রাসূল সা. কর্তৃক নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা ও পাশ্চাত্যের নারীবাদ - শামসুন্নাহার নিজামী

কোনো কিছু বুঝতে হলে তার বিপরীত চিত্র বোঝা বা জানা জরুরি। রাতের অন্ধকারের পরে যখন প্রভাতের সূর্য উদিত হয় তখন আলো-আঁধারির পার্থক্য চোখে পড়ে। তেমনই ইসলামে দেওয়া নারী অধিকার বা মর্যাদা তথা রাসূল সা. কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত নারী অধিকার বোঝার জন্য পাশ্চাত্যের নারীদের দিকে দৃষ্টি ফেরাতে হবে। পাশ্চাত্যের নারী অধিকার, নারী ক্ষমতায়ন, নারী স্বাধীনতা বরাবরই এক শ্রেণির মানুষের কাছে অত্যন্ত লোভনীয় বিষয়।

বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস ২০২৩

GROW FOOD, NOT TOBACCO "খাদ্য ফলান, তামাক নয়" প্রতিপাদ্য কে সামনে রেখে পালিত হচ্ছে এবারের বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস। আসুন নিজেরা সচেতন হই, প্রিয় মানুষদের সচেতন করি।

সালাত মানবিক সংস্কৃতির আলোকিত অধ্যায় - ড. মাহফুজুর রহমান আখন্দ

সালাত মুমিন জীবনে একটি অপরিহার্য ইবাদত। ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র, ইহকালীন ও পরকালীন জীবনে মুক্তির অন্যতম প্রধান সোপান এটি। সালাত আদায়ের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তায়ালার সাথে বান্দার গভীর সম্পর্ক সৃষ্টি হয়। বিচ্ছুরিত হয় মানবিক সংস্কৃতির বিশুদ্ধ আলো। নামাজের আরবি শব্দ সালাত। সালাত শব্দের শাব্দিক অর্থ দরূদ বা শুভকামনা করা, তাসবিহ বা পবিত্রতা বর্ণনা, রহমত বা দয়া, করুণা কামনা করা, ইস্তেগফার বা ক্ষমা প্রার্থনা করা। তা ছাড়া কথা এবং স্থান, কাল পাত্র ভেদে সালাত বিভিন্ন অর্থে ব্যবহার হয়ে থাকে। সালাতের পারিভাষিক অর্থ হচ্ছে- ‘নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে নির্দিষ্ট ইবাদত আদায় করার নাম সালাত’। সুস্থ, বিবেকবান, বুদ্ধিসম্পন্ন, শারীরিক দিক দিয়ে যোগ্যতাসম্পন্ন ব্যক্তিগণের ওপর সালাত আদায় করা অপরিহার্য। যারা পবিত্র আমেজ ও আবেগ-অনুভূতিতে জগতের সীমানা ভেদ করে আরশে আজিমে সিজদাহ পৌঁছাতে পারে, তারাই সালাতকে প্রাণবন্ত বা জীবন্ত করে তুলতে পারে। এমন নামাজই মানুষের চিন্তা-চেতনা ও ঈমানি জীবনকে পূর্ণতা দান করেন। যখন কোনো নামাজি ব্যক্তির জীবন থেকে এক ওয়াক্ত সালাত ক্বাজা হয়, তখন তার জীবনে শূন্যতা বোধ হয়। এই শূন্যতা তার মাঝে সৃষ্টি করে চরম মানসিক দুশ্চিন্তা। জামায়াতের সাথে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে পারলে মানসিক পরিতৃপ্তি আসে। এটাই ঈমান, এটাই বিশ্বাস, আত্মজিজ্ঞাসার জবাব। প্রকৃত আত্মজিজ্ঞাসার জবাব হলো আল্লাহর অস্তিত্বকে বিশ্বাস করা। এই বিশ্বাস একমাত্র সালাতের মাধ্যমে অর্জন করা সম্ভব। আর সালাতই হলো মানবিক সংস্কৃতি বিকাশের প্রধানতম সিঁড়ি।

