শনিবার, ২৪ জুন ২০২৩

দৃঢ়তার সাথে সাহসী পথচলা অব্যাহত রাখতে হবে—অধ্যাপক মুজিবুর রহমান

বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর, সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেছেন, “কুরআনের আলোকে সার্বিক জীবন গঠন ও সর্বক্ষেত্রে কুরআনি জীবনব্যবস্থা কায়েম ভীতু কাপুরুষদের কাজ নয়; বরং ঈমানদীপ্ত বীর সেনানীদের কাজ। ছাত্রশিবির সেই বীর সেনানীদের কাফেলা। সুতরাং কাঙ্ক্ষিত পরিবর্তনের লক্ষ্যে দৃঢ়তার সাথে সাহসী পথচলা অব্যাহত রাখতে হবে।”

তিনি রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ-২০২৩ সেশনের দ্বিতীয় সাধারণ অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলামের পরিচালনায় অধিবেশনে আরো উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ, নূরুল ইসলাম বুলবুল, ইয়াছিন আরাফাত ও হাফেজ রাশেদুল ইসলাম। বৈঠকে কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রণ করেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, “ইসলামী আন্দোলন গড়ে ওঠে এবং বিজয় লাভ করে ত্যাগ ও আল্লাহর সাহায্যের ওপর। এটি একটি চলমান ধারা। তবে এজন্য নিজেদের সর্বোচ্চ যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে হবে। বিশেষ করে গোপনে মহান রবের ইবাদতে মগ্ন থাকতে হবে। সকল সফলতার জন্য মহান আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে সাহায্য চাইতে হবে। পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের কাছে নিজেকে পরিচ্ছন্ন ও আস্থাভাজন হিসেবে উপস্থাপন করতে হবে। আমরা আমাদের পথচলা ও মঞ্জিলের বিষয়ে সজাগ ও সচেতন।

এ পথচলায় যেমন কোনো রিয়া থাকবে না আবার কোনো হীনম্মন্যতাও থাকবে না। বরং ইসলামী আন্দোলনের সাথে সম্পৃক্ত হওয়া যে একটি নিয়াতম, তা হৃদয়ঙ্গম করতে হবে। মহান রবের দরবারে চোখের পানি এবং জমিনে রক্ত-ঘামের মাধ্যমে আমরা সময়ের ব্যবধানে এ জমিনে ইসলাম কায়েম করবই, ইনশাআল্লাহ।”

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান আকন্দ বলেন, “প্রকৃত শান্তি ও কল্যাণের অন্বেষণে পৃথিবীবাসী পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্রসহ নানা মতবাদের পেছনে ছুটতে ছুটতে আজ ক্লান্ত। এসব তন্ত্রমন্ত্র আবর্জনায় পরিণত হয়েছে। ইসলামের জন্য আগামীর দিন সম্ভাবনার। এ সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে দৃঢ়প্রত্যয়ী হতে হবে। দ্বীনের পথে যারা শহীদ হয়েছেন এবং জমিনে যারা রক্ত-ঘাম ঝরিয়ে যাচ্ছেন, তাদের সবারই লক্ষ্য ও স্বপ্ন এক। সুতরাং ঐক্যবদ্ধ সুদৃঢ় অগ্রযাত্রা আমাদেরকে কাঙ্ক্ষিত মঞ্জিলে পৌঁছে দেবে, ইনশাআল্লাহ।”

সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি নূরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, “বাংলার এ সবুজ-শ্যামল জমিন শহীদের রক্তে সিক্ত হয়েছে। এখন প্রতিটি জনপদে দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে দ্বীন কায়েমের শক্ত ভিত্তি তৈরি করতে হবে। সর্বস্তরের সকল জনশক্তিকে দাওয়াতি কাজকে প্রাধান্য দিতে হবে। এ জমিনের এক ইঞ্চি জমিনও যেন দাওয়াতি কাজের আওতার বাইরে না থাকে তা নিশ্চিত করতে হবে।”

সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেন, “ফুল ছিটানো কোনো জমিনে ইসলাম কায়েম হয়নি। আমাদের পথ সব সময়ই কণ্টকাকীর্ণ। সুতরাং এ পথে সবাইকে কদম মজবুত করে দাঁড়াতে হবে। দৃঢ়তার সাথে কাফেলাকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। দেশ ও জাতির কল্যাণে যেকোনো ত্যাগ স্বীকারে সকল জনশক্তিকে ময়দানে সক্রিয় থাকতে হবে।”

সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম বলেন, “চলমান দুনিয়ায় ভার্চুয়াল জগৎ সম্ভাবনা ধ্বংসের অন্যতম হাতিয়ার। ছাত্রশিবিরকে এ বিষয়টিকেও দক্ষতার সাথে মোকাবিলা করতে হবে। ছাত্রশিবিরের জনশক্তিরা সকল পরিস্থিতি মোকাবিলা করে এগিয়ে যাওয়ার হিম্মত রাখে, ইনশাআল্লাহ। যোগ্যতা, সৃজনশীলতা ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমে সংগঠনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ধারাকে আরো বেগবান করতে হবে।”

সভাপতির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান বলেন, “জাতির অগ্রযাত্রার গতিপথ নির্ধারক তরুণ ও ছাত্রসমাজের ভবিষ্যৎ সুপরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিচ্ছে দেশ ও ইসলামবিরোধী এই সরকার। একদিকে সেক্যুলার শিক্ষাক্রম চাপিয়ে দিয়ে ধর্মহীন, ভোগবাদী, উশৃঙ্খল, মাদকাসক্ত প্রজন্ম তৈরির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে। অন্যদিকে শিক্ষাব্যবস্থায় নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে।

বরাবরের মতো এবারের বাজেটেও শিক্ষা খাতে অপর্যাপ্ত বরাদ্ধ রাখা হয়েছে। আর শিক্ষাঙ্গনে সন্ত্রাস, অনিয়ম, দুর্নীতি, কোন, অস্ত্র ও মাদকের সয়লাবের মাধ্যমে আগামী প্রজন্মকে ধ্বংসের ধারপ্রান্তে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় পুরো জাতি শঙ্কিত! তবে ছাত্রশিবিরকে নিয়ে জাতির প্রত্যাশার পরিধিও বৃদ্ধি পেয়েছে। কেননা, জাতির কাঙ্ক্ষিত নাগরিক উপহার দেওয়ার প্রচেষ্টায় ছাত্রশিবির একটি স্বতন্ত্র শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান হিসেবে আজ স্বীকৃত।

জাতির প্রত্যাশা পূরণের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে আমরা অবস্থান করছি। এ অবস্থায় সৎ, যোগ্য ও আদর্শিক নাগরিক তৈরির প্রচেষ্টা আরো গতিশীল করতে হবে। দেশের এ ক্রান্তিলগ্নে ফ্যাসিবাদীদের কবল থেকে দেশ ও জনগণকে উদ্ধার করতে ছাত্রশিবির নেতাকর্মীদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে এবং ছাত্রসমাজকে ঐক্যবদ্ধ দুর্বার গণআন্দোলন গড়ে