সোমবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৩

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের বর্বর হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের বর্বর হামলা ও নারী, শিশুসহ নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। 

এক যৌথ বিবৃতিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, “বিশ্ব নেতৃত্বের ব্যর্থতা বিশেষ করে মুসলিম বিশ্বের দায়িত্বহীনতার কারণে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর আবারও ইহুদিবাদী ইসরাইল হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে। অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বর্বর হামলা চালিয়ে নারী, শিশুসহ ৩৭০ জনেরও অধিক ফিলিস্তিনি মুসলমানকে হত্যা করেছে ইহুদীবাদী ইসরাইল। তার মধ্যে একই পরিবারের নারী-শিশুসহ ১৯ জনকে হত্যা করা হয়েছে! প্রতি মুহূর্তে মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। এ বর্বরতায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে কয়েক হাজার মুসলমান।

এমনকি গুরুতর আহতরা সঠিকভাবে চিকিৎসা পর্যন্ত পাচ্ছে না। এখনো বর্বর হামলা অব্যাহত রয়েছে। বর্বর ইসরাইলি সরকার গাজাকে মাটির সাথে মিশিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। আর বরাবরের মতো বিশ্ব সম্প্রদায় বিশেষ করে মুসলিম বিশ্ব আবারো নীরব ও দায়সারা ভূমিকা পালন করছে, যা ইসরাইলের বর্বরতাকে আরও উসকে দিয়েছে। মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল আকসা মসজিদ নিয়ে একের পর এক উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে ইসরাইল।

অবৈধ দখলদার ইসরাইল যখন-তখন ফিলিস্তিনের মাটিকে রক্তাক্ত করছে, গণহত্যা চালাচ্ছে। নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের নির্যাতন, গ্রেপ্তার করছে। ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করছে। গাজা উপত্যকাকে উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত করেছে। অথচ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ও সংস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ইসরাইলের বর্বর কর্মকাণ্ড থামাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি, যা মানবতার জন্য চরম লজ্জাজনক বিষয়।”

মুসলিম নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, “বায়তুল মুকাদ্দাস আর ফিলিস্তিন নিয়ে মুসলিম উম্মাহর ব্যর্থতা যুগের পর যুগ চলতে পারে না। মুসলমানদের প্রথম কিবলা ও তৃতীয় পবিত্রতম স্থান বায়তুল মুকাদ্দাস শুধু ফিলিস্তিনি মুসলমানদের সম্পদ নয়; বরং পুরো মুসলিম উম্মাহর সম্পদ। একইভাবে পবিত্র মসজিদকে রক্ষা করাও শুধু ফিলিস্তিনিদের দায়িত্ব নয়; বরং পুরো উম্মাহর দায়িত্ব। কিন্তু শুধু ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণ জীবন দিয়ে বায়তুল আকসাকে রক্ষা করে যাচ্ছে।

আর প্রায় ২০০ কোটি মুসলমান ও নেতারা অস্বাভাবিক দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে, যা অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের ধারাবাহিক নৃসংশতার প্রতি সরাসরি উৎসাহ দেওয়ার শামিল। বিশ্ববিবেক বিশেষ করে মুসলিম উম্মাহর জন্য এটা বড়ো লজ্জার বিষয়। ইসলামের ইতিহাসে লজ্জাজনক অধ্যায়। বারবার ফিলিস্তিনের মাটি ও পবিত্র মসজিদের প্রাঙ্গণ মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত হওয়ার পরও হাত গুটিয়ে বসে থাকা ঈমানের পরিপন্থি কাজ। বিশ্ব নেতৃত্ব ফিলিস্তিনিদের সাথে যুগের পর যুগ প্রতারণা করে আসছে। বিশ্বের মানবাধিকারের সবকদাতারা ফিলিস্তিনের বর্বরতায় শুধু নীরবই থাকে না; বরং ঘুরিয়ে-প্যাঁচিয়ে ইহুদিবাদীদের সমর্থন ও সহাযোগিতা করেছে।”

ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়ে শিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, “ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের জন্য আমাদের হৃদয় সিক্ত। বায়তুল আকসার প্রহরী ফিলিস্তিনের বীর জনগণের প্রতি আমাদের অকুণ্ঠ সমর্থন অব্যাহত থাকবে। শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায় না। আপনাদের রক্তও বৃথা যাবে না, ইনশাআল্লাহ। প্রথম কিবলা ও মাতৃভূমির পবিত্রতা রক্ষায় ইহুদিবাদীদের বর্বরতায় শাহাদাতবরণকারীদের পবিত্র রক্ত বৃথা যেতে পারে না। এই বর্বরতা অবৈধ ইসরাইলের পতনকে ত্বরান্বিত করবে, ইনশাআল্লাহ।”

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ইসরাইলি বর্বরতা থেকে ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে জাতিসংঘ, ওআইসি, আরবলীগ, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান।