বুধবার, ২৬ জানুয়ারি ২০২২

আওয়ামী লীগকে নিয়ে কৌতুক পোস্ট করায় তরুণের ১০ বছরের কারাদন্ডের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের উদ্বেগ

আওয়ামী লীগ নিয়ে ফেসবুকে সামান্য কৌতুক পোস্ট করায় তরুণের ১০ বছরের কারাদণ্ডের রায়ে গভীর উদ্বেগ ও মানবাধিকার লংঘনের আশঙ্কা প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমান বলেন, চলমান অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ভোটবিহীন আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের মত প্রকাশের মৌলিক অধিকার কেড়ে নিচ্ছে। সম্প্রতি ২০১৭ সালের সামান্য ফেসবুক স্ট্যাটাস দেওয়ার কারণে আওয়ামী লীগ নেতার করা প্রহসনমূলক আইসিটি মামলায় ২৬ বছরের তরুণ হাফেজ আব্দুল মুকিতের ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা করা হয়। রাষ্ট্রের বিচার ব্যবস্থায় এ ধরনের রায় প্রহসনমূলক ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
নেতৃবৃন্দ বলেন, যে আইনে নিরপরাধ তরুণকে দন্ড দেওয়া হয়েছে সে আইনটি‘ই প্রশ্নবিদ্ধ। আইনটির ৫৭ ধারা নিয়ে শত সমালোচনা ও বিরোধীতার পরও সরকার এ আইন প্রণয়ন করেছে আওয়ামী বিরোধী মতকে নিষ্ঠুর কায়দায় দমন করার জন্য। দেশের শীর্ষ আইন বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, ‘এই আইনটি এমন যে এখানে ভাবমূর্তি বা মানহানির কোনো ব্যাখ্যা নাই। এর ব্যাখ্যা ঠিক করে পুলিশ। ফলে সরকার বা ক্ষমতাশালীরা যেভাবে মনে করে সেভাবেই এটাকে ব্যাখ্যা করা হয়’। মূলত গণমাধ্যম ও ব্যক্তিগত বাক স্বাধীনতাকে হরণ করার জন্যই এ আইন ব্যবহার করা হচ্ছে। সমাজের সচেতনমহল এই আইনকে ‘কালাকানুন’ উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবীতে আন্দোলন করছে। বিজ্ঞ আইনজীবী, সাংবাদিক, লেখক, ছাত্রসমাজ, রাজনৈতিক দল, মানবাধিকার সংস্থাসহ সর্বস্তরের মানুষ এ আইন বাতিলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। কেননা আইনের অপব্যবহার করে সাংবাদিক, লেখকসহ অনেককে গ্রেপ্তার নির্যাতন করা হচ্ছে। এমনকি এ আইনের অপব্যবহারের কারাবন্দী অবস্থায় নির্মমভাবে মৃত্যু বরণ করতে হয়েছে একজন লেখককে। একই কায়দায় অবিচার করা হয়েছে আব্দুল মুকিতের উপর।
নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, সরকারকে ফায়দা হাসিলের সুযোগ করে দিতেই আইসিটি মামলার নামে সাধারণ জনগণের মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। যা জাতীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে সমালোচিত হচ্ছে। ফেসবুকে পোস্ট দেওয়ার কারণে কারাভোগ মানবাধিকার লংঘনের শামিল। এ ধরনের রায় রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ও বিদ্ধেষ ছড়াতে পারে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারের সমালোচনা একটি গণতান্ত্রিক দেশের মানুষের মৌলিক অধিকার। আওয়ামী লীগ নেতাদের এ ধরণের অতি উৎসাহি হয়রানিমূলক মামলা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নাগরিক অধিকারের জন্য হুমকি স্বরুপ। অবিলম্বে দন্ড দেওয়া তরুণকে মুক্তি দিতে হবে। আইনকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করার এ হীন অপচেষ্টা জনগণ মেনে নিবে না।