শনিবার, ০৬ জানুয়ারি ২০২৪

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

রাজধানীতে ট্রেনে আগুনের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের শোক; সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বিচার দাবি

রাজধানী ঢাকা শহরের গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস নামক একটি ট্রেনে দুর্বৃত্তদের আগুনে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। একই সাথে এই ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের শনাক্ত করে শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে তারা।

এক যৌথ বিবৃতিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, “৫ জানুয়ারি (শুক্রবার) রাত ৯টায় সংঘটিত ষড়যন্ত্রমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত উপায়ে ট্রেনে আগুনের ঘটনায় দুই নারী ও এক শিশুসহ ৫ জন নিহত হয়েছে। পাশাপাশি আহত হয়েছেন আরো কয়েকজন। এর আগে গত ১৯ ডিসেম্বর রাজধানীর তেজগাঁওয়ে ট্রেনে আগুনে মা-ছেলেসহ ৪ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এখনো পর্যন্ত সেই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত ও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়নি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।”

ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতৃবৃন্দ বলেন, “বারবার আগুন দেওয়ার ঘটনায় জনসাধারণ গভীর উদ্বিগ্ন। অথচ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কার্যক্রমে আন্তরিকতার ঘাটতি স্পষ্টত। তাদের গাফলতি এতটাই নগ্নভাবে উন্মোচিত হয়েছে যে, আগের ঘটনার আহত প্রত্যক্ষদর্শীরা গণমাধ্যম ও পুলিশকে অবহিত করার পরেও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গৃহীত হয়নি। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, ‘রেলের পোশাক পরা ব্যক্তিরাই আগুন লাগিয়েছে’। স্বাভাবিকভাবেই জনগণ জীবন জীবিকার জন্য বের হয়ে শঙ্কিত অবস্থায় জীবন অতিবাহিত করছে।”

শিবির নেতৃবৃন্দ জানান, “নিয়মানুসারে লাল কাপড় প্রদর্শিত হলে ট্রেন থামাতে হয়। অথচ দেশীয় গণমাধ্যমে উল্লেখ করা হয়েছে বিমানবন্দর স্টেশনে ট্রেনে আগুন লাগলেও সেটি ১২ কিলোমিটার অতিক্রম করে তেজগাঁও স্টেশনে থামানো হয়। এর সদুত্তর দিতে রেলওয়ে প্রশাসন ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছে। এর মাধ্যমে জনগণ নিশ্চিত হয়েছে যে, এই সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রে শামিল হয়েছে। যার মূল্য পরিশোধ করতে হচ্ছে নিরীহ মানুষের জীবনের বিনিময়ে।”

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, “বাংলাদেশের সচেতন জনসাধারণের নিকট সরকারি ষড়যন্ত্র দিবালোকের মতো পরিষ্কার। সকলের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট যে, জনগণের ভোটের অধিকার আদায়ের গণআন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে অবৈধ সরকারের ক্ষমতাসীন গোষ্ঠীর মদদপুষ্ট দুষ্কৃতকারীরা এই ঘটনার মূলহোতা। তেজগাঁওয়ের ঘটনার পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে রাজধানীর গোপীবাগে। এসব ষড়যন্ত্রের বলি হয়েছে ৯টি তাজা প্রাণ!

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির মনে করে, এই অবৈধ সরকার নিজের হীন স্বার্থ বাস্তবায়নে আগামীতেও সাধারণ মানুষের প্রাণবিনাশী ষড়যন্ত্রে শামিল হবে। আমরা অবিলম্বে সরকারের প্রাণবিনাশী পুরনো রাজনৈতিক অপকৌশল বন্ধ করার হুঁশিয়ারি জানাচ্ছি। নইলে সাধারণ মানুষের সমুচিত জবাবে অবৈধ ক্ষমতা তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়বে।

আমরা এই বর্বরোচিত ঘটনার সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করছি। এবং দুর্ঘটনায় নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। একই সাথে শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।”