"দারিদ্র্য বিমোচনের এক শক্তিশালী হাতিয়ার" -মো. রফিকুল ইসলাম

ওশর নামাজ রোজার মতোই ফরজ ইবাদত। আমাদের দেশে আমরা যাকাতের সাথে পরিচিত এবং যাকাতের প্রচলন কিছুটা থাকলেও যাকাতের উল্লেখযোগ্য খাত ‘ওশর’ বর্তমানে চালু নেই। মুসলমানদের জন্য অতীব পরিতাপের বিষয় ‘ওশর’-এর ন্যায় ফরজ একটা অর্থনৈতিক ইবাদত সম্পর্কে কারো তেমন অনুভূতি নেই। যাকাত ও ওশর দারিদ্র্য বিমোচনের এক শক্তিশালী হাতিয়ার। পরিকল্পিত উপায়ে যদি যাকাত এবং ওশর আদায় করা হয় তাহলে প্রতি বছর হাজার হাজার কোটি টাকার যাকাত এবং লক্ষ লক্ষ টন ফসল ওশর হিসেবে আদায় করা সম্ভব। ইসলামী অর্থনীতির দুটো ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করতে পারলে অর্থনৈতিক মুক্তি আসবে এবং দারিদ্র্য জাদুঘরে পালাতে বাধ্য হবে।

"অর্থনীতি সমৃদ্ধকরণে রাসূল সা.-এর ভূমিকা" -- হাবিবুর রহমান

মহান আল্লাহ তায়ালা মহাগ্রন্থ আল কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ওমা আরসালনাকা ইল্লা রাহমাতাল্লিল আলামিন। অর্থ: হে নবী আপনাকে মানবজাতির জন্য রহমতস্বরূপ পাঠানো হয়েছে। সত্যি, মানুষের জন্য অফুরন্ত শান্তির বার্তা নিয়ে আগমন ঘটেছিল মানবতার মুক্তির দিশারি, সর্বকালের সবশ্রেষ্ঠ মানুষ, নবীকুলের শিরোমণি, পথহারা পথিকের পথপ্রদর্শক, অর্থনৈতিক সংস্কারক বিশ্বনবী মহামানব হযরত মুহম্মদ সা.-এর। মানবসমাজের জন্য আল্লাহ তার মাধ্যমেই পাঠিয়ে ছিলেন রহমতের অমিয় ধারা। সেই রহমতের গুণেই অন্ধকারাচ্ছন্ন, পাপ-পঙ্কিলতাময় বসুন্ধরায় আইয়্যামে জাহেলিয়াতের সমাজ ভরে উঠেছিল আলোয় আলোয়। সমস্ত পৃথিবীতে যখন পাপ-পুণ্যের, বিবেক-বুদ্ধির অন্ধ বিশ্বাসের জালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে মহান আল্লাহ তায়ালার ঐশী বাণী নিয়ে হযরত মুহাম্মাদ সা. পৃথিবীতে আগমন করেন। অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে তাঁর দূরদর্শিতা দিয়ে যে আমূল পরিবর্তন সাধন করেছেন তা পরবর্তীতে বিশ্বের অর্থনীতিবিদদের নিকট আদর্শ হয়ে থাকে। রাসূল সা. কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী অর্থনীতিতে দিয়েছেন এক যুগান্তকারী নতুন কর্মসূচি।

মে দিবসের রক্তাক্ত ইতিহাস শ্রমিক অধিকার ও আমাদের দায়িত্ব

বাংলাদেশে কাজের ক্ষেত্রে পোশাকশ্রমিকের পর নির্মাণশ্রমিকদের কর্মক্ষেত্র অনেক ঝুঁকিপূর্ণ। এসব ঝুঁকিপূর্ণ পেশায় যাদের রক্ত ও ঘাম মিশে আছে তারাও তাদের শ্রমের ন্যায্য পাওনা অনেক সময় পায় না। শ্রম দিয়ে যারা শ্রমের মূল্য পায় না তারাই জানে জীবন সংগ্রামে বেঁচে থাকার লড়াই কত কষ্টের? শ্রমের মর্যাদা ও শ্রমিকের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এবং দেশের শ্রম আইনে সংবিধান অনুসারে শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের ন্যায্য অধিকার সংরক্ষিত আছে। কিন্তু বাস্তবে বাংলাদেশের শ্রমজীবী মানুষের অধিকার যেন কিতাবে আছে গোয়ালে নেই! বরাবরই এই দেশের দিনমজুর শ্রেণীর মেহনতি মানুষ বঞ্চিত ও শোষিত।

মানবসম্পদ উন্নয়নে ইসলামের ভূমিকা

আল্লাহ তাআলা মানুষকে অসংখ্য নিআমাত দিয়েছেন। আল্লাহ তাআলার এ নিআমতসমূহের বিনিময়ে তাঁর আদেশ পালন করা হলো কৃতজ্ঞা জানানো। আল্লাহ তাআলার আদেশ মেনে চললে মানুষ কোনো খারাপ কাজ করতে পারবে না। ফলে তার চরিত্র সুন্দর হবে। আল্লাহ তাঁর নিআমত আরো অধিকাহারে শোকরকারীকে দান করবেন। যেমন তিনি বলেছেন, যদি তোমরা শোকর করো, তাহলে অবশ্যই আমি তোমাদের নিআমত বাড়িয়ে দেববো। ‘ আল-কুরআন, ১৪ : ৭’। যারা আল্লাহ তাআলার নিআমতের শোকর করে তাদের পক্ষেই অন্যান্যদের উপকার স্বীকার করা এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা সম্ভব। কৃতজ্ঞ মানুষকে আল্লাহ তাআলা যেমন ভালবাসেন তেমনি মানুষও কৃতজ্ঞ মানুষের জন্য আরও কিছু করার আগ্রহ পোষণ করে থাকেন। ইসলামের শিক্ষা মানুষকে কৃতজ্ঞা জ্ঞাপন অভ্যস্ত করে তোলে। এতে ব্যক্তি সর্বজনপ্রিয় ও শ্রদ্ধেয় হয়ে ওঠে।

ইসলামে শ্রমিকের মর্যাদা

এ দেশে নারায়ণগঞ্জে প্রথম মে দিবস পালিত হয় ১৯৩৮ সালে। তখন ব্রিটিশ শাসনামল। তারপর পাকিস্তান আমলেও মে দিবস যথাযথ উৎসাহ উদ্দীপনা নিয়ে পালিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তানের শাসন থেকে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালে বাংলাদেশে বিপুল উদ্দীপনা নিয়ে মে দিবস পালিত হয়। ঐ বছর সদ্য স্বাধীন দেশে পয়লা মে সরকারি ছুটি ঘোষিত হয়। তারপর থেকে আজও পয়লা মে সরকারি ছুটির দিন বহাল আছে।