মঙ্গলবার, ০৪ এপ্রিল ২০২৩

বঙ্গবাজারে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে গভীর উদ্বেগ ও সমবেদনা জানিয়ে ছাত্রশিবিরের বিবৃতি

রাজধানীর গুলিস্তানে বঙ্গবাজার পোশাক মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতিতে গভীর উদ্বেগ ও সমবেদনা জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, "ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে বঙ্গবাজার পোশাক মার্কেট ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বঙ্গবাজার দোকান মালিক সমিতির তথ্যমতে, এখানে মোট ছয়টি মার্কেটের পাঁচ থেকে ছয় হাজার দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে! অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আহত হয়ে ৪ ফায়ার সার্ভিস কর্মীসহ ১১ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। ঈদুল ফিতর ও বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে ব্যবসায়ীরা দোকানে কোটি কোটি টাকার মালামাল তুলেছিলেন।

কিন্তু এ ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে সব পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। দোকান মালিকসহ প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার পরিবারের সদস্যরা ক্ষতিগস্ত হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

অন্যদিকে অগ্নিকাণ্ডে সূত্রপাত নিয়ে সন্দেহ করছেন ব্যবসায়ীরা। তারা গণমাধ্যমকে বলেছেন, 'রাতের বেলায় দোকানপাট বন্ধ করার পর মার্কেটে বিদ্যুৎ সংযোগ সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করা হয়। বিদ্যুৎ বন্ধ থাকার পরেও কীভাবে বৈদ্যুতিক গোলযোগের কারণে আগুন লাগে?' এটা কোনো ষড়যন্ত্র হতে পারে বলে গণমাধ্যমের কাছে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ীরা। অন্যদিকে অগ্নিকাণ্ডে প্রথম দিকে আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভির কর্মীদের ইচ্ছাকৃত অবহেলার কথাও গণমাধ্যমের কাছে বলেছেন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা। আমরা মনে করি, ব্যবসায়ীদের অভিযোগ গুরুত্বের সাথে নিয়ে সঠিক তদন্ত করা উচিত। এ ঘটনার সাথে কোনো ষড়যন্ত্র থাকলে তা খুঁজে বের করা জরুরি।"

নেতৃবৃন্দ বলেন, "এলাকাটিতে মার্কেট ছাড়াও গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা রয়েছে। এমনকি ফায়ার সার্ভিসের হেড কোয়ার্টার পাশেই ছিল। কিন্তু এখানে দুর্ঘটনা ঘটলে তা প্রতিরোধের জন্য যে সকল সরঞ্জাম থাকা দরকার, তা পর্যাপ্ত ছিল না। যা ক্ষতির পরিমাণ অনেকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

অথচ সরকার অর্থহীন ও বিলাসী কর্মকাণ্ড এবং কম গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করছে। কিন্তু দেশে একের পর এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটলেও তা প্রতিরোধে আধুনিক সরঞ্জামের ব্যবস্থা করছে না। বারবার ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে অপূরণীয় ক্ষতির দায় সরকার কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। একের পর এক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনার সরকারের অপর্যাপ্ত পদক্ষেপে দেশের মানুষ উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ।"

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, "এ ঘটনা থেকে সংশ্লিষ্ট সবাইকে শিক্ষা নিতে হবে। সরকারকে একটি সঠিক তদন্ত কমিটি গঠন করে ঘটনার মূল কারণ উদ্ঘাটন করে পরবর্তী সময়ে যেন এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তার কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীদের উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং আবারো দ্রুততার সাথে ব্যবসা শুরু করার জন্য কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। বড় বড় কলকারাখানা ও প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে পর্যাপ্ত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। একই সাথে এ ঘটনার সাথে কোনো অবহেলা, দায়িত্বহীনতা বা দুষ্কৃতিকারী জড়িত থাকলে সেটিরও সঠিক তদন্তের মাধ্যমে নিশ্চিত হয়ে তাদের শাস্তির আওতায় আনতে হবে।

আমরা সরকার ও সমাজের বিত্তবানসহ সকলকে এ মর্মান্তিক দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।"