ্ধি করা। সুতরাং এখনি সোচ্চার হতে হবে।

সন্ত্রাস ছড়িয়ে দিয়ে শিক্ষাকে পরিকল্পিত ভাবে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, সরকারের প্রত্যক্ষ মদদে শিক্ষাঙ্গনে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে ছাত্রলীগ। অভ্যন্তরীন কোন্দল, খুন, চাঁদাবাজী, অস্ত্রবাজীর পাশাপাশি এরা এখন সম্মানিত শিক্ষকদের গায়েও হাত দিচ্ছে। সম্প্রতি শাবিপ্রবি’তে শিক্ষকদের উপর হামলা এমনকি শিক্ষকদের লাথিও মেরেছে এই অসভ্য সংগঠনের সন্ত্রাসীরা। এরাই আবার বুয়েট, রাবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ ছাত্রদেরকে নির্যাতন করে পুলিশ ও প্রশাসনের হাতে তুলে দিচ্ছে। পুলিশ ও প্রশাসনও সন্ত্রাসীদের ইচ্ছামত ছাত্রদের গ্রেপ্তার বহিঃস্কার করছে। অন্য দিকে সরকার মরার উপর খারার ঘাঁ স্বরুপ প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার উপর অতিরিক্ত ভ্যাট আরোপ করে উচ্চ শিক্ষার পথকে রুদ্ধ করেছে। এর মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ভাবে শিক্ষাকে বাণিজ্যকরণ করা হয়েছে। ছাত্রজনতার জীবন নিয়ে এই ছিনিমিনি খেলা মেনে নেয়া যায়না। প্রয়োজনে কঠোর গণআন্দোলনের সিদ্ধান্ত নিতে হবে ছাত্রজনতাকে। ছাত্রশিবির অধিকার রক্ষা ও দাবি আদায়ে ছাত্রজনতার পাশে থাকবে ইনশাআল্লাহ।

সংশ্লিষ্ট