এক নজরে
শহীদ মুহাম্মদ সেলিম রেজা
মোজাম্মেল হক
কুলসুম বেগম
নভেম্বর ৩০, -০০০১
৬ ভাই, ১ বোন
আরামবাগ, রাজারামপুর, নাবাবগঞ্জ
কর্মী
৮ম শ্রেণী, শংকরবাটি উচ্চ বিদ্যালয়
চাঁপাইনবাবগঞ্জ
১৯৮৫ সালে ভারতের কলকাতা হাইকোর্টে কুরআন বাজেয়াপ্ত করার জন্য মামলা দায়ের হয়। এতে সারা বিশ্ব প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। ভারতের মুসলিমবিদ্বেষী এই ঘটনার প্রতিবাদে বাংলাদেশে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। ১১ মে দেশব্যাপী প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এমনি এক মিছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জে অনুষ্ঠিত হয়। সেই মিছিলে কুরআনবিদ্বেষী খুনি ম্যাজিস্ট্রেট ওয়াহিদুজ্জামান মোল্লা নির্দেশে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালায়। গুলিতে আটজন শাহদাতবরণ করেন। এর মধ্যে পাঁচজনই ছিলো ছাত্র।
দুনিয়ার সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি ‘মানুষ’। সেই মানুষদের মধ্যে সর্বোত্তম একজন শহীদ মুহাম্মদ সেলিম, যিনি আল-কুরআনের আহ্বানে সাড়া দিয়ে নিজের জান কুরবানি করেছিলেন মানুষের মুক্তির জন্য।
জন্ম ও বংশ পরিচয়
মহানন্দা নদীর তীরঘেঁষা চাঁপাইনবাবগঞ্জের আরামবাগ গ্রামে বাংলাদেশের আর দশটি সাধারণ পরিবারের মতো একটিতে ১৯৭০ সালে জন্মগ্রহণ করেন শহীদ সেলিম। তাঁর পুরো নাম মোহাম্মদ সেলিম রেজা। মায়ের নাম কুলসুম বেগম, বাবার নাম মোজাম্মেল হক। ৬ ভাই ও ১ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়।
শিক্ষাজীবন
গ্রামের মক্তব দিয়ে তাঁর শিক্ষাজীবনের শুরু। পাঁচ বছর বয়সে তাঁকে আইজারপুর সরকারি প্রাইমারি স্কুলে ভর্তি করা হয়। পরে তিনি শংকরবাটি নিম্নমাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ষষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হন। মেধাবী ছাত্র সেলিম ক্লাসের প্রতি পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করতেন।
ব্যক্তিজীবন
একজন চরিত্রবান মেধাবী ছাত্র হওয়ায় প্রধান শিক্ষক থেকে শুরু করে সকল শিক্ষক সেলিমকে খুব স্নেহ করতেন। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী সেলিমের বুকে ছিল অসীম সাহস। মানুষের বিপদে বন্ধু হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তেন। বিপদগ্রস্ত মানুষের হাহাকার তাঁকে ব্যথিত করে তুলতো। শরীর স্বাস্থ্যের ভালোমত যত্ন নিতেন। একজন ফুটবলার হিসেবে তাঁর বিশেষ খ্যাতি ছিল। স্কুলের বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতেন। তিনি পড়াশোনা ও খেলাধুলার পাশাপাশি ধর্মীয় কাজের ব্যাপারে উদ্বুদ্ধ ছিলেন।
সংগঠনে আগমন
কুরআন-হাদিসের আলোচনায় একনিষ্ঠ শ্রোতা ছিলেন শহীদ মুহাম্মদ সেলিম। এমনই এক আলোচনা সভা থেকে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি শহীদি কাফেলার সহযাত্রী হন। নিজেকে কর্মীপর্যায়ে উন্নীত করেন। আশপাশের শিক্ষার্থীদের মাঝে মানুষের মুক্তি আর সুন্দর জীবনের দাওয়াত দিতে থাকেন। শোষক আর শাসকদের হাতে তিনি লাঞ্ছিত হয়েছেন বারবার, কিন্তু ভেঙে পড়েননি। রাসূল (সা)-এর জীবনের প্রতি লক্ষ্য রেখে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছানোর কাজ অব্যাহত রেখেছিলেন।
শাহাদাত বরণ
“যারা আল্লাহর পথে লড়াই করে নিহত হয় তাঁদেরকে তোমরা মৃত বল না, বরং তাঁরা জীবিত”, সেই জীবনের জন্য অপেক্ষা করতেন শহীদ মুহাম্মদ সেলিম। চাঁপাইনবাবগঞ্জের মানুষ যে মিছিলে আওয়াজ তুলেছিল মানুষের মুক্তির সনদ আল কুরআনের অবমাননার বিরুদ্ধে, সেই মিছিলে তিনিও একজন ছিলেন। আরো সৌভাগ্যের কথা, অমানুষদের গুলি ও আস্ফালনকে রুখে দিয়েছিলেন নিজের জীবন দিয়ে।
শহীদের মায়ের প্রতিক্রিয়া
শহীদ সেলিমের শাহাদাতের পর তাঁর মা নিজেকে একজন শহীদের মা হিসেবে পেশ করতে পেরে গৌরবান্বিত মনে করেন।
একনজরে শহীদ মোহাম্মদ সেলিম রেজা
নাম : মোহাম্মদ সেলিম
মায়ের নাম : কুলসুম বেগম
বাবার নাম : মোজাম্মেল হক
সাংগঠনিক মান : কর্মী
সর্বশেষ পড়াশোনা : ৮ম শ্রেণী
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান : শংকরবাটি উচ্চবিদ্যালয়
আহত হওয়ার স্থান : ঈদগাহের সামনের রাস্তায়
শহীদ হওয়ার স্থান : ঈদগাহের সামনে রাস্তায়
আঘাতের ধরন ও স্থান : গুলি পেটে ও হাতে
শহীদ হওয়ার তারিখ : ১১ মে, ১৯৮৫
স্থায়ী ঠিকানা : আরামবাগ, রাজারামপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ
ভাই-বোন : ৬ ভাই, ১ বোন
ভাই-বোনের মাঝে অবস্থান : দ্বিতীয়
শহীদ মুহাম্মদ সেলিম রেজা
মোজাম্মেল হক
কুলসুম বেগম
নভেম্বর ৩০, -০০০১
৬ ভাই, ১ বোন
আরামবাগ, রাজারামপুর, নাবাবগঞ্জ
কর্মী
৮ম শ্রেণী, শংকরবাটি উচ্চ বিদ্যালয়
চাঁপাইনবাবগঞ্জ