রবিবার, ০১ অক্টোবর ২০২৩

রাসূল সা. কর্তৃক নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও পাশ্চাত্যের নারীবাদ - শামসুন্নাহার নিজামী

কোনো কিছু বুঝতে হলে তার বিপরীত চিত্র বোঝা বা জানা জরুরি। রাতের অন্ধকারের পরে যখন প্রভাতের সূর্য উদিত হয় তখন আলো-আঁধারির পার্থক্য চোখে পড়ে। তেমনই ইসলামে দেওয়া নারী অধিকার বা মর্যাদা তথা রাসূল সা. কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত নারী অধিকার বোঝার জন্য পাশ্চাত্যের নারীদের দিকে দৃষ্টি ফেরাতে হবে। পাশ্চাত্যের নারী অধিকার, নারী ক্ষমতায়ন, নারী স্বাধীনতা বরাবরই এক শ্রেণির মানুষের কাছে অত্যন্ত লোভনীয় বিষয়। নারীর ক্যারিয়ার গড়া, সর্বক্ষেত্রে নারীকে সুউচ্চ আসনে অধিষ্ঠিত করা, এমন নানারকম মনে মুগ্ধকর কথায় নারীরা আকৃষ্ট হচ্ছে। নারীরা কথিত স্বাধীনতার দিকে ছুটে চলছে। আপন গৃহে অবস্থান করাকে তারা অন্ধকার কুঠরির মাঝে অবস্থিত বঞ্চিত ও বন্দিজীবন মনে করছে। ফলে নারী তার মর্যাদা লাভের জন্য বেরিয়ে পড়ছে। এখন সর্বক্ষেত্রে নারীর সরব পদচারণা। মিডিয়া, সিনেমা, রাজনীতি সবক্ষেত্রেই নারীর উপস্থিত। এতে পরিতৃপ্ত নারীবাদীরা। কিন্তু এরপরও নারীরা কি তার কথিত মুক্তি পেয়েছে? সে কি পেয়েছে তার স্বপ্নের স্বাধীনতা? নারী সামান্য পণ্যদ্রব্যের বিজ্ঞাপনে পর্যন্ত ব্যবহৃত হচ্ছে। বিলবোর্ডে-রাস্তাঘাটে নারীর মর্যাদাহানীকর ছবি। পণ্যের বিক্রি বাড়াতে নারী আজ নিজেই পণ্যে পরিণত হয়েছে। নারীকে নিয়ে শুরু হয়েছে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতা। নারী সুপার স্টার। ধাপে ধাপে নর্তকী, যৌনকর্মী, পতিতা; এগুলোই পাশ্চাত্যের নারী অধিকার, এটাই তাদের নারী স্বাধীনতা। আজকের দুনিয়ায় যে নারীদের নিয়ে নারীবাদীরা গর্ব করে, যাদের দেখে অন্য নারীরা বা যেসব নারীরা ক্যারিয়ার গড়তে চায়, বাইরের জগতে বেরিয়ে আসতে চায়। সেইসব নারীরাই এর খোলস উন্মুক্ত করে দিয়েছে। তাদের অবস্থান তারা বর্ণনা করেছে। তাদের যৌন হয়রানির বিষয় প্রকাশিত হচ্ছে। চলুন কিছু চিত্র দেখে আসি।

সুপার-স্টার খ্যাত নারীরা তাদের কর্তা ব্যক্তির বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছে। হলিউড প্রযোজক ও লিবারেল অ্যাকটিভিস্ট হার্ভে ওয়েনেস্টাইন, পরিচালক জেমস ক্যামেরনসহ আরও অনেক পশ্চিমা প্রসিদ্ধ ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। (দৈনিক কালের কণ্ঠ ৩০ নভেম্বর, ২০১৮)। খোদ আমেরিকার সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ আরও অনেকেই এমন অভিযোগে অভিযুক্ত। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নে বেশ কয়েকজন নারী পার্লামেন্ট সদস্য পুরুষ পার্লামেন্ট সদস্যের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন। তাদের একজন ইউরোপীয় ইউিনিয়ন পার্লামেন্টকে যৌন হয়রানির আখড়া বলে উল্লেখ করেছেন। এমনকি একই অভিযোগে ব্রিটেনের প্রতিরক্ষামন্ত্রী মিচেল ফালোন পদত্যাগও করেছেন। (দৈনিক প্রথম আলো, ০২ নভেম্বর ২০১৭)।

