শুক্রবার, ৩০ জুন ২০২৩

সুইডেন সরকারের সহায়তায় পবিত্র কুরআন পোড়ানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

সুইডেনে সরকারের সহায়তায় পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে পবিত্র কুরআন পোড়ানোর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, "আমরা গভীর ক্ষোভ ও উদ্বেগের সাথে লক্ষ করছি, সভ্য রাষ্ট্রের দাবিদার সুইডেন পবিত্র কুরআন পোড়ানো নিয়মিত কাজে পরিণত করেছে। পবিত্র ঈদুল আজহার দিনে প্রকাশ্যে পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে দাঁড়িয়ে পবিত্র কুরআনে অগ্নিসংযোগ করেছে দুই কুলাঙ্গার। যা শুধু কুরআন নয়; বরং বিশ্বের সকল মুসলমানসহ শান্তিকামী প্রতিটি মানুষের কলিজাকে দগ্ধ করেছে।

পৃথিবীর কোনো সভ্য জাতি বা দেশ কারও মৌলিক বিশ্বাসের ওপর এভাবে আঘাত হানতে পারে না। এর আগেও ২০২০ ও ২০২২ সালে সুইডেনে একই কাজ করেছিল উগ্রপন্থিরা। এ নীতিহীন ন্যক্কারজনক অপকর্মের ফলে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার সৃষ্টি হয়েছিল, যাতে বহু মানুষ নিহত হয়েছে। ফলে শুধু মুসলমান নয়; বরং বিশ্বের শান্তিকামী দেশ ও মানুষ থেকে ধিক্কার ও ঘৃণা কুড়িয়েছিল সুইডেন। এই নিন্দনীয় কাজ প্রতিটি মুসলমানসহ বিশ্বের সকল বিবেকবান মানুষের হৃদয়ে আঘাত করেছে।

আরো লজ্জার বিষয় হলো, সুইডেন সরকারের অনুমতি নিয়ে ও সরকারের পুলিশ পাহারায় এ ঘৃণ্য কাজ করেছে উগ্রবাদীরা। অথচ সুইডেনের মতো দেশগুলো নিজেদের সভ্য ও শ্রদ্ধাশীল হিসেবে বিশ্বদরবারে উপস্থাপনের প্রয়াস চালিয়ে আসছে, কিন্তু ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর এমন ঘৃণ্য আঘাত কীভাবে তাদের দেশ ও জাতিকে সভ্য হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে তা বিবেকসম্পন্ন মানুষের বোধগম্য নয়। এগুলো কোনোভাবেই বাকস্বাধীনতা নয়; বরং বাকস্বাধীনতার নামে চরম ধৃষ্টতা। এক্ষেত্রে সুইডেন সরকারের চরমপন্থিদের সহায়তামূলক ভূমিকায় বিশ্ববাসীকে হতবাক করেছে। এগুলো কি শুধু অবমাননা নাকি এর পেছনে মুসলমানদের বিরুদ্ধে কোনো গভীর ষড়যন্ত্র রয়েছে, তা বিবেচনায় নেওয়ার জন্য আমরা মুসলিম নেতৃবৃন্দসহ বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি। একই সাথে এমন নিকৃষ্ট কর্মকাণ্ড বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে জাতিসংঘ, ওআইসি, আরবলীগসহ সকল মুসলিম দেশ, নেতৃবৃন্দ ও শান্তিকামী মানুষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।

ইতিমধ্যে অনেক মুসলিম দেশ এ ঘৃণ্য কাজের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে। অবিলম্বে বাংলাদেশ সরকারকে প্রতিবাদ জানিয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে বিবৃতি প্রদান, সুইডেন রাষ্ট্রদূতকে তলব করে তীব্র প্রতিবাদ জানাতে হবে। বারবার এ ধরনের ধৃষ্টতা দেখেও মুসলিম নেতৃবৃন্দ নীরব থাকা এই ঘৃণ্য ঘটনাকে সমর্থন দেওয়ার শামিল।

সুতরাং অবিলম্বে সুইডেনকে এসব উস্কানিমূলক উগ্রবাদী কর্মকাণ্ড থেকে বিরত রাখতে মুসলিম নেতৃবৃন্দকে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নিয়ে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।"

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, "মুসলমানদের ধৈর্যের পরীক্ষা নেবেন না। মুসলিমরা শান্তিতে বিশ্বাসী। কিন্তু তার মানে এই নয় যে, মুসলিমদের জীবনের চেয়েও প্রিয় পবিত্র কুরআন অবমাননা করলে আমরা চুপ থাকব; বরং সুশৃঙ্খল পন্থায় এর প্রতিবাদ জানানো প্রতিটি মুসলমানের ঈমানেরই দাবি।

আমরা অবিলম্বে পবিত্র কুরআনে অগ্নি-সংযোগকারীদের গ্রেপ্তার ও সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় এর ফলে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে তার দায়ভার সুইডেন সরকারকেই নিতে হবে। তাদেরকে সন্ত্রাসীদের কাতারেই বিবেচনা করবে বিশ্ববাসী।"