নৈতিকতার সর্বোচ্চ মানদন্ডে নিজেদেরকে উপনীত করতে হবে
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, নৈতিক অবক্ষয় রাষ্ট্র ও সমাজে মহামারি আকার ধারণ করেছে। নৈতিক অধঃপতনের কারণে জাতিকে একের পর এক বিভৎস চিত্র দেখতে হচ্ছে। এই অশুভ প্রলয় থেকে সমাজের মানুষদেরকে পরিবর্তন করতে হলে ছাত্রশিবিরের সদস্যদেরকে নৈতিকতার সর্বোচ্চ মানদন্ডে নিজেদেরকে উপনীত করতে হবে।
তিনি আজ চট্টগ্রামের এক মিলনায়তনে চট্রগ্রাম মহানগরী উওর শাখার সদস্য শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মহানগরী সভাপতি আহমেদ সাদমান সালেহএর সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি আ স ম রায়হানের পরিচালনায় শিক্ষাশিবিরের বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক সালাউদ্দিন আউয়ুবী, সাবেক কেন্দ্রীয় কলেজ সম্পাদক মুহাম্মদ মহিউদ্দিনসহ মহানগরীর বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
শিবির সভাপতি বলেন, বর্তমান সমাজের সর্বত্র অনৈতিকতার ছড়াছড়ি। রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যক্তিরা অনৈতিক কর্মকান্ডে জড়িত। ফলে সমাজে নীতির চর্চা আজ নেই বললেই চলে। গোটা জাতি আজ নৈতিক পদস্খলনের দিকে ধাবিত হচ্ছে। নৈতিক অবক্ষয় মানুষের সামাজিক ও পারিবারিক নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। একের পর এক এমন লোমহর্ষক ঘটনা দেখে জাতি শিউরে উঠছে। ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের গুলিতে মায়ের পেটের বাচ্চা ঝাঝড়া হয়েছে, একই সংগঠনের নেতা বদরুল কর্তৃক ছাত্রী খাদিজাকে প্রকাশ্যে চাপাতি দিয়ে কুপানো, শরীয়তপুরে ছাত্রলীগ নেতা আরিফ কর্তৃক ৬ নারীকে ধর্ষণের পর ভিডিও ধারণ ও প্রকাশসহ নানা লোমহর্ষক ঘটনায় শান্তিকামী মানুষ চমকে উঠেছে। তাছাড়াও তিন বছরের শিশু থেকে ৯২ বছরের বৃদ্ধা পর্যন্ত এদেশে ধর্ষণের শিকার হচ্ছে। ধর্ষণ এখন মহামারিতে রুপ নিয়েছে। অন্যদিকে সন্তানরা তার গর্ভধারিণী মাকে হত্যা করছে আবার মা শিশুকে নির্মম ভাবে হত্যা করছে। বাবাকে কুপিয়ে হত্যা করছে তার সন্তানরা। স্কুলগামী ছাত্ররা বিভিন্ন অনৈতিক কাজে জড়িত হচ্ছে। কখনো সন্তানের জন্য প্রশ্নপত্র সংগ্রহ করছে বাবা, সে প্রশ্ন দিয়ে সন্তানকে নকলে সহায়তা করে অনৈতিকতায় সহায়তা করছেন। ছাত্ররা নকলের দাবীতে শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করছে। আগামী দিনের তরুণ প্রজন্ম অল্প বয়সেই নেশা ও অনৈতিকতায় পা দিচ্ছে। যে বয়সে যুবকদের হাতে কুরআন থাকার কথা, কুরআনের আলোকে নিজ ও সমাজকে গঠনে এগিয়ে যাওয়ার কথা সেই সময়ে তাদের নৈতিক অবক্ষয়ের মাধ্যমে দেশ ও সমাজ ক্রমেই অশান্তিপূর্ণ এবং অস্থিতিশীল হয়ে যাচ্ছে।সমাজের সর্বস্তরে অনৈতিকতা ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। যা নিয়ে অভিভাবক ও শান্তি প্রিয় মানুষ দারুণ ভাবে উদ্বিগ্ন।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলে, ইসলামী আন্দোলনের কর্মী হিসেবে আমাদের প্রত্যেককে নৈতিকতার ক্ষেত্রে আপোষহীন হতে হবে। সাহাবা আজমাইনের মত প্রতিটি কাজে ও কর্মে নিজেদেরকে সমাজের মানুষদের কাছে পেশ করতে হবে। যে কোন মূল্যে অনৈতিকতার জোয়ার রুখে দিতে হবে। অনৈতিকতার বিপরীতে আমাদের কাজকে আরও গতিশীল করতে হবে। প্রতিটি ছাত্রকে কুরআনের আলোকে গড়ে তোলার জন্য সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। ক্যারিয়ার বিধ্বংসী প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে ছাত্রসমাজকে সচেতন করতে হবে। অনৈতিক পথে পা না বাড়িয়ে মেধার লালনে তাদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। নিজেদের মধ্যে কুরআন চর্চা আরও বাড়াতে হবে। আমাদের নৈতিক শক্তির মাধ্যমে অপসংস্কৃতিকে দূর করতে হবে। ছাত্রশিবির দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে নৈতিক শিক্ষা ছাড়া সামাজিক অবক্ষয় রোধ করা সম্ভব নয় এবং ছাত্রশিবির সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করে যাচ্ছে।
সংশ্লিষ্ট
- কারাগারে আল্লামা সাঈদীকে যেমন দেখেছি
- এ আকাশ মেঘে ঢাকা রবেনা
- মুমিনের কোনো দিন পরাজয় নেই
- চারিত্রিক দৃঢ়তা বয়ে আনে সফলতা
- পরিচ্ছন্ন থাকতে চাই শুধু সদিচ্ছা
- পরকালীন সফলতাই প্রকৃত সফলতা
- আল্লাহর প্রতিশ্রুতি পূরণে মুমিনের করণীয়
- রাষ্ট্র বা সমাজ পরিচালনায় প্রয়োজন নৈতিকতাসম্পন্ন, দক্ষ ও পেশাগত নেতৃত্ব
- চেতনায় ২৮ শে অক্টোবর
- আধুনিক ব্যবস্থাপনায় দাওয়াতি কাজের কৌশল