এই হচ্ছে পাশ্চাত্যের নারী ক্ষমতায়নের ছিটেফোঁটা, যেখানে নারী পার্লামেন্টের সদস্য পর্যন্ত যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। চাকরি হারানোর ভয়ে কর্মজীবী নারীরা নীরবে সম্ভ্রম হারিয়ে যাচ্ছে। আর বিশ্বজুড়ে নারীবাদীরা তৃপ্তির ঢেকুর তুলছে। আমেরিকাতে প্রতি ১০৭ সেকেন্ডে একজন করে নারী ধর্ষিত হচ্ছে। প্রতি ৩৯ মিনিটে একজন নারীর পর্নছবি ইন্টারনেটে আপলোড করে তারা নারীর মর্যাদা প্রদানের বহিঃপ্রকাশ ঘটাচ্ছে! প্রতিনিয়ত তাদের নারী সেনা সদস্যরা পুরুষ-সহকর্মীদের দ্বারা ধর্ষণ ও যৌন নিপীড়নের শিকার হচ্ছে। এসব খবর তাদেরই মিডিয়ার স্বীকারোক্তি অথচ পাশ্চাত্যের বিকৃত স্বভাবধারী নারীবাদীরা এবং এদেশের পাশ্চাত্যপ্রেমিরা মুসলিম নারীদের হিজাব পর্যন্ত সহ্য করতে পারে না। তাদের মতে- এটা নারীর অবরোধ। অথচ বাস্তব অবস্থা হচ্ছে স্বাধীনতার নামে, ক্যারিয়ারের নামে এসব নারীরা অন্যের শয্যাসঙ্গিনী হওয়ার বিনিময়ে চাকরি টিকিয়ে রেখেছে। সতিত্বের বিনিময়ে পদ-পদবি অর্জন করেছে ও করছে। শুধু পাশ্চাত্যেই নয়, আমাদের দেশেও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নারীদের একান্ত সাক্ষাৎকারে অনেক অভিজ্ঞতার কথা বেরিয়ে এসেছে।

পৃথিবীতে নারী এবং পুরুষ- এভাবে আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। সৃষ্টিগতভাবে উভয়ই মানুষ। কিন্তু এই দুই জাতির গঠন-প্রকৃতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। সমাজে উভয়ের প্রয়োজন অপরিহার্য। নারী ছাড়া দুনিয়া যেমন কল্পনা করা যায় না, তেমনি পুরুষবিহীন সমাজও অকল্পনীয়। একে অপরের পরিপূরক। কিন্তু ভুল সমাজব্যবস্থার কারণে নারীরা অনেক ক্ষেত্রেই অধিকার বঞ্চিত। স্বাভাবিকভাবেই নারীরা তাদের যোগ্য সম্মান, মর্যাদা আর অধিকার চায়। আর এটাকে পুঁজি করে কিছু সুবিধাভোগী মানুষ নারী অধিকার, সমতা, নারী স্বাধীনতার নামে বিভিন্নভাবে নারীদের ব্যবহার করছে। আর স্বাধীনতার নামে নারীরাও তাদের এ ফাঁদে পা দিয়ে এ পথে এগিয়ে এসেছে। আমরা এ প্রবন্ধে সত্যিকার নারী স্বাধীনতা বা নারী অধিকারের বিষয় আলোচনা করব। নারীর অধিকার সম্পর্কে Oxford Dictionary-তে বলা হয়েছে, ‘নারীর সেই অধিকার যেখানে নারীর সামাজিক ও আইনগত অধিকার এমন পর্যায়ে উন্নীত করে যা পুরুষের সমান।’ আমরা প্রবন্ধের শুরুতে পশ্চিমা বিশ্বে নারীর এমন অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করেছি। অথচ এ পশ্চিমা বিশ^ই ইসলামে নারীর যে চিত্র তুলে ধরেছে তা অত্যন্ত করুণ এবং বেদনাদায়ক। তারা বলে- তারা নারীকে স্বাধীনতা দিয়েছে, কিন্তু বাস্তব অবস্থা ভিন্ন। নারীরা ভোগের বস্তু, অসুস্থ বিনোদনবিলাসী মানুষের হাতের খেলার পুতুল। এগুলোকে তারা নাম দিয়েছে Art and Culture.

