বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে -শিবির সেক্রেটারি জেনারেল
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, অব্যাহত বিকৃতিতে বাংলা ভাষা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। সর্বস্তরে মাতৃভাষা প্রচলণের নিদের্শনা আজো কাগজেই সীমাবদ্ধ হয়ে আছে। আর ভিনদেশী ভাষার আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সরকারের ভূমিকা রহস্যজনক। তাই বাংলা ভাষার বিকৃতি রোধে কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে।
তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পশ্চিম আয়োজিত শিক্ষা উপকরণ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন। মহানগরী সভাপতি আব্দুল আলিমের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় স্পোর্টস সম্পাদক সরওয়ার কামাল, মহানগরী সেক্রেটারি যোবাইর হোসেন রাজনসহ মহানগরী নেতৃবৃন্দ।
তিনি বলেন, ভাষার বিকৃতি ক্রমশ বাড়ছেই। এর সাথে আর্থসামাজিক ব্যবস্থার পরিবর্তন, রাজনৈতিক দূরদর্শিতার অভাব, শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিসহ আরও অনেক বিষয় সম্পৃক্ত। এ ছাড়া সিনেমা নাটকে বিকৃত ভাষার ব্যবহার, সম্প্রচার মাধ্যমে প্রচারিত কিছু বিজ্ঞাপনের সংলাপ ভাষা বিকৃতির কারণ সমূহের অন্যতম। পার্শবর্তী দেশের টিভি চ্যানেলের অবাধ সম্প্রচারের মাধ্যমে সাংস্কৃতিক আগ্রাসন চালালেও সরকার এ ব্যাপারে রহস্যজনক ভাবে নীরব। জাতীয় সংসদেও কথা বলার সময় অনেকেই শুদ্ধ বাংলা উচ্চারণে কথা বলেন না। এভাবেই বিভিন্ন পর্যায়ে ধাপে ধাপে বিকৃতির ফলে বাংলা ভাষা তার স্বকীয়তা হারাচ্ছে। এ ব্যাপারে সরকার কার্যকর কোন উদ্যোগ নিচ্ছে না। এ জন্য উচ্চ আদালতের নিদের্শনা থাকলেও সরকার তা মানছে না।
শিবির সেক্রেটারি আরও বলেন, স্বাধীনতার এতো বছর পরও সর্বস্তরে মাতৃভাষা আজ উপেক্ষিত। ভাষার জন্য জীবন দিয়েও আমরা মাতৃভাষাকে যথার্থ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠা করতে পারিনি। এখনো বাংলাকে রাষ্ট্রের সকল বিভাগে চালু করা সম্ভব হয়নি। দেশের সর্বোচ্চ আদালত ও উচ্চ শিক্ষায় বাংলা ভাষা এখনো উপেক্ষিত। রাষ্ট্রের সকল স্তরে মাতৃভাষা চালুর জন্য বার বার গণদাবি উঠলেও স্বাধীনতার পর থেকে প্রতিটি সরকারই তা অবহেলা করে আসছে। ভাষার মাস এলে ক্ষমতাসীনরা বাংলার মর্যাদা নিয়ে উচ্চবাচ্য করলেও রাষ্ট্রীয় অবহেলা ও দীর্ঘকালের পরিক্রমায় মহান একুশের চেতনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ছড়িয়ে দিতে ব্যর্থ হয়েছে শাসক গোষ্ঠি। কিন্তু এ অবস্থার পরিবর্তন জরুরী। বিকৃতির বলয় থেকে বাংলা ভাষাকে রক্ষা করতে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। মাতৃভাষার প্রতি অবহেলা রোধ, সর্বস্তরে বাংলা চালু এবং প্রিয় ভাষার মর্যাদা রক্ষায় বাংলা ভাষার বিকাশ সাধনে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে।এ সময় তিনি মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে কর্মসূচি ঘোষনা করেন।
তিনি আরো বলেন আগামী ২১ ফেব্রুয়ারী ঐতিহাসিক আর্ন্তজাতিক মাতৃভাষা দিবস। জাতীয় জীবনে দিবসটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দিবসটির গুরুত্ব উপলব্ধি করে কেন্দ্রীয় সংগঠন প্রতিবারের ন্যায় যথাযোগ্য মর্যাদায় তা পালনের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিম্নোক্ত কর্মসূচী ঘোষণা করেছে।
কর্মসূচী:-
১. আলোচনা সভা ও র্যালী (শাখা/উপজেলা/ওয়ার্ড পর্যায়ে)
২. রচনা প্রতিযোগিতা, কুইজ প্রতিযোগিতা, বিতর্ক প্রতিযোগিতা ও বিভিন্ন টুর্নামেন্টের আয়োজন
৩. ভাষা শহীদদের পরিবারের সাথে মতবিনিময়
৪. ভাষা সৈনিক সংবর্ধনা॥
৫. বই পাঠ প্রতিযোগিতা।
৬. ভাষা শহীদদের কবর যিয়ারত
৭. নিরক্ষরদের অক্ষর জ্ঞান দানের উদ্যোগ গ্রহণ করা
৮. ফ্রি ব্লাড গ্রুপিং ও রক্তদান কর্মসূচি
৯. দোয়া অনুষ্ঠান।