শহীদ সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম

১৬ জানুয়ারি ২০১৬ - ১৬ জানুয়ারি ২০১৬ | ১৩১

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

চারদলীয় জোট সরকার পাঁচ বছর মেয়াদের শাসনকাল শেষে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় ২৮ অক্টোবর ২০০৬ সালে সংবিধান অনুযায়ীই কেয়ারটেকার সরকার ক্ষমতায় আসার কথা। যথারীতি ২৮ অক্টোবর রাত ৮টায় বঙ্গভবনে কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান হিসেবে বিচারপতি কে এম হাসানের শপথ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ক্ষমতা হস্তান্ত হওয়ার অপেক্ষায় সমগ্র দেশবাসী। শিডিউল অনুযায়ী বঙ্গভবনে এ সংক্রান্ত যাবতীয় প্রস্থতি সম্পন্ন।

কিন্তু সাংবিধানিক ধারাবাহিকতা বজায় রাখার মাধ্যমে বাংলাদেশে প্রাতিষ্ঠানিক গণতন্ত্রের এই পথ অবশ্যই সহজ ছিল না। আমাদেরকে স্বাধীনতা-উত্তরকাল থেকেই একদলীয় ব্যবস্থা, বাকশালী স্বৈরতন্ত্র ও সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে ১৯৯০ সালে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে কেয়ারটেকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হয়, যার রূপকার ও মূল প্রবক্তা ছিলেন জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের তৎকালীন আমীর অধ্যাপক গোলাম আযম। তিন জোট ও জামায়াতের অবিরাম আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৯০ পরবর্তীতে গণতন্ত্রের নবপথচলা শুরু হলে সেই পথও শত্রুমুক্ত ছিল না; ছিল স্বাধীনতা পরবর্তীকালের একদলীয় স্বৈরতন্ত্রের দোসরদের সুদূরপ্রসারী ষড়যন্ত্রের স্থানীয় ও অস্থানীয় নীলনকশা ও অপতৎপরতার কাছে জিম্মি। এই গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তি দেশকে অকার্যকর রাষ্ট্র, সন্ত্রাসী রাষ্ট্র ইত্যাদি নেতিবাচক পরিচিতিতে দেশে-বিদেশে প্রচার করে এদের গণতন্ত্রায়নের মূলে কুঠারাঘাতের জন্য সদা সচেষ্ট থেকেছে এবং পরিশেষে ২০০৭ সালের নির্বাচন বানচালের মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রহীনতা কায়েমের টার্গেটে ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে নৈরাজ্য, রক্তপাত ও হত্যাযজ্ঞ সংঘটিত করেছে। গণবিরোধী রক্তপিপাসু অপশক্তির সেদিনের লোমহর্ষক, নারকীয় তাণ্ডবতার ঘটনাবলি অবলোকন করে গণতন্ত্র ও শান্তিবিরোধী অপশক্তির হীন চক্রান্তের বিষয়টি সমগ্র জাতির সামনে প্রতিনিয়ত স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হচ্ছে।

সেদিনের মর্মান্তিক ঘটনা
সেদিন বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আয়োজিত পূর্বঘোষিত শান্তিপূর্ণ সমাবেশে লগি-বৈঠাধারী ১৪ দলের সন্ত্রাসী ঘাতকদের হাতে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৬ জন নেতাকর্মীকে নির্মমভাবে শাহাদাতবরণ করতে হয়। এসব সন্ত্রাসীর হাতে আহত হয়েছেন এক হাজারেরও বেশি নিরস্ত্র-নিরীহ মানুষ। এ ছাড়া ঢাকার বাইরে এ ঘটনার আগে ও পরে শাহাদাতবরণ করেন আরো ৮ জন জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী ছাত্রশিবিরের নেতাকর্মী। ঘাতকরা যে কত নিষ্ঠুর ও পাশবিক চরিত্রের, সেটা প্রমাণ হয় যখন টেলিভিশনের পর্দায় সারা দিনব্যাপী আমাদের ভাইদের শাহাদাত ও রক্তদানের দৃশ্যাবলি এবং আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র আক্রমণ ও মৃতদেহের ওপর নৃত্যরত নৃশংস-উন্মত্ততা দেখে। ঘৃণায় বিষিয়ে এলো পুরো শরীর। মানুষ কত নিচে নামতে পারে! মানুষের নাম ও পরিচয় ধারণ করে কত নির্মম হতে পারে!! এই ভাবনার মধ্যে আওয়ামী নির্মমতায় শহীদের তালিকায় উঠে এলো মুজাহিদ, জসিম-১, মাসুম, শিপন, শাহজাহান আলী, আরাফাত, জসিম-২, রফিক, জাবেদ আলী, হাবীব, সাবের, আব্বাস ও রুহুল আমীন ভাইয়ের নাম।

বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার ও আওয়ামী সন্ত্রাস প্রতিরোধ করার সংগ্রামে এতজন নিরপরাধ ইসলামী আন্দোলনের কর্মীর শাহাদাতের ঘটনায় হৃদয়মন ভীষণভাবে ভারাক্রান্ত না হয়ে পারে না। আর সেই সময়ই শান্তি ও ধৈর্যের পরশ নিয়ে মনে উদিত হল মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের ঘোষণা : “ঐ ঈমানদারদের সাথে ওদের দুশমনীয় এ ছাড়া আর কোন কারণ ছিল না যে, তারা এমন আল্লার প্রতি ঈমান এনেছিল, যিনি মহা শক্তিমান ও যিনি কারো প্রশংসার ধার ধারেন না।” (সূরা বুরুজ-৮)


রক্তঝরা ঐতিহাসিক ২৮ অক্টোবর আওয়ামী সন্ত্রাসের ভয়াবহ নৃশংসতার কথা মনে হলেই সমগ্র বাংলাদেশ ভয়ে বিহ্বল হয়ে যায়। মনুষ্যত্ব, মানবতা ও বিবেক সেই অপশক্তির প্রতি নিক্ষিপ্ত তীব্র ঘৃণা ও লানতের কথা পুনর্ব্যক্ত করে। আওয়ামী সন্ত্রাস ও রক্তপাতের ধারাবাহিকতায় সমগ্র জাতি ও বিশ্বজগৎ জানতে পেরেছে যে, ২০০৭ সালের নির্বাচন বানচালে মাধ্যমে অস্থিতিশীলতা ও গণতন্ত্রহীনতা কায়েমের টার্গেটে ২৮ অক্টোবর ঢাকার পল্টনে সংঘটিত নৈরাজ্য, রক্তপাত ও হত্যাযজ্ঞ ছিল পূর্ব পরিকল্পিত। কিন্তু কোনো অসাধু পরিকল্পাই কখনও সফল হতে পারে না। আল্লাহর রহমতে ও দেশপ্রেমিক জনতার প্রতিরোধে ২৮ অক্টোবরের হত্যাকারী সন্ত্রসীরা কোন দিনই বাংলাদেশে তাদের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত পূর্ব পরিকল্পনার ঘৃণ্য নীল নকশা সফল করতে পারবে না ইনশাআল্লাহ।

বেদনাবিধুর আটাশে অক্টোবর
শামসুন্নাহার রুবি

আল্লাহপাকের সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি মানুষ। যাদেরকে উপাধি দেয়া হয়েছে ‘আশরাফুল মাখলুকাত’ অর্থাৎ সৃষ্টির সেরা জীব। তারা আল্লাহপাকের সবচেয়ে প্রিয় সৃষ্টি। তাই তারা যেন শয়তানের প্ররোচনায় বিভ্রান্ত হয়ে না যায় সে জন্য গাইড লাইন হিসেবে আল কুরআনকে দিয়েছেন। আল্লাহ বলেছেন, যারাই আমার কুরআন অনুসরণ করবে না তারা ধ্বংস হয়ে যাবে। আমাদের প্রিয়নবী হজরত মুহাম্মদ (সা) তাঁর বিদায় হজের বাণীতে বলেছেন, ‘তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত ধ্বংস হবে না, যতক্ষণ পর্যপ্ত আল্লাহর কুরআন ও আমি রাসূলের সুন্নাতকে আঁকড়ে ধরে থাকবে।’

আমরা যদি নিজেকে মুসলিম দাবি করি এবং মুসলিম হিসেবে মরতে চাই তাহলে আল্লাহর হুকুম ও রাসূল (সা)-এর সুন্নাতকে অনুসরণ করা আমাদের জন্য অপরিহার্য হয়ে দাঁড়ায়। বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির এমন একটি সংগঠন যারা দেশের ছাত্রসমাজকে কল্যাণের পথে আহ্বান জানায়, ছাত্রসমাজকে সৎ কাজের আদেশ দেয় এবং অসৎ কাজ থেকে ফিরিয়ে রাখে। লেখাপড়ার পাশাপাশি কুরআন-হাদিসের চর্চা করে এবং আমল করে। এমন একটা সুন্দর দলের তুলনা অন্য কোন দলের সাথে মিলে না। এরা মানুষকে নামাজি ও ভদ্র বানায়। এই বাংলাদেশের বুকে কেউ তাদের বিরুদ্ধে কোন প্রকার অপকর্মের প্রমাণ দেখাতে পারবে না। আল্লাহর রহমতে এই সংগঠন একজন ছাত্রকে পিতামাতার চুশীতলকারী সন্তান হিসেবে সমাজে উপহার দেয়।

পক্ষান্তরে আর অন্যান্য যে দলগুলো আমরা দেখতে পাই যেগুলোর ভেতরে কোনো আদর্শ নেই। তারাও তাদের দলে ছাত্রদেরকে রহাড়ষাব করার জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করে।
টাকা পয়সার লোভ দেখিয়ে তাদেরকে সেই বাতিল পথে নিয়ে যায়। নামাজ, রোজার আদব-কায়দার কোনো তালিম দেয়া হয় না। দেয়া হয় তাদের হাতে অস্ত্র, রাম দা, ছুরি যা দিয়ে তারা তাদের জাতি ভাইকে খুন করে একটু বাগি¦তণ্ডা হলেই। নামাজ কালাম না পড়ার কারণে তাদের ওপর থেকে আল্লাহর রহমত উঠে যায়। যার ফলে তারা বেপরোয়া হয়ে যায়। অন্যের ওপর জুলুম করতে গিয়ে নিজেরাও ধ্বংস হয়ে যায়। নেককার বানানোর কারখানা হলো ইসলামী ছাত্রশিবির। এই সংগঠনই করতো...।

এই সংগঠনই করতো শহীদ সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম, শহীদ গোলাম কিবরিয়া শিপন, শহীদ মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম ও শহীদ রফিক, শহীদ ফয়সল। তারা তাদের এলাকার শ্রেষ্ঠ সন্তান হিসেবে সুপরিচিত ছিল। তাদের কথা মনে হলে এখনো তাদের এলাকার লোকেরা চোখের পানি ফেলেন। সেদিন যারা পল্টনে শহীদ হায়েছেন তাদের চরিত্র হুবহু একই রকম ছিল। মাসুম শিশুকাল থেকে (৬-৭ বছর বয়স) নামাজ পড়তো জামাতের সাথে। ছোটবেলায় খেলা করছে বললাম, আজান হয়েছে মসজিদে যাও। সাথে সাথে খেলা ছেড়ে মসজিদে চলে যেত। কোন প্রকার অবহেলা করতো না। রোজার বেলায়ও তাই করতো ৫-৬ বছর বয়স থেকে রোজার প্রতি আকর্ষণ তীব্র। পাল্লা দিয়ে রোজা রাখতো চাচাতো ভাইবোনদের সাথে। সাইফুল্লাহ কোন দিন কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করতো না। সে খুবই ধৈর্যশীল ছিল। একটা ছোট ঘটনা মনে পড়ে আমাদের বাসার সামনে ফুলের গাছ লাগিয়েছিল সখ করে। গাছে ফুল ধরেছে। বাড়ির ভাড়াটিয়ার ছোট একটি মেয়ে ফুল ছিঁড়ে ফেলেছে। মাসুম সাথে সাথেই দেখে ফেলেছে এবং মেয়েটির হাত ধরে তাকে জিজ্ঞেস করেছে, পেছনে মেয়েটির মা লুকিয়ে লুকিয়ে দেখছে ঘটনাটি কী দাঁড়ায়। এদিকে মেয়েটির সাথে মাসুম শখের ফুল ছেঁড়ার কারণে কোন প্রকার দুর্ব্যবহার তো করেইনি বরং তাকে আদর করে বুঝিয়ে দিয়ে বিদায় দিয়েছে। মাসুম শহীদ হওয়ার পর সবার কাছে সেই মহিলা কেঁদে কেঁদে বলেছেন, এমন সুন্দর তার আচরণ ছিল। আমার মেয়েটিকে ভেবেছিলাম মারবে বা বকাঝকা করবে। কিš' মাসুমের ব্যবহারে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। অভাবীদের অভাব দূর করার ব্যাপারে সে ছিল তৎপর। এক গরিব ছাত্রের ভর্তির টাকার ব্যবস্থা করে নিজের প্রিয় পছন্দের জামাটি পরিয়ে দিয়ে তাকে মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দিয়েছিল শহীদ মাসুম।