সময় এখন ‘ইসলামফোবিয়া’ প্রতিহত করার -রাশেদুল ইসলাম

প্রতিবাদের ভাষা সবসময় একরকম হয় না। মুখের ভাষায় কিংবা রাস্তায় বিভিন্নভাবে অবস্থান করার মাধ্যমে স্বাধীন দেশে মানুষ তার স্বাধীন মত প্রকাশ করবে, এটা আবহমানকাল থেকে বাংলার রীতি ছিলো। বিশেষ করে বাকশাল পরবর্তী বাংলাদেশে মানুষ স্বাধীনতার স্বাদ পেতে শুরু করেছিলো। নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয় হলে স্বাধীনতার সূর্য নতুন ধারায় অস্তমিত হতে শুরু করে। ইংরেজদের কাছে রাজসিংহাসনের কতিপয় আত্মবিস্মৃত গুরুত্বপূর্ণ নেতার পদস্খলনের মাধ্যমে নবাব সিরাজউদ্দৌলার পরাজয় পরবর্তী পরাধীন জীবনের সাথে আজকের বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ সরকারের তুলনা করা একটু কঠিন। জাতীয় জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো সিনিয়র সিটিজেনদের মধ্যে যারা উচ্চশিক্ষিত। এই শ্রেণির মানুষদের চিন্তাধারার ওপর সবসময় সাধারণ মানুষ আস্থাশীল থাকে। দুঃখজনকভাবে সত্য ঘটনা হচ্ছে, এই বুদ্ধিজীবী শ্রেণির সুশীলসমাজের অধিকাংশই আজকে ইচ্ছে করে হোক অথবা বাধ্য হয়ে ক্ষমতাসীন সরকারের আজ্ঞাবহ হয়ে কথা বলেন, মত প্রকাশ করেন এবং থিওরি ছাড়েন। ফলশ্রুতিতে সত্য চর্চাকারী সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ এই সিনিয়র সিটিজেনদের সার্বিক সাপোর্ট পাওয়া সরকার পাকাপোক্ত হয়ে যা ইচ্ছে তা-ই করতে থাকে। হয়েছেও তাই। বিপরীতে সত্যপন্থী সাধারণ মানুষ প্রতিবাদে মুখর হতে যেহেতু বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন, তাই তারা মৌন থেকেই আজ প্রতিবাদ করছেন।

নৈতিক মূল্যবোধের অবক্ষয়: আমাদের করণীয়

অন্তহীন সমস্যায় জর্জরিত আজকের বিশ্ব, মানবতা আজ বিপর্যস্ত। পৃথিবীর সর্বত্রই বিরাজ করছে অশান্তি, অরাজকতা; জুলুম-শোষণে নিষ্পেষিত হচ্ছে আজ বিশ্বমানবতা। চারিত্রিক চরম বিপর্যয় ও মূল্যবোধের অবক্ষয় আজ মানবজীবনকে কুরে কুরে খাচ্ছে। চতুর্দিকে চলছে ব্যক্তিগত, জাতিগত প্রাধান্যের তীব্র প্রতিযোগিতা। ফলে যুদ্ধ-সংঘর্ষ, প্রতিশোধ স্পৃহা আজ চরম আকার ধারণ করেছে।

সাফল্যের সন্ধানে

জীবনে সবাই সাফল্য অর্জন করতে চায়, সফল হতে চায়। সাফল্যের জন্য হন্যে হয়ে ছুটেও বেড়ায়। সাফল্য অর্জনের উপায় কী, তা তাদেরকে হাতরে ফিরতে দেখা যায় অহরহ। সবাই সাফল্য লাভের একই লক্ষ্য নিয়ে ছুটলেও সবাই একই দিকে ছুটে না। যে যেটাকে সাফল্য বলে মনে করে, সেদিকেই হয় তার চলার রোখ; মানুষ সাফল্য বলতে যা বুঝে, সে অনুসারেই সে পথ চলে। তবে প্রচেষ্টা শেষে সবাই কিন্তু সাফল্যের সাক্ষাৎ পায় না। যার মূল কারণ হচ্ছে, সবাই আসলে সঠিক লক্ষ্যটাই নির্ধারণই করতে পারে না।

শাহরু রমাদান সম্ভাবনা অফুরান

শাহরু রমাদান সম্ভাবনা অফুরান। বছর ঘুরে আবার এলো মাহে রমজান। মাহে রমজান মুসলিম জাতির প্রতি মহান আল্লাহর সীমাহীন অনুকম্পা ও অসীম অনুদানের এক অনন্ত নজির। রহমত, মাগফিরাত ও নাজাতের বার্তা নিয়ে পবিত্র মাহে রমজান আমাদের নিকট সমাগত। রাসূলুল্লাহ (সা) এ মাসকে ‘শাহরুন মোবারক’ তথা ‘বরকতময় মাস’ বলে অভিহিত করেছেন। প্রত্যেক মুসলমান রমজান মাসের আগমনে আনন্দিত হয়। যখন রমজানের আগমন হতো, তখন মহানবী (সা.)ও অনেক আনন্দিত হতেন। রমজানের শুরুতে তিনি বিশেষ খুতবা দিতেন। তিনি বলতেন, ‘তোমাদের কাছে বরকতময় মাস রমজান এসে গেছে। এ মাসে আল্লাহ তোমাদের জন্য রোজা ফরজ করেছেন। এ মাসে আকাশের দ্বারগুলো খুলে দেওয়া হয়। বন্ধ করে দেওয়া হয় জাহান্নামের দরজাগুলো। অভিশপ্ত শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হয়। এ মাসে রয়েছে একটি রাত, যা হাজার রাতের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যে ব্যক্তি এর কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো, সে সমূহ কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হলো। ’ (নাসায়ি)

