বৃহস্পতিবার, ০৬ জুলাই ২০১৭

আতাউর রহমান সরকার

আত্মার আত্মীয় ইবনুল ইসলাম পারভেজের শাহাদাৎ বার্ষিকী।

গতকাল ছিলো শহীদি জনপদ ঝিনাইদহের ছাত্র আন্দোলনের সিপাহশালার আমাদের আত্মার আত্মীয় ইবনুল ইসলাম পারভেজের শাহাদাৎ বার্ষিকী। মহান আল্লাহ্‌র ডাকে সাড়া দিয়ে ভাইটি চলে গেছে আমাদের থেকে অনেক দূরে। আর ফিরে আসবেনা কোন দিন।

২০০৯ সালে দায়িত্ব পালনের সুবাদে ভাইটির সাথে পরিচয় ও সখ্যতা। সে ছিল স্কুল বিভাগের সভাপতি। কেন্দ্রের বিভাগীয় সম্পাদক হিসেবে ফোনে যোগাযোগ হতো। স্কুল দায়িত্বশীলদের নিয়ে শিক্ষাবৈঠকে সফরে গিয়ে ভাইটিকে সরাসরি দেখার সুযোগ হয়েছিল।প্রাণচাঞ্চল্য পরিবেশ সৃষ্টি, দ্বীনি পরিবেশ সংরক্ষণ ও মেধা এবং নেতৃত্বে ভাইয়াটিকে সম্ভাবনাময় মনে হয়েছিল আমাদের কাছে। সত্যিই সকলের প্রত্যাশা অনুযায়ী ভাইটি সেভাবেই তৈরি হয়েছিল।

২০১০ সালেই ঝিনাইদহের আরেক শহীদ জহুরুল ইসলাম ভাইকে সভাপতি নির্বাচিত ও পারভেজকে সেক্রেটারি মনোনিত করেছিল সদস্য ও সাথীরা। সংগঠনকে তার অভিষ্ট লক্ষে এগিয়ে নেয়া ও আওয়ামী জুলুমের বিরুদ্ধে লড়াই সংগ্রামে এই ২জনই ছিলো অগ্রসেনানি। মানবতার মুক্তির আন্দোলনে পারভেজ পরবর্তী সময়ে অনেক বড় দায়িত্ব পালন করে গেছে। শহর সভাপতি দায়িত্ব পালন শেষে কেন্দ্রীয় সহকারী সাহিত্য সম্পাদক পালন অবস্থায় জালিমের বুলেটের আঘাতে শাহাদাৎ বরণ করেছেন। পারভেজ ঢাকায় আসার পর আমার সাথে দায়িত্ব পালনের জন্য ও ভালোবাসার কারণে যোগাযোগ রাখতো। ফোন দেয়া ও সরাসরি সাক্ষাৎ করতো। ছাত্র সংবাদে লেখা দেয়ার জন্য আমাকে ব্যতিব্যস্ত করতো নিয়মিত। ২০১৬ সালের ৮মে আমি আটক হই। এরপূর্বে আমাকে চাপ দিয়ে "ইসলামে মানব মর্যাদা" শিরোনামে একটি লেখা পারভেজ আমার কাছ থেকে লেখিয়ে নেন। যা জুলাই মাসে ছাপা হয়। তখন আমি কারারুদ্ধ। সেখানে থাকা অবস্থায় ভাইটিকে প্রথমে গুম করা ও পরবর্তীতে গুলি করার খবর পাই। অনেক কষ্ট পেয়েছিলাম সেদিন আমরা। মহান আল্লাহ্‌র কাছে দুহাত তুলে দোয়া করা ছাড়া আমাদের কিছু করার ছিলনা। তার হত্যার প্রতিবাদে আয়োজিত মিছিলেও সেদিন থাকার সুযোগ হয়নি। নিজেকে বড় স্বার্থপর মনে হয়েছিল।

পারভেজ আমাদের সামনে দৃশ্যমান নেই।কিন্তু তার রেখে যাওয়া শহীদি কাফেলা রয়েছে। রয়েছে আদর্শ। মহান আল্লাহ্‌ ভাইটিকে জান্নাতের সর্ব্বোচ্চ আসনে আসীন করুন। জীবনের যাবতীয় গুনাহ মাফ করে দিন। ঝিনাইদের মজলুম মানুষগুলোকে ইসলামের জন্য কবুল করুন।

সংশ্লিষ্ট