ছাত্রদেরকে পয়সা ছাড়া পড়াতো। প্রতি বছর নতুন বই কিনে দিতাম। বছর শেষে সেই বইগুলো বিনা পয়সায় গরিব ছাত্রদেরকে দিয়ে দিত। শুধু বইয়ের বেলায় নয়, সব ব্যাপারেই যেমন শখের খেলনা আমেরিকা থেকে তার মামা তার জন্য এনেছিল, সেই খেলনা ইসলামের পথে ছেলেদেরকে আনার জন্য এবং ভাব জমানোর জন্য দেখা গেল সে দিয়ে দিয়েছে। পয়সা খরচ করে ছোট ছাত্র ভাইদেরকে খাওয়াতো। বাড়িতে ডাবগাছ, আমগাছ ও বরইগাছ আছে। সেখান থেকে ফল পেড়ে তাদেরকে নিয়ে খাওয়া-দাওয়া করতো। এলাকার প্রত্যেকটি ছেলের জন্য অন্য রকম একটা টান ছিল তার।

সংগঠনে সময় দিত বেশি। মাঝে মাঝে আমি বকা দিতাম পড়াশোনা জন্য। কিন্তু নিয়মিত পড়াশোনা করতো। তার একটা সুন্দর রুটিন ছিল। লেখাপড়ায় ও মেধাবী ছিল। মতিঝিল মডেল স্কুল এন্ড কলেজ থেকে এসএসসিতে প্রথম বিভাগ ৩টি লেটারসহ ও বিএএফ শাহীন কলেজ থেকে এইএসসি পাস করে ইংলিশে অনার্সে ভর্তি হয়েছিল। কিন্তু খুব তার পেরেশানি ছিল ইংল্যান্ডে গিয়ে পড়াশোনা করার। কারণ সেখানে তার প্রিয় ভাই তার জন্য সব ব্যবস্থা করে রেখেছিল।
কিন্তু সেই আশা আওয়ামী হায়েনারা পূরণ হতে দিল না।

শহীদ মাসুমের ভেতরে কখনো অলসতা স্থান পেতে পারেনি। সংগঠনের কাজের বেলায় ছিল সে সদাতৎপর। রাত জেগে পোস্টারিং ও দেয়াল লিখনের কাজ সে করেছে নির্ভয়ে। সাথীদের নিয়ে নিজের হাতে চুলায় গাম তৈরি করে সারা রাত না ঘুমিয়ে এসব কাজ করতো। রাত না ঘুমিয়ে এসব কাজ করতো, তার মনে কোনো প্রকার ভয়ভীতি বা অলসতা কাজ করতো না। সে নিজে কাজ করতো এবং অন্য দ্বীনি ভাইকে উৎসাহিত করে নিয়ে যেত।

শত কাজের মাঝেও যখনই দায়িত্বশীল ডাকতেন সব কাজ ফেলে দিয়ে তাতে সাড়া দিত। মোট কথা সংগঠনের জন্য সে ছিল নিবেদিতপ্রাণ। পাড়ার দুষ্টু ও চঞ্চল ছেলেদেরকে খেলাধুলার মাধ্যমে সংগঠনে ভেড়ানোর চেষ্টা করতো। এর জন্য নিয়মিত খেলাধুলায় তাদের সাথে সময় দিত। কিছু ছেলে ফজরের নামাজ পড়ার বেলায় অবহেলা করতো বলে ফুটবল খেলার প্রলোভন দেখিয়ে তাদের ঘুম থেকে উঠিয়ে ফজর নামাজ পড়ার ব্যবস্থা করতো শহীদ মাসুম।