মাহে রমজান: চির বিপ্লবের সেরা মাস

রমযান মাস সিয়াম সাধনা ও তাকওয়ার মাস, কল্যাণ ও বরকতের মাস, রহমত ও মাগফিরাত এবং জাহান্নামের অগ্নি থেকে মুক্তি লাভের মাস। মহান আল্লাহ এ মাসটিকে বহু ফযীলত ও মর্যাদা দিয়ে অভিষিক্ত করেছেন। মাহে রমযান মুমিনদের আত্মগঠন ও প্রশিক্ষণের জন্য এক অনন্য সেরা মাস। এ মাসের একটি ফরজ ইবাদাত অন্য মাসের ৭০টি ফরজ ইবাদাতের সমান। রমযান মাস আমাদের জন্যে বাৎসরিক প্রশিক্ষণের মাস। এ মাসে আছে সাহরী, ইফতার, তারাবীহ, ইতিকাফ, লইলাতুল কদর, ফিতরা ও ঈদুল ফিতর। কুরআন নাজিল হয়েছে এ মাসের লাইলাতুল কদরে, সংঘটিত হয়েছে ইসলামের প্রথম যুদ্ধ বদর ও বিজয় হয়েছে পবিত্র মক্কা। কাজেই আত্মগঠন ও বিজয়ের মাস রমযান। মাহে রমযান ইসলামের আদর্শকে সর্বস্তরের জনগণের কাছে পৌছানোর এক সুবর্ণ সুযোগ। দীর্ঘ ১১টি মাস অতিক্রম করে প্রতি বছর এ পবিত্র মাস মুসলিম উম্মাহর কাছে হাজির হয় অজস্র-অফুরন্ত রহমত ও কল্যাণের বার্তা নিয়ে। মুসলিম মিল্লাতের জন্য রহমতস্বরূপ এ মাসটি আতœগঠন, নৈতিক উন্নতি, চারিত্রিক দৃঢ়তা, পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর সমাজ গঠন এবং সামাজিক সাম্যের নিশ্চয়তা বিধানের এক অনন্য সুযোগ।

ঐতিহাসিক ১১মে কুরআনের কর্মীদের প্রেরনার উৎস

একবার মহাকবি ড. মুহাম্মদ ইকবালের নিকট একজন বন্ধু জিজ্ঞাসা করলেন- বন্ধু তুমিতো অনেক বই পড়েছ, আচ্ছা এসব বইয়ের মধ্যে তোমার কাছে সবচেয়ে ভাল লেগেছে কোন বইটি? কবি বললেন- বন্ধু একটু বসো আমি ভিতরের রুম থেকে আসছি। কবি যখন ভিতরের রুম থেকে বেরিয়ে আসলেন তখন তাঁর হাতে একটি বই, বইটি বন্ধুর হাতে দিলেন। বন্ধু যখন তা খুললেন দেখলেন এই বই আর অন্য কোন বই নয়, এটা হলো আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রেরিত মহাগ্রন্থ আল কুরআন।

'শৃঙ্খলা ও পরিচ্ছন্নতা' জীবন-সৌন্দর্যের নান্দনিক প্রতিচ্ছবি

শৃঙ্খলা এবং পরিচ্ছন্নতা মানবজীবন পরিচালনার গুরুত্বপূর্ণ দু’টি উপাদান। এ দু’টি উপাদান জীবনকে সুন্দর করে, পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখে, শৃঙ্খলিত রাখে, পবিত্র রাখে। সুন্দর এবং কল্যাণময় শান্তিপূর্ণ জীবনের জন্য যেমন শৃঙ্খলা প্রয়োজন তেমনি সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্যও প্রয়োজন পরিচ্ছন্নতা। প্রচলিত একটি কথা আছে তাহলো শৃঙ্খলাই শৃঙ্খলমুক্তির পথ। আরেকটি কথাও বর্তমানে খুব প্রচলিত, শৃঙ্খলাই জীবন। আসুন আমরা সুশৃঙ্খল জীবনের অধিকারী হই। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন নান্দনিক সুন্দর এক জীবন গড়ি। মহান আল্লাহ আমাদের তাওফিক দিন। আমিন।