মঙ্গলবার, ২২ আগস্ট ২০২৩

পুলিশি হেফাজতে ছাত্রদল নেতাকে নির্যাতনের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ

পুলিশের হেফাজতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক মমিনুল ইসলাম জিসানকে নির্যাতনের ঘটনায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিৃবতিতে সংগঠনের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলাম গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ সময় নেতৃবৃন্দ জিসানসহ আরও ৫ ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে পুলিশের করা ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা ও বানোয়াট মামলা প্রত্যাহার এবং অবিলম্বে গ্রেফতারকৃতদের মুক্তির দাবি জানান।

বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, গত শুক্রবার সকাল ১১টায় রাজধানীর আজিমপুরের বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকেই মমিনুল ইসলামকে পাওয়া যাচ্ছিল না। তাঁর খোঁজ নিতে বাসার সামনে গেলে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সহ-সাধারণ সম্পাদক শাহাদত হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মো. হাসানুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল্লাহ আল রিয়াদ, বিশ্ববিদ্যালয়ের এফ রহমান হল শাখার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহির উদ্দীন মোহাম্মদ বাবরও নিখোঁজ হন। একদিন পরে তাদের অস্ত্র ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় গ্রেফতার দেখায় পুলিশ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, "রবিবার আদালতে তোলার সময় জিসানের শরীরে আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে। তার পরিবার জানিয়েছে, পুলিশের নির্যাতনের কারণে জিসান স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে থাকতে পারেন। জিসানকে আরও নির্যাতনের আশঙ্কা করছেন তারা। এখনও দুই দিনের রিমান্ডে আছেন তিনি।

বিরোধী মতালম্বীদের আটকের ক্ষেত্রে পুরোনা তরিকা অবলম্বন করেছে পুলিশ। আটকের পর ছাত্রদল নেতাদের কাছ থেকে অস্ত্র উদ্ধারের নাটক মঞ্চস্থ করেছে সরকারের আজ্ঞাবহ বাহিনীটি। সেই নাটককে পাকাপোক্ত করতেই জিসানের ওপর নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে আমরা মনে করি।"

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, "জিসানের ওপর চলা পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা সভ্য দুনিয়ার নিয়মের অতীত। তবে এ ঘটনায় আমরা মোটেই আশ্চর্য নই। কেননা, আওয়ামী ফ্যাসিবাদী সরকার তাদের প্রায় ১৫ বছরের শাসনামলে রাষ্ট্রীয় বাহিনী কর্তৃক বিরোধী রাজনৈতিক মতালম্বীদের নির্যাতনের সকল সীমা অতিক্রম করে ফেলেছে। হামলা-মামলা-নির্যাতনের এক ‘কাঠামোবদ্ধ পদ্ধতি’ চালু করেছে জনগণের কাঁধে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসা এ সরকার।

এরই ধারাবাহিকতায় জিসানের ওপর পুলিশি নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। আইনের ন্যূনতম তোয়াক্কা না করে বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর মিছিল-সমাবেশ-জমায়েতে লাঠিচার্জ, গুলিবর্ষণ ও গ্রেফতার দেশের নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনায় পরিণত হয়েছে। জনগণের সকল রাজনৈতিক ও সামাজিক অধিকার সরকারের করুণার মুখাপেক্ষী হয়ে পড়েছে। ক্ষমতার ক্রান্তিলগ্নে দিশাহারা সরকার ক্ষমতা টিকিয়ে আইনবিরোধী হেন অপকর্ম নেই, যা তারা করছে না।"

পুলিশবাহিনীকে দলীয় সংকীর্ণপূর্ণ আচরণ ও আইনবিরোধী কর্মকাণ্ড থেকে বের হয়ে নিরপেক্ষ ও দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান নেতৃবৃন্দ। সেই সাথে মমিনুল ইসলাম জিসানের ওপর পুলিশি বর্বর নির্যাতনের বিচার বিভাগীয় তদন্ত এবং এর সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।