ইসলাম নারীকে তার প্রাপ্য ন্যায্য যে অধিকার, সে অধিকার পরিপূর্ণভাবে দিয়েছে। ইতিহাস পর্যালোচনা করলে আমরা দেখতে পাই ব্যাবিলনীয় সভ্যতা, গ্রিক সভ্যতা, রোমান সভ্যতা, মিসরীয় সভ্যতায় নারীরা শুধুমাত্র ভোগের সামগ্রী ছিল। তাদের নিজস্ব কোনো সত্তা বা স্বাধীনতা ছিল না। এরপর রাসূল সা. যখন আরবে জন্মগ্রহণ করেন, সে সময়কে বলা হতো আইয়্যামে জাহেলিয়াত বা অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগ। সে সময়ে কোনো কন্যাসন্তান জন্মগ্রহণ করলে তাকে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো। কুরআনে এ সম্পর্কে বলা হয়েছে : “সে সমাজের কাউকে তার কন্যা সন্তান জন্ম হওয়ার সুসংবাদ দেওয়া হলে সারাদিন তার মুখ কালো হয়ে থাকতো। সে ক্ষুব্ধ হতো এবং মনে মনে দুঃখ অনুভব করতো। সে চিন্তা করতো, অপমান সহ্য করে মেয়েকে বাঁচিয়ে রাখবে, না মাটির নিচে পুঁতে ফেলবে। কতই না খারাপ সিদ্ধান্ত তারা গ্রহণ করতো। (সূরা নহল : ৫৮-৫৯)।

এরপর রাসূল সা. নবুওয়ত পেলেন। ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত হলো। নারীরা তাদের ন্যায্য অধিকার পেল। আল্লাহর কাছে নারী এবং পুরুষ সমান, সমান মানে একই রকম না। এদের শারীরিক-মানসিক গঠন আলাদা। এদিকে খেয়াল রেখেই আমাদের স্রষ্টা আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নারী এবং পুরুষের জন্য তাদের দায়িত্ব-কর্তব্য ঠিক করে দিয়েছেন। ইসলামী আইনের মূল উৎস হচ্ছে কুরআন এবং সুন্নাহ। কুরআনের কোনো বিশেষ আয়াতকে সামনে রেখে বা কোনো বিশেষ হাদিসকে ভিত্তি করে নারীর অবস্থান বা মর্যাদা নির্ধারণ করা যাবে না। সামগ্রিক অবস্থাকে সামনে রাখতে হবে। নারী হিসেবে তাদেরকে যেমন বঞ্চিত করা হয়নি তেমনি তাদেরকে পুরুষের সাথে প্রতিযোগিতায়ও নামিয়ে দেওয়া হয়নি। আল্লাহ বলেন- “আল্লাহ যেসব (অনুগ্রহ) দান করে তোমাদের একজনকে আরেকজনের ওপর শ্রেষ্ঠত্ব প্রদান করেছেন, তোমরা সেগুলোর লালসা করো না। পুরুষ যা উপার্জন করে, তার অংশ হবে সে অনুযায়ী, আর নারী যা উপার্জন করে তার অংশ সে অনুযায়ী, আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করো তার অনুগ্রহ থেকে। নিশ্চয়ই আল্লাহ প্রতিটি বিষয়ে অবহিত।” (সূরা নিসা : ৩২)।

মানুষের ধর্মীয় অধিকার বা তার স্রষ্টার সাথে সম্পর্কের অধিকার জন্মগত। অথচ ইহুদি ও খ্রিষ্টান ধর্মে নারীকে ধর্মীয় ও সামাজিক অধিকার থেকেও বঞ্চিত করা হয়ছে। জন্মগতভাবে তাকে পাপী হিসাবে চিত্রিত করা হয়েছে। কিন্তু ইসলামে কখনো এককভাবে নারীকে তথা প্রথম মানবী হওয়া (আ.)-কে দায়ী করা হয়নি। বরং আদম (আ.) ও হাওয়া (আ.) উভয়েরই সমান অপরাধের কথা বলা হয়েছে।

তারপর শয়তান ওয়াসওয়াসা দিল তাদের দুজনকে যাতে করে তাদের লজ্জাস্থান যা গোপন রাখা হয়েছে তাদের কাছে, তা তাদের প্রকাশ হয়ে পড়ে। (সূরা আল আরাফ : ২০)। নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত সব কিছুতেই নারী পুরুষের সমান নির্দেশ ইসলাম দেয়। কিন্তু নারীর প্রকৃতিগত অবস্থানের কারণে কিছু বিষয় তার জন্য হালকা করে দেওয়া হয়েছে। যেমন জামায়াতে নামাজের ব্যাপারে। নারীর জন্য এটা অবশ্য কর্তব্য নয়। নারীর সামাজিক অধিকার ইসলাম সুনির্দিষ্ট করে দিয়েছে। পানাহার, শিক্ষা-দীক্ষা প্রভৃতি ক্ষেত্রে ছেলে এবং মেয়ের সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। বিবাহ ও পরিবার গঠনে পুরুষ ও নারীর সম অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। অর্থনৈতিকভাবে নারীকে সুপ্রতিষ্ঠিত করেছে। নারী শয়িয়াহ মেনে প্রয়োজনে স্বাধীনভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরি-বাকরি, লেনদেন করার অধিকার রাখে।

