পৌষের শেষ দুপুর এখনো মাঘ মাস শুরু হয়নি। মেঘের আড়ালে সারাবেলা সূর্য লুকিয়ে থাকায় দুপুর পেরিয়েও শীতের প্রকোপটা অন্য দিনের চাইতে একটু বেশিই মনে হচ্ছিল। এর মাঝে এক পশলা বৃষ্টি নামলো হঠাৎ করে। এমন সময় লোহার শিকলের ফাঁক দিয়ে ঝিরঝির বৃষ্টি দেখছি আর আনমনে মুখ দিয়ে উচ্চারিত হচ্ছিল সুরসম্রাট শিল্পী মশিউর রহমানের গাওয়া বিশিষ্ট গীতিকার আসাদ বিন হাফিজের লেখা জনপ্রিয় একটি গানের দু’এক লাইন-“পৃথিবী না জানুক আমি তো জানি, আমি কি পাপ করেছি হায়, আমার পাপের করলে বিচার বাঁচার নাই উপায়” যখনই একান্তে নিজেকে নিয়ে ভাবি, আত্ম-সমালোচনা করি তখনই এ গানটির কথা মনে চলে আসে। গানের লাইনগুলো উচ্চারণের সাথে সাথে শিহরণ দিয়ে লোমকূপ নাড়া দিয়ে যায়। দুনিয়ার আদালতে মিথ্যা ও রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ণ অভিযোগের বিপরীতে সাহস করেই বলতে পারি আমি অপরাধী নই অভিযোগের সাথে দূরতম সম্পর্কও নেই আমার। কিন্তু ব্যক্তিজীবনে আল্লাহর আদেশ নিষেধ পালন, রাসূল সা.-এর অনুসরণ, শিরকমুক্ত জীবনগঠন, ফরজ ওয়াজিব হালাল হারাম মেনে চলা, কবিরা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা, অন্যের হক ও অধিকার ক্ষুন্ন না করা, এসব প্রশ্নে যখন নিজেকে নিজেই কাঠগড়ায় দাঁড় করাই, তখন গানের লাইনগুলো নিজ অনুভূতিকে প্রচণ্ড নাড়া দেয়। নিজের কৃতকর্মের অনুশোচনায় মহান আল্লাহ তায়ালাকে ডেকে বারবার পানাহ চাই। জানা অজানা, সগিরা (ছোট) কবিরা (বড়) গোনাহ পাপের জন্য কায়মনোবাক্যে নিবেদন করি অসীম দয়াময় আল্লাহর কাছে। মানুষ যখন পাপমোচনের তাগাদা অনুভব করে তখন নিজেকে সঁপে দিয়ে মহান আল্লাহ তায়ালার কাছেই নিবেদন করে। কারণ মানুষের যত চাওয়া সব নিবেদনের জায়গাদাতা একমাত্র আল্লাহরই নিকট। আবার মানুষ যখন বিপদ আপদ মুসিবতে পতিত হয় তখনও উত্তরণের জন্য আল্লাহর কাছেই ধরনা দেয়। পাপমোচন, বিপদ আপদ কিংবা মুসিবত ছাড়াও মানুষের যেকোনো চাহিদা পূরণের প্রত্যাশায় মানুষ দু’হাত তুলে আল্লাহর নিকটই প্রার্থনা করে। মানুষ যে আল্লাহর কাছেই চাইবে কিংবা তার সকল চাহিদা যে আল্লাহকেই জানাবে এবং তাতে আল্লাহ সাড়া দিবেন সেটিও আল্লাহই আমাদের বলে দিয়েছেন। কুরআনুল কারিমে এসেছে “তোমাদের প্রভু বলেছেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকের (দোয়ার) জবাব দেবো (দোয়া কবুল করবো)। (সূরা মুমিন : ৬০)
বিস্তারিত