মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪

বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশি হত্যার প্রতিবাদ ও অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে ছাত্রশিবিরের বিবৃতি

গতকাল (২২ এপ্রিল) সকাল ৯.৩০ মিনিটের দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের পুটিয়া সীমান্ত এলাকায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) কর্তৃক অন্যায়ভাবে গুলি করে হাসান (২৬) নামে এক বাংলাদেশিকে  হত্যা এবং একই দিন রাত ৮ টার দিকে কুমিল্লার বুড়িচং সীমান্তে বিল্লাল হোসেন (২৮) নামের আরেক বাংলাদেশিকে গুলি করার প্রতিবাদ ও অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধের দাবি জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, “যখন তখন সীমান্তে নির্বিচারে বাংলাদেশিদের হত্যা করে চলেছে বিএসএফ। আর এ ধারাবাহিক হত্যাকাণ্ডের মূল কারণ অবৈধ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতি। ২০১১ সালে কিশোরী ফেলানীকে খুনের পর কাটাতারে ঝুলিয়ে রাখার নির্মম দৃশ্য বিশ্ববাসীকে কাঁদিয়েছিল। ২০২২ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ১৬ বছর বয়সি স্কুলছাত্র মিনহাজুল ইসলামকে হত্যার পর ৪৮ ঘণ্টারও বেশি সময় লাশ আটকে রাখে বিএসএফ।

এভাবে যখন তখন নির্বিচারে বাংলাদেশীদের হত্যা করছে বিএসএফ। এসব নির্মম ও অপমানজনক হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ পরিসংখ্যানে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত ভারত সীমান্তে ১৫ জনকে হত্যা করা হয়েছে।”

নেতৃবৃন্দ বলেন, “সীমান্তে এমন নির্বিচারে হত্যা আন্তর্জাতিক আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। কিন্তু ভারতের সদিচ্ছার অভাব ও বাংলাদেশ সরকারের নতজানু পররাষ্ট্র নীতির কারণে বাংলাদেশিরা হরহামেশায় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের শিকার হচ্ছে। ২০০০ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত ১ হাজার ১৮৫ জন বাংলাদেশি বিএসএফের হাতে খুন হয়েছেন! আহত ও নির্যাতনের শিকার অসংখ্য বাংলাদেশি। ২০২২ সালের জুলাই মাসে বিএসএফ প্রধান পঙ্কজ কুমার সিং বাংলাদেশে বসে দাম্ভিকতার সাথে বলেছে ‘এযাবৎকালে সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে যারা নিহত হয়েছে, তারা সবাই অপরাধী’।

এ সময় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবাদ করা হয়নি। অবৈধ সরকারের নীরবতাই সীমান্তে হত্যাকাণ্ড ঘটাতে বিএসএফকে উৎসাহিত করছে। ফলে প্রতিনিয়তই বাংলাদেশ সীমান্তে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ, নির্যাতন, অপহরণ ও চুরি, ডাকাতি, দখলের মতো ঘটনা ঘটাচ্ছে বিএসএফ। অথচ অন্য কোনো দেশের সীমান্তে বেসামরিক নাগরিকদের হত্যার সাহস দেখাতে পারে না ভারত। অবৈধ সরকার শুধু ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য এদেশের মানুষের জান-মাল ভারতীয় বাহিনীর হাতে তুলে দিয়েছে।”

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে বাংলাদেশকে অবাধে ব্যবহার করার সুযোগ দিচ্ছে অবৈধ ও ফ্যাসিবাদী সরকার। আর ভারত বাংলাদেশকে নিরপরাধ নাগরিকের লাশ উপহার দিচ্ছে। দেশবাসী এ নতজানু নীতি পরিহার ও সীমান্ত হত্যা বন্ধ দেখতে চায়। অবিলম্বে সীমান্ত হত্যা বন্ধে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নির্বিচারে হত্যাকারী বিএসএফ সদস্যদের বিচারের আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক আদালতের শরণাপন্ন হতে হবে। এদেশের মানুষের রক্ত এত সস্তা নয়। জান-মাল রক্ষায় প্রয়োজনে দেশের মানুষ কঠোর সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজপথে নেমে আসবে।”