উত্তরাধিকারের ব্যাপারে নারীবাদীরা বৈষম্য তালাশ করে। আল্লাহ পিতা ও স্বামীর সম্পত্তিতে নারীকে অধিকার দিয়েছেন। নারীকে পুরুষের অর্ধেক দিলেও পুরুষকে যাবতীয় দায়িত্ব পালন করতে হয় নারীদেরকে এ থেকে দায়মুক্ত করা হয়েছে। পক্ষান্তরে নারীরা স্বামীর থেকে মোহরানা লাভ করবে। নারীকে অর্থনৈতিক দায়ভার থেকে মুক্ত করা হয়েছে যেন সে নিশ্চিন্তে সংসার ও স্বামী-সন্তানের রক্ষণাবেক্ষণ এবং সুদক্ষ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তৈরিতে ভূমিকা রাখতে পারে। যদি কোনো নারী ইসলামের সমস্ত অর্থনৈতিক সুবিধা লাভ করে কিন্তু তার সংসার সন্তানের দিকে মনোযোগী না হয়ে নিজের বিলাস-ব্যসন, আনন্দ-ফুর্তি বা অন্য কোনো দিকে সময় কাটায় তবে সেটা খেয়ানত হিসাবে গণ্য হবে।

অন্যান্য অধিকারের মতো রাজনৈতিক অধিকারেও নারীর প্রতি কোনো বৈষম্য করা হয়নি। রাজনৈতিক ব্যাপারে মূল অধিকার ২টি-

১. রাষ্ট্র পরিচালনায় মতামত ও পরামর্শ প্রদানের সুযোগ।

২. রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে বিভিন্ন কার্যকলাপ।

কুরআনে বর্ণিত হয়েছে- সকল কার্যক্রম পরামর্শের ভিত্তিতে পরিচালনা করতে হবে। আল্লাহ বলেন :

“নিজেদের যাবতীয় সামগ্রিক ব্যাপারে নিজেদের পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে সম্পন্ন করে।” (সূরা আশ শুরা : ৩৮)। রাসূল সা. এবং খোলাফায়ে রাশেদাগণ বিভিন্ন কার্যকলাপে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতেন। নারীদের কাছ থেকেও তাঁরা পরামর্শ নিতেন। হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় একজন উম্মুল মুমিনীনের পরামর্শের কারণে অনেক বড় সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।

পুরুষ ও নারী উভয়েই মানুষ। আল্লাহর অনুগত দাস হিসেবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন তাদেরকে সম্বোধন করেছেন। সৃষ্টির সেরা বা আশরাফুল মাখলুকাত হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছন। আল্লাহ বলেন-

“আমি বনি আদমকে মর্যাদা দিয়েছি এবং জলে-স্থলে সমুদ্রে চলাচলের জন্য তাদের বাহন দিয়েছি, তাদেরকে উত্তম জীবিকা দিয়েছি এবং তাদেরকে অনেক সৃষ্টির উপর শ্রেষ্ঠত্ব দিয়েছি। (সূরা বনি ইসলাইল : ৭০)। মানুষকে এই মর্যাদা দিয়ে আল্লাহ নির্দেশ দিয়েছেন তাকওয়াবান হওয়ার জন্য।

ইরশাদ হচ্ছে- “হে মানুষ তোমরা সতর্ক হও তোমাদের রবের প্রতি। যিনি তোমােেদর সৃষ্টি করেছেন একটি সত্তা থেকে। আর তা থেকে সৃষ্টি করেছেন তার জুড়ি। অতঃপর তাদের দুজন থেকে সৃষ্টি করেছেন অসংখ্য পুরুষ ও নারী। তোমরা আল্লাহকে ভয় করো। যার দোহাই দিয়ে তোমরা পরস্পর থেকে তোমাদের অধিকার দাবি করো। আর সতর্ক হও রক্ত সম্পর্কের নিকট আত্মীয়দের অধিকারের ব্যাপারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের ওপর তত্ত্বাবধানকারী পাহারাদার।” (সূরা নিসা : ১)।

মর্যাদার দিক থেকে আল্লাহ নারী পুরুষকে পৃথক করেননি। বরং আল্লাহর কাছে সে-ই শ্রেষ্ঠ যে তাকওয়ার দিক থেকে এগিয়ে। আল্লাহ বলেন- “হে মানুষ! আমরা তোমাদের সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ ও একজন নারী থেকে, তারপর তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে করে তোমরা পরস্পরে পরিচিত হতে পারো। নিশ্চয়ই আল্লাহর কাছে তোমাদের মধ্যে সে ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাবান, যে অধিক মুত্তাকি নিশ্চয়ই আল্লাহ জ্ঞানী এবং সব অবগত।” (সূরা আল হুজুরাত : ১৩)। আল্লাহ আরও বলেন : “আমি তোমাদের কোনো পুরুষ বা নারী আমলকারীর আমল বিনষ্ট করি না। তোমরা একই দলের সদস্য। তাই যারাই আমার জন্য হিজরত করেছে এবং যাদেরকে নিজেদের ঘরবাড়ি থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে আমার পথে কষ্ট দেওয়া হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে এবং যারা যুদ্ধ করেছে ও নিহত হয়েছে, আমি অবশ্যই অবশ্যই তাদের থেকে তাদের পাপ ও দোষ-ত্রুটি মুছে দেবো এবং অবশ্যই তাদেরকে দাখিল করবো সেই সব জান্নাতে যার নিচ দিয়ে ঝরনাধারা প্রবহমান। এগুলো তাঁরা পাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার হিসেবে আর উত্তম পুরস্কার তো আল্লাহর কাছেই রয়েছে।” (সূরা আলে ইমরান : ১৯৫)। নিশ্চয়ই মুসলিম পুরুষ ও মুসলিম নারী, মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী, অনুগত পুরুষ ও অনুগত নারী, সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদী নারী, ধৈর্যশীল পুরুষ ও ধৈর্যশীল নারী, বিনয়ী পুরুষ ও বিনয়ী নারী, দানশীল পুরুষ ও দানশীল নারী, সাওম পালনকারী পুরুষ ও সওম পালনকারী নারী, যৌনাঙ্গ হেফাজতকারী পুরুষ ও যৌনাঙ্গ হেফাজতকারী নারী, বেশি বেশি আল্লাহর জিকিরকারী নারী ও পুরুষ; আল্লাহ এদের জন্য প্রস্তুত রেখেছেন মাগফিরাত আর শ্রেষ্ঠ প্রতিদান।” (সূরা আহযাব : ৩৫)।

এই আয়াতগুলোতে পুরুষ এবং নারীর সমতা ও শ্রেষ্ঠত্বের মাপকাঠি আল্লাহ বলে দিয়েছেন। সাধারণভাবে এই শ্রেষ্ঠত্ব এবং মর্যাদার সাথে সাথে আল্লাহ নারীদের বিশেষ কিছু অতিরিক্ত মর্যাদার কথা বলেছেন। নারী যেহেতু মা, স্ত্রী, কন্যা, বোন তাই তাদের মর্যাদা ও অধিকারও সুস্পষ্টভাবে বর্ণিত হয়েছে।

কন্যা হিসেবে

এ প্রবন্ধে আমরা বর্ণনা করেছি, জাহেলি যুগে নারীর অমর্যাদা ও দুরবস্থার কথা। যা কুরআনে সূরা আন নাহলে আল্লাহ বর্ণনা করেছেন। ইসলাম এ আচরণকে মানবতা বিরোধী ঘোষণা করেছে এবং এ কাজকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আর কেয়ামতের দিন পিতাকে কঠোর জবাবদিহির সম্মুখীন হতে হবে সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন - “জীবন্ত প্রোথিত কন্যাসন্তানকে কেয়ামতের দিন জিজ্ঞাসা করা হবে- কোন অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল। (সূরা ইনফিতার : ৮-৯)। রাসূল সা. বলেছেন : যে লোকের কোনো কন্যাসন্তান হয়েছে এবং সে তাকে জীবন্ত প্রোথিত করেনি এবং তাকে ঘৃণার চোখেও দেখেনি, তার উপর নিজের পুত্রসন্তানকে হকে অগ্রাধিকারও দেয়নি। তাকে আল্লাহ বেহেশত দান করবেন (আবু দাউদ, কিতাবুল আদব)।

 

স্ত্রী হিসেবে

ইসলাম স্ত্রী হিসেবে নারীকে পারিবারিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে যথাযোগ্য সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছে। আল্লাহ বলেন : “স্ত্রীদেরও তেমনি অধিকার আছে যেমন স্বামীদের তাদের উপর অধিকার রয়েছে। এবং তা যথাযথভাবে আদায় করতে হবে। (সূরা বাকারা : ২২৮)। অতীতে যেমন নারীদের উপর অত্যাচার করা হতো বর্তমানেও বিভিন্নভাবে নারীরা নির্যাতিত হচ্ছে। তারা পুরোপুরি স্ত্রীর মর্যাদা পায় না। অন্যদিকে নানা কারণে তারা সেখান থেকে মুক্ত হয়ে অন্য স্বামী গ্রহণের সুযোগও পায় না। এ ব্যাপারে আল্লাহ বলেন : “হে ঈমানদার লোকেরা! তোমাদের জন্য হালাল নয় নারীদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে তাদের ওয়ারিশ হয়ে বসা। আর তোমরা তাদের দেওয়া সম্পদের মোহরানার) কিছু অংশ আত্মসাৎ করার উদ্দেশ্যে তাদের হয়রানি করো না। তবে তারা প্রমাণিত ফাহেশা কাজে (ব্যভিচারে) লিপ্ত হয়ে থাকলে ভিন্ন কথা। তাদের সাথে ভদ্রোচিত ও সম্মানজনকভাবে বাস করো। তোমরা যদি তাদের (স্ত্রীদের) অপছন্দ করো, তবে এমনও হতে পারে যে, তোমরা কোনো কিছু অপছন্দ করছো, অথচ আল্লাহ তাতে প্রভূত কল্যাণ দান করবেন। (সূরা নিসা : ১৯)।

রাসূল সা. বলেন-

“তোমরা স্ত্রী লোকদের ব্যাপারে আল্লাহকে অবশ্যই ভয় করে চলবে। তোমাদের মনে রাখতে হবে যে, তোমরা তাদের গ্রহণ করেছ আল্লাহর নামে এবং এভাবেই তাদের হালাল মনে করেই তোমরা তাদের উপভোগ করেছ।” (মুসলিম)। উমর রা. বলেন- “আল্লাহর নামে শপথ করে বলছি, জাহেলিয়াতের যুগে আমরা মেয়েলোকদের কিছুই মনে করতাম না। কোনো গুরুত্বই দিতাম না। পরে যখন আল্লাহ তাদের মর্যাদা ও অধিকার সম্পর্কে স্পষ্ট অকাট্য বিধান নাজিল করলেন এবং তাদের জন্য মিরাসের অংশ নির্দিষ্ট করে দিলেন, তখন আমাদের মনোভাব ও আচরণের মধ্যে আমূল পরিবর্তন সাধিত হলো।” (মুসলিম)।

 