সুন্দর কবিতা লিখতে পারতো। সিগারেট নিয়ে, জন্মভূমি বাংলাদেশকে নিয়ে সাড়া জাগানোর মতো কবিতা লিখেছিল। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই কবিতাগুলো বন্যার সময় হারিয়ে গিয়েছে বিধায় উল্লেখ করতে পারলাম না। শহীদ মাসুম অনেক সুন্দর গান করতে পারতো। এলাকার বিভিন্ন গ্রোগ্রামে স্টেজে সুন্দর সুন্দর গান গেয়ে শুনাতো সবাইকে। শহীদ মাসুম সুন্দর সুরে কুরআন তেলাওয়াত করতো। এক কর্মী বোন সকালবেলা আমর সাথে দেখা করার জন্য আমাদের বাসায় এসেছিলেন। মাসুম সামনের রুমে বসে কুরআন তেলাওয়াত করছিল। সেই সময় বাইরে থেকে তার কুরআন তেলাওয়াতের সুর শুনে কর্মী বোনটি মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন। ও শহীদ হওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এক পর্যায়ে এ কথাটি উল্লেখ করেছিলেন বোনটি। ও বেঁচে থাকতে এত কিছু খেয়াল করতাম না। চলে যাওয়ার পর এখন ওর সব গুণ চোখের সামনে ভেসে উঠছে। এখন ওর প্রতিটি আচরণ স্মৃতি হয়ে মনে নাড়া দেয়। আর ওর হারানো ব্যথা সহ্য করতে কষ্ট হয়। ও ছিল সমাজসেবী বালক। কারো কোন অসুখের খবর কানে এলে সোজা হাসপাতালে গিয়ে হাজির হতো। রক্ত দেয়া থেকে শুরু করে রাত জেগে সেবা করা পর্যন্ত- দায়িত্ব পালনে সে ছিল তাৎপর।

এমন চুশীতলকারী সন্তান ছিল মাসুম। সে শুধু মায়েরই চক্ষশীতলকারী সস্তান ছিল না। সারা এলাকার মুরব্বিদের নজরকাড়া একজন সন্তান ছিল। তাকে আওয়ামী-সন্ত্রাসীরা মেরে ফেলল এ কথাটি এখনো এলাকাবাসী সহ্য করতে পারছে না। যার বিরুদ্ধে জীবনে একটি নালিশ ছিল না কারো, সেই ২ নভেম্বরে তার শাহাদাতের খবরে দূর-দূরান্ত থেকে ঢাকার বাইরের জেলা থেকে মাদারটেক বাগানবাড়িতে ১৩০/১৬ তে সবাই এসে ভিড় করেছিল শেষবারে মতো একনজর দেখার জন্য। লক্ষণীয় হলো, সে ঢাকার বাইরে যেখানে বেড়াতে গিয়েছিল সেখানকার লোকদের সাথে এমন সুন্দর আচরণ করতো যে তারা তাকে ভুলতে পারতো না। শহীদ মাসুম খেলায় সুন্দর সুন্দর প্রাইজ নিয়ে ঘরে ফিরতো মেডেল, কাপ, কাচের প্লেট। এখনো সব কাচের প্লেট স্মৃতি হিসেবে যত করে রেখে দিয়েছি। শিবির দায়িত্বশীলরা এলে সেগুলো তখন ব্যবহার করে মনে তৃপ্তি পাই। ও আল্লাহর কাছে চলে যাওয়ার পর এখন বুঝি কী সম্পদ হারিয়েছি। ওকে আমি একটি মুহূর্তের জন্যও ভুলতে পারি না। এই পৃথিবীতে সব সুখ আছে। এই সুখের ভেতরেও প্রতিটি মুহূর্তে হৃদয়ের ক্ষতস্থান ব্যথা অনুভূত হয়। সেই মাসুমকে ছাড়া এক মুহূর্তও থাকতে পারতাম না। মাসুম ছাড়া আমার কোন কিছু ভাল লাগতো না। সেই মাসুমকে ছাড়া আমি চোখের পানিকে সাথী কওে বেঁচে আছি। সব আছে মাসুম নেই। দেখতে দেখতে চারটি বছর পূূর্ণ হলো। রক্তাক্ত ২৮ অক্টোবরে চারটি বছর পাও হয়ে গেল। কিন্তু মাসুম শিপন, মুজাহিদ ও ফয়সলদের হত্যার কোন বিচার হলো না।

