বুধবার, ২৪ জানুয়ারি ২০২৪

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

সরকারের পক্ষ থেকে ট্রা-ns-জেন্ডার ইস্যুকে উৎসাহিত করার প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রশিবিরের বিবৃতি

সরকার কর্তৃক ধর্মীয় ও সমাজবিরোধী ট্রা-ns-জেন্ডারকে শিক্ষা কারিকুলামসহ সামগ্রিকভাবে উৎসাহিত করার প্রতিবাদ এবং অবিলম্বে এ ঘৃণিত কাজ বন্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।
এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, “ট্রা-ns-জেন্ডারের মতো এমন ধর্মীয় এবং সমাজবিরোধী ভয়াবহ অপকর্মকে সরকার পাঠ্যপুস্তকের মাধ্যমে নরমালাইজ করার অপচেষ্টা করা হয়েছে। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অপব্যবহার করে ট্রা-ns-জেন্ডার আর হিজড়াকে অভিন্ন হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার মত সূক্ষ্ম ষড়যন্ত্র চলছে। অন্যদিকে স্বয়ং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক উৎসাহ প্রদান ও বৈধতা দেওয়ার উদ্যোগের খবরে দেশবাসী স্তম্ভিত ও চরমভাবে ক্ষুব্ধ। মূলত পশ্চিমা বিশ্বকে খুশি করে ক্ষমতা পাকাপক্ত করতেই অবৈধ সরকার এমন ঘৃণ্য খেলা শুরু করেছেন।
এ ঘৃণ্য কাজ ইসলামে সম্পূর্ণ হারাম করা হয়েছে। রাসূল সা. মানব আকৃতির বিকৃতকারীদের অভিশপ্ত ও শয়তানের কাজ হিসেবে উল্লেখ করেছেন। মুসলমানদের মধ্যে এ অসভ্যতা কোনোকালেই ছিল না। এ নিকৃষ্ট কাজ সরাসরি আল্লাহর সাথে বিদ্রোহ করার শামিল। বিজ্ঞ আলেমদের মতে, ট্রা-ns-জেন্ডারদের মুসলিম পরিচয় দেওয়ার সুযোগ থাকে না।
অন্যদিকে বাংলাদেশের মানুষ একটি সমৃদ্ধ ও সভ্য সামাজিক ব্যবস্থায় অভ্যস্ত। কিন্তু ট্রা-ns-জেন্ডার একটি অসামাজিক ও অসভ্য বর্বর অপকর্ম। যা আমাদের ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধের জন্য ভয়াবহ হুমকি। এ অসভ্যতা সমাজের ভারসাম্যতা ও স্বাভাবিক রীতিকে ধ্বংসের মুখে ফেলে দিচ্ছে। তা ছাড়া এ পর্যন্ত কোনো মুসলিম দেশ এ অসভ্যতাকে বৈধতা দেয়নি। সামাজিক এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ অক্ষুণ্ন রাখতে মধ্যপ্রাচ্য এবং আফ্রিকা মহাদেশের দেশগুলো ট্রা-ns-জেন্ডারের বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থান নিয়েছে।
এমনকি খোদ কানাডা, ইতালি, হাঙ্গেরিসহ ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ট্রা-ns-জেন্ডার নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক ও বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। স্কুলের পাঠ্যক্রমে ট্রা-ns-জেন্ডার মতাদর্শ অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে গত ২০ সেপ্টেম্বর কানাডার লক্ষ লক্ষ (মিলিয়ন মার্চ) পিতামাতা রাস্তায় নেমে আসেন। জেন্ডার আইডেন্টিটি ইস্যুতে ইতালির সরকার পরিবর্তন হয়েছে। এ ছাড়াও মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকি, মানসিক বিকৃতি, আইনি ও উত্তরাধিকার জটিলতা তৈরি হয় ট্রা-ns-জেন্ডারদের জন্য।
জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে বাংলাদেশের মানুষ এমন বিকৃত রুচির ঘৃণিত কাজকে ধিক্কার জানাচ্ছে। অথচ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর সাথে বিকৃত রুচির একজন ট্রা-ns-জেন্ডার দেখা করে বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী ট্রা-ns-জেন্ডারদের উৎসাহ দিয়ে তাদের বৈধতা দেওয়া এবং সব সময় পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন, যা সময় টিভিসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।”
নেতৃবৃন্দ বলেন, “ট্রা-ns-জেন্ডারের মাধ্যমে অভিশপ্ত সমকামিতার মতো পশুত্বকেও বৈধতা দেওয়ার ষড়যন্ত্র চলছে। আগামী প্রজন্মকে নৈতিকভাবে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য সুকৌশলে এসব নির্লজ্জ অসভ্যতাকে প্রসার করা হচ্ছে। ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বিভিন্ন গণমাধ্যমে এই মস্তিষ্ক বিকৃত অপকর্মকে উৎসাহিত করে প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
কিন্তু ট্রা-ns-জেন্ডারিজম বাংলাদেশে ধর্মীয় ও সামাজিকভাবে অত্যন্ত সংবেদনশীল। আগামী প্রজন্মকে ধ্বংসের এ ভয়াবহ ষড়যন্ত্র কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। অবিলম্বে এ নিকৃষ্ট অপকর্মকে আইন করে বন্ধ করতে হবে। এ ধরনের মতবাদ লালন ও বিস্তারে যারা সক্রিয় ভূমিকায় আছে, তাদের চিহ্নিত করে, তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে হবে।
ইতিমধ্যে দেশের বিবেকবান মানুষ নৈতিকতাবিবর্জিত শিক্ষা কারিকুলামের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে শুরু করেছে। সম্প্রতি ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ মাহতাব চাকরির তোয়াক্কা না করে প্রকাশ্যে বইয়ে থাকা এ অসভ্যপনার অধ্যায় ছিঁড়ে ছুড়ে ফেলে দিয়ে বীরোচিত প্রতিবাদ করেছেন। আমরা তাঁর সাহসী, সুদৃঢ় অবস্থান, দায়িত্ব ও নৈতিকতাবোধকে সম্মান এবং সমর্থন জানাচ্ছি। ইতিমধ্যে সম্মানিত শিক্ষক আসিফ মাহতাবকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
আমরা ট্রা-ns-জেন্ডারের মতো মস্তিষ্ক বিকৃত নিকৃষ্ট অপকর্মের সমর্থক ও সহযোগিদের প্রতি নিন্দা ও ধিক্কার জানাই। এখন দেশ ও ইসলামপ্রিয় শিক্ষকসমাজ, আলেম-ওলামা, ছাত্র-অভিভাবক ও আপামর জনতাকে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে তাঁর পাশে থাকা সময়ের দাবি। একই সাথে ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধ রক্ষায় অভিভাবকসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে এই ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তুলার জন্য আমরা জোরালো আহ্বান জানাচ্ছি।”