রমাদান পরবর্তী এগারো মাসে করণীয় -মুহাদ্দিস ডক্টর এনামুল হক

রমাদানের পরে আরবি বর্ষপঞ্জির দশম মাস শাওয়াল। এটি হজের তিন মাস তথা শাওয়াল, জিলকদ ও জিলহজের মধ্যে প্রথম মাস। এ মাসের প্রথম তারিখে রমাদানের বা ঈদুল ফিতর এবং সাদাকাতুল ফিতর আদায় করা ওয়াজিব। রমাদান-উত্তর ঈদুল ফিতর, সাদাকাতুল ফিতর, হজের সংশ্লিষ্টতাসহ এ মাসটি তার অবস্থান ও মর্যাদার কারণে ইসলামী জীবনব্যবস্থায় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। রমাদানে মাসব্যাপী যারা সিয়াম সাধনা করেছেন তাদের জন্য এ মাসে বাড়তি সুসংবাদ রয়েছে। তা হলো শাওয়াল মাসের ৬টি সিয়াম। সহীহ হাদিসে এসেছে, আবু আইয়ুব আনসারী রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে নর-নারী রমাদান মাসে সিয়াম পালন করলো, তারপর শাওয়াল মাসে ছয় দিন সিয়াম পালন করলো, সে যেন সারা বছর সিয়াম পালন করলো। (মুসলিম-২৮১৫, তিরমিজি-৭৫৯)। ভালো ও মন্দ কর্মের প্রতিদান প্রসঙ্গে আল্লাহ তায়ালা বলেন, “যে ব্যক্তি একটি সৎকাজ করবে, তাকে দশগুণ প্রতিদান দেয়া হবে। পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি একটি পাপ করবে, তাকে শুধু এক পাপের সমান বদলা দেয়া হবে। বস্তুত তাদের প্রতি জুলুম করা হবে না।” (সূরা আনআম : ১৬০) উক্ত আয়াতে প্রত্যেক সৎকাজের প্রতিদান দশগুণ দেয়ার কথা বলা হয়েছে, যদিও তা সর্বনিম্ন পরিমাণ। আল্লাহ তায়ালা স্বীয় কৃপায় আরো বেশি দিতে পারেন।

পরকালীন সফলতাই প্রকৃত সফলতা

সফলতা কে না চায়? সুস্থ বিবেকসম্পন্ন প্রতিটি মানুষই সফল হতে চায় আপন কর্মে আপন ক্ষেত্রে। যেখানেই সে বিচরণ করে, সেখানেই সফলতা অর্জন করতে চায়। এ সফলতা ব্যক্তি, ক্ষেত্র, লক্ষ্যভেদে ভিন্ন ভিন্ন হয়ে থাকে। সফলতা অর্জনে দু’ধরনের ভিন্নতা লক্ষ করা যায়। একটি হলো ব্যক্তিগত সফলতা আর অপরটি হলো সমষ্টিগত বা দলগত সফলতা। সফলতা অর্জনের জন্য মানুষ বহুভাবে চেষ্টা করে থাকে। মেধা, শ্রম, সময়, সম্পদ সবকিছুই মানুষ সাফল্য অর্জনে বিনিয়োগ করে। কিন্তু যে সাফল্য অর্জনের পেছনে মানুষের এতো চেষ্টা-প্রচেষ্টা সেই সফলতার ক্ষেত্রে মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির ব্যাপক পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। সমাজের বেশির ভাগ মানুষই সাফল্য অর্জনের সময় এবং ক্ষেত্র শুধু দুনিয়ার দৃষ্টিকোণ থেকেই বিবেচনা করে। অথচ প্রতিটি মানুষই মরণশীল, মৃত্যুর পরেও একটি জীবন আছে, যে জীবন অনন্তকালের। সে জীবন সম্পর্কে জেনেও পরকালীন সফলতার হিসাব কেউ করে না। ক্ষণস্থায়ী জিন্দেগির জন্য মানুষ যতটা না সময় শ্রম অর্থ ব্যয় করে তার সিকিভাগও যদি মানুষ পরকালীন সফলতার জন্য ব্যয় করতো তাহলে মানুষের ইহকালীন সফলতার পাশাপাশি পরকালীন সফলতাও নিশ্চিত করা যেত। কারণ পরকালীন সফলতাই প্রকৃত সফলতা।

মৌসুমী মুসল্লীঃ প্রেক্ষিত রমজান

রাসূলে করীম (সঃ) হাদীসে ঈমানের ব্যাপারে বলেছেন-ঈমানের সমষ্টি হলো “মুখে স্বীকার, অন্তরে বিশ্বাস এবং বাস্তবে আমল।” এ বিষয়গুলো সবারই জানা । অন্য একটি হাদীসে তিনি বলেন - “যে ব্যক্তি আল্লাহ কে প্রভু,ইসলাম কে দ্বীন এবং মুহাম্মদ (সঃ) কে রাসূল হিসাবে মেনে নেয় তারা তাদের ঈমানকে পূর্ণ করে নিল” । ঈমানের আরও ব্যাখ্যা কুরআনের সূরা মায়েদার ৫৪ এবং সুরা আহযাবের ৬৯ নং আয়াতে বর্ণনা করা হয়েছে ।