মা হিসেবে

মা হিসেবে ইসলামে নারীকে যে উচ্চ মর্যাদা ও সম্মান দিয়েছে সেটা তুলনাহীন। পিতা-মাতা বিশেষ করে মায়ের কষ্টের বিষয় আল্লাহ গুরুত্ব দিয়ে বর্ণনা করেছেন। “আমরা মানুষকে অসিয়ত (নির্দেশ) করছি তার পিতা- মাতার প্রতি সদয় আচরণ করতে। তার মা তাকে গর্ভে ধারণ করেছে এবং প্রসব করেছে কষ্টের সাথে। তাকে গর্ভে ধারণ করতে এবং দুধ ছাড়াতে লেগেছে ত্রিশ মাস।” (সূরা আহকাফ : ১৫)। “তোমার প্রভু নির্দেশ দিচ্ছেন- তোমরা তাঁর ছাড়া আর কারো ইবাদত করবে না। ইবাদত করবে কেবল তাঁরই। পিতা-মাতার প্রতি ইহসান করবে। তাদের একজন কিংবা দুজনই তোমার জীবদ্দশায় বৃদ্ধ বয়সে এসে পৌঁছালে তাদেরকে উহ পর্যন্ত করো না। এবং তাদেরকে ধমক দিয়ো না। তাদের সাথে কথা বলবে সম্মানের সাথে। দয়া-অনুকম্পা নিয়ে তাদের প্রতি অনুকম্পার ডানা অবনমিত করবে। এবং তাদের জন্য দুআ করবে এভাবে :“আমার প্রভু। তাদের প্রতি রহম করো, যেভাবে শৈশবে তারা দয়া, ও কোমলতার পরশে আমাকে লালন পালন করেছে। (সূরা বনি ইসরাইল : ২৩-২৪) । নবী সা. ঘোষণা করেছেন : “মায়ের পায়ের নিচে বেহেশেত।” আনাস রা. বর্ণনা করেছেন : নবী করীম সা. এর সময়ে আল কামা নামক এক যুবক কঠিন রোগে আক্রান্ত হয়। তার রোগ ক্রমশ বৃদ্ধি পেতে থাকে। শয্যাপার্শের উপস্থিত সেবা শুশ্রুষাকারীরা তার কলেমা পাঠ করার উপদেশ দেয়। কিন্তু শত চেষ্টা করে সে তা উচ্চারণ করতে পারে না। রাসূল সা. তা জানতে পেরে জিজ্ঞাসা করলেন তার মা কি জীবিত আছেন? বলা হলো, পিতা মারা গেছেন, কিন্তু মা জীবিত আছেন। সে খুবই বয়োবৃদ্ধ। তখন তাকে রাসূল সা.-এর দরবারে উপস্থিত করা হলো। তার কাছে ছেলের অবস্থা বর্ণনা করে তাকে এর কারণ জিজ্ঞাসা করা হলো। সে বললো, আল কামা বড় নামাজি, রোজাদার এবং দানশীল। সে যে কত দান করে, তার পরিমাণ কারো জানা নেই। রাসূলে করীম সা. জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমার সাথে তার সম্পর্ক কেমন? উত্তরে বৃদ্ধা মা বলল, আমি ওর প্রতি খুবই অসন্তুষ্ট। তার কারণ জিজ্ঞাসা করা সে বলল, ‘সে আমার চেয়ে তার স্ত্রীর প্রতি বেশি মনোযোগী। তাকে অগ্রাধিকার দেয় এবং তার কথামত কাজ করে। তখন রাসূল সা. বললেন, ঠিক এ কারণেই আল্লাহ আল্লাহ তার মুখে কলেমার উচ্চারণ বন্ধ করে দিয়েছেন। এরপর রাসূল সা. হযরত বিলালকে আগুনের একটা কুণ্ডলি জ্বালাতে বললেন এবং তাতে আল কামাকে নিক্ষেপ করতে আদেশ করলেন।

আল কামার মা একথা শুনে বলল, আমি মা হয়ে কেমন করে এটা সহ্য করতে পারি। সে আমার সন্তান, আমার কলিজার টুকরা। রাসূল সা. বললেন, তুমি যদি চাও যে, আল্লাহ তাকে মাফ করে দিন তাহলে তুমি তার প্রতি খুশি হয়ে যাও। অন্যথায় আল্লাহর শপথ, তার নামাজ, রোজা দান-খয়রাত কিছুর মূল্যই আল্লাহর দরবারে নেই। এরপর আল কামার মা বললো, আমি আল্লাহ ও তাঁর রাসূল সা.-কে সাক্ষী রেখে বলছি, আমি তাকে মাফ করে দিলাম। এরপর খবর পাওয়া গেল আল কামা কালিমা উচ্চারণ করতে পেরেছে।”

কন্যা, স্ত্রী, মা ছাড়াও নারী সমাজের এক গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আল্লাহ বলেন : “পুরুষ বা স্ত্রী- যে লোকই নেক আমল করবে ঈমানদার হয়ে। সেই বেহেশতে দাখিল হতে পারবে এবং এদের উপর জুলুম হবে না। (সূরা নিসা : ১২৪)।

মুসলিম নারী মানে মুসলমানদের মা, বোন, স্ত্রী ও মেয়ে। যখন নারীদের সম্মানিত করা হয় তখন গোটা সমাজ সম্মানিত হয়। নারীরা ধর্মীয় ব্যাপারে পুরুষের চেয়ে অনেক বেশি অগ্রসর। জ্ঞানার্জনের দিক থেকে নারীদের আগ্রহ অনেক বেশি। হাদিসে এসেছে জয়নব বিনতে জাহশ রা. আল্লাহকে ভয় করতেন। আত্মীয়দের প্রতি দয়া করতেন। বেশি বেশি সদকা করতেন। সদকার কাজে একনিষ্ঠভাবে আত্মনিয়োগ করতেন এবং এভাবে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশা করতেন। (মুসলিম)

মহিলারা নবী সা. কাছ থেকে অধিক জ্ঞানার্জনের ইচ্ছা করতেন। তারা রাসূল সা.কে বললেন : ‘পুরুষরা আপনার সময়ের অধিকাংশ দখল করে নিয়েছে। আপনি আমাদের শিক্ষার জন্য একটা সময় ঠিক করে দেন।” (বুখারী ও মুসলিম)।

রাসূল সা. বলেন : সদকা করো, সদকা করো এবং নারীরাই অধিক সদকা করে থাকে।” (মুসলিম)।

এগুলো ছাড়াও নারীর আরও অনেক সৎগুণাবলি রয়েছে। নারীদের এই স্বভাবসুলভ সৎ গুণাবলির বিকাশের জন্য প্রয়োজন নারীকে নারী হিসেবে তাকে সমাজ বিনির্মাণে কাজে লাগানো। যা পাশ্চাত্যের সমাজ পারেনি। ইসলাম যেহেতু আল্লাহ প্রদত্ত জীবনবিধান ‘আদদ্বীন’ তাই ইসলামী সমাজেই নারী মুক্তি নারী স্বাধীনতা সম্ভব। আর তার জন্য দরকার ইসলামী সমাজ। দরকার দুনিয়ার সমস্ত মতবাদ-মতাদর্শের ওপর ইসলামকে বিজয়ী আদর্শে হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করা। প্রয়োজন মানব সৃষ্টির সূচনাতেই আল্লাহর দেওয়া ঘোষণার বাস্তবায়ন। যা কুরআনের ভাষায় : আমি পৃথিবীতে আমার প্রতিনিধি পাঠাবো।” (সূরা বাকারা : ৩০)।

এ কাজ যেমন শুধু পুরুষের না তেমনি নারীর নয়। নারী পুরুষ উভয়ে মিলেই এ কাজের আঞ্জাম দেবে। যার যার অবস্থানে থেকে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করবে। আল্লাহ বলেন : “ফলে তাদের প্রভু তাদের দোয়ার জবাবে বলেন : আমি তোমাদের কোনো পুরুষ বা নারী আমলকারী আমল বিনষ্ট করি না। তোমরা একই দলের সদস্য। সে যারাই আমার জন্য হিজরত করেছে এবং যাদেরকে নিজেদের ঘর-বাড়ি থেকে বের করে দেয়া হয়েছে। আমার পথে কষ্ট দেয়া হয়েছে, নির্যাতন করা হয়েছে এবং যারা যুদ্ধ করেছে ও নিহত হয়েছে, আমি অবশ্য অবশ্যই তাদের থেকে তাদের পাপ ও দোষ-ত্রুটি মুছে দেবো এবং অবশ্য তাদেরকে জান্নাতে দাখিল করব, যেগুলোর নিচ দিয়ে প্রবাহিত থাকবে ঝরণাধারা। এগুলো তারা পাবে আল্লাহর পক্ষ থেকে পুরস্কার হিসেবে। আর উত্তম পুরস্কার তো আল্লাহর কাছেই রয়েছে। (সূরা আলে ইমরান : ১৯৫)।

এ আয়াতটাতে আল্লাহ শুধু সমতাই বলেননি বরং ইসলামী সমাজ বির্নিমাণে তাদের দায়িত্ব কর্তব্যের কথা বলেছেন। যে কাজ মহিলারা করেছেন রাসূল সা. যুগে। তারা আমাদের জন্য আদর্শ রেখে গেছেন। আল্লাহ বলেন- “মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারী পরস্পরের বন্ধু। তারা ভালো কাজের আদেশ করে, মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করে, সালাত কায়েম করে, জাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের আনুগত্য করে। এরাই সেই সব লোক, যাদের প্রতি অচিরেই আল্লাহ রহম করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী। বিজ্ঞানময়।” (সূরা তওবা : ৭১)।

বর্তমান যুগে সমাজ ধ্বংস করার কাজে ইসলামবিরোধী নারী পুরুষ হাতে-হাত, কাঁধে-কাঁধ মিলিয়ে কাজ করছে। এ ভাঙন রক্ষার জন্য আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও নারীদেরকে সম্মিলিতভাবে যার যার অঙ্গন থেকে কাজ করার নির্দেশ দিচ্ছেন। এবং এ কাজের পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলা বলেন- “আল্লাহ মুমিন পুরুষ ও মুমিন নারীদের ওয়াদা দিয়েছেন সেই জান্নাতের। যার নিচ দিয়ে ঝরনাধারা প্রবহমান থাকবে। তারা সেখানে থাকবে অনন্তকাল। সেই চিরস্থায়ী জান্নাতে থাকবে মনোরম বাসস্থান। আর তাদের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার থাকবে আল্লাহর রেজামন্দি। এটাই প্রকৃত সাফল্য।” (সূরা তওবা : ৭২)।

লেখিকা : গবেষক, সংগঠক ও ইসলামী চিন্তাবিদ