শেখ হাসিনার নির্দেশে ২৮ অক্টোবরের নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হলো। শেখ হাসিনার ছাত্রলীগের অপকর্মের অসংখ্য ঘটনা আছে তবে একটা ঘটনা উল্লেখ না করে পারছি না। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন নামাজি ছেলেকে শিবিরকর্মী মনে করে ধরে এনে রাতে অকথ্য নির্যাতন চালানো হয়েছে তার ওপর। তার পিঠের চামড়া উঠিয়ে ফেলা হয়েছে, নামাজি ছেলের লজ্জাস্থানে সিগারেটের আগুনে দিয়ে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। নির্যাতিত অবস্থায় সেই নামাজি ছেলে পানি খেতে চেয়েছিল বলে তার মুখের মধ্যে প্যান্টের চেইন খুলে প্রস্রাব খাইয়ে দিয়েছিল শেখ হাসিনার ছাত্রলীগের সোনার ছেলেরা। ছেলেটির অপরাধ হলো সে নামাজ পড়ে। তার সোনার ছেলে ১০০ মেয়েকে ধর্ষণ করে সেঞ্চুরি পালন করে মিষ্টি বিতরণ করেছিল এ কথা দেশবাসীর জানা আছে।

শেখ হাসিনার হুকুমে আমাদের সন্তানেরা নিহত হয়েছে তার সোনার ছেলেদের লগি-বৈঠার আঘাতে। শেখ হাসিনা কোনভাবে অস্বীকার করতে পারবেন না যে এতগুলো খুনের সামি। তার বক্ততাগুলো ক্যাসেটে রেকর্ড হয়ে আছে। তিনি বলেছিলেন, লগি-বৈঠা নিয়ে আস।’ যার ফলশ্রুতিতে আমরা মায়েরা আমাদের সন্তান গুলো হারিয়েছি।
এ কারণে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছিল। এই মামলার বিচার বিগত সরকার করেনি। বিদেশী প্রভুদের সহায়তায় মতায় বসে সরকারি শক্তিতে হত্যা মামলা প্রত্যাহার করে নিল। এই দল দিয়ে দেশের মানুষের জন্য ভাল কাজ হবে বলে আশা করা যায় না। বরং উল্টো শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে জামায়াত শিবিরের নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নিজে অসংখ্য খুনের আসামি হয়ে জামায়াত-শিবিরের অসংখ্য নেতাকর্মীকে অ্যারেস্ট করে অমানবিক নির্যাতন চালাচ্ছে। এমনকি পুত্রহারা মাসুমের শোকার্ত বাবাকে বিনা কারণে ধরে এনে জেলহাজতে কষ্ট দিয়েছে, তাকে অস্ত্র মামলা দিয়ে এখন পর্যন্ত হয়রানি করছে। প্রতিক্ষণে তাকে হাজিরা দিতে হয়। অথচ তিনি নির্দোষ।
সরকার জামায়াত-শিবিরের নেতাকর্মীদেরকে ওপর পুলিশকে কুকুরের মত লেলিয়ে দিয়েছে। জামায়াত-শিবিরের নেককার নেতাকর্মীদেরকে নির্যাতন করে পঙ্গু বানিয়ে দিচ্চে। ৪০ বছর পূর্বের ঘটনা যার কোনো সাক্ষী প্রমাণ নেই সেই ঘটনার আসামি বানিয়ে বিশ্ববরেণ্য মাওলানা সাঈদীসহ আমিরে জামায়াত ও অন্যান্য নেতাকর্মীদের কারারুদ্ধ করে নির্যাতন চালাচ্ছে অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হলেন ২৮ অক্টোবরের লগি-বৈঠার তাণ্ডবের লগি-বৈঠার তাণ্ডবের শিকারে নিহত মাসুম, শিপন, মুজাহিদ, রফিকুল, ফয়সালসহ অনেক খুনের আসামি। প্রধানমন্ত্রীর (ক্যাসেটে ধারণকৃত) সেই বক্তৃতা লগি-বৈঠা-ছল নিয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দেয়ার ঘটনা প্রমাণসহ সংরক্ষিত আছে। মানুষকে নির্মমভাবে কিভাবে তার সোনