শনিবার, ১৯ আগস্ট ২০২৩

আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ইন্তেকালে ছাত্রশিবিরের গভীর শোক

বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম নেতা, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন, প্রখ্যাত আলেমে দ্বীন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও বিশ্ববরেণ্য ইসলামী চিন্তাবিদ, কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ের স্পন্দন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রাহিমাহুল্লাহর ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ শোকবার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, "ইসলাম প্রিয় কোটি জনতার প্রিয় ব্যক্তিত্ব  আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী ১৪ আগস্ট রাত ৮টা ৪০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাজধানীর পিজি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।

জনসমর্থনহীন অবৈধ সরকারের সাজানো মামলায় আটক থাকা অবস্থায় জীবনের শেষ প্রান্তে তিনি পরিবারের সান্নিধ্য ও উন্নত চিকিৎসা বঞ্চিত অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। তিনি ১৪ আগস্ট সকালে স্ট্রোক করলেও রাতে তাকে হাসপাতালে আনা হয়েছে। বারবার অনুরোধের পরও তাঁর পরিবারের সদস্যদের দেখা করতে দেওয়া হয়নি। তাঁর এই বেদনাদায়ক ইন্তেকালে বাংলাদেশের জনগণসহ সমগ্র মুসলিম বিশ্ব গভীরভাবে শোকাহত!

তিনি ছিলেন দলমতনির্বিশেষে সর্বজনশ্রদ্ধেয় আলেমে দ্বীন। মানুষের ধারে ধারে কুরআন পৌঁছে দিতে তিনি ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দেশের জনপদ থেকে জনপদে ছুটে বেড়িয়েছেন। শুধু দেশে নয়, বরং প্রাচ্য থেকে পাশ্চাত্য তিনি কুরআনের পৌঁছে দিয়েছেন। কুরআনের দাওয়াতের ফলে দেশে-বিদেশে বহু অমুসলিম ইসলাম গ্রহণ করেছেন।

বাংলার জমিনে জনপদে জনপদে তাফসির মাহফিলের প্রসারে তাঁর ভূমিকা অগ্রগণ্য। সর্বস্তরের মানুষকে ইসলামী চেতনায় জাগ্রত করতে তাঁর অবদান ইসলামপ্রিয় জনতা কখনো ভুলবে না।"

তিনি ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলনের অগ্রসেনানী উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, "শত বাধা, নির্যাতন, অপবাদ সত্ত্বেও তিনি ইসলামের মহান আদর্শ থেকে চুল পরিমাণ বিচ্যুত হননি। বাংলার জমিনে ইসলামী সমাজব্যবস্থা কায়েম করার জন্য আমৃত্যু সংগ্রাম করে গেছেন। জুলুম সহ্য করেছেন, কিন্তু বাতিলের কাছে মাথা নত করেননি। ইসলামের প্রচার ও প্রসারে তিনি অসংখ্য বই রচনা করেছেন। তা ছাড়া বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায়ের বিভিন্ন সংকটকালে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সারা বিশ্বের ইসলামপ্রিয় কোটি জনতার হৃদয়ে স্থান করে নিয়ে ছিলেন।"

নেতৃবৃন্দ বলেন, "তিনি রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। ইসলাম ও ইসলামী আন্দোলন ভীতির কারণে দেশ-বিদেশি অপশক্তির প্ররোচনায় তাঁকে কারাপ্রকোষ্টে বন্দি করে রেখেছিল। কিন্তু দেশ ও ইসলামপ্রিয় জনতার হৃদয় থেকে তাকে সরাতে পারেনি। যার প্রমাণ সর্বত্র আল্লামা সাঈদীর জন্য মানুষের হাহাকার ও আর্তনাদ।

আল্লামা সাঈদীকে সুকৌশলে হত্যা করে ইসলামী আন্দোলনের কোনো ক্ষতি সরকার করতে পারেনি; বরং তিনি বাংলার জমিনে দেশ ও ইসলামপ্রিয় জনতার জন্য প্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবেন অনন্তকাল। অবৈধ সরকার অথবা বাম-রামরা যতই অপবাদ দিক না কেন, দেশ ও ইসলাম রক্ষার আপসহীন ভূমিকার জন্য বাংলাদেশের মানুষ ও বিশ্ব মুসলিম সম্প্রদায় আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীকে শ্রদ্ধার সাথেই স্মরণ করবে, ইনশাআল্লাহ।"

নেতৃবৃন্দ মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার যেন ধৈর্যধারণ করতে পারে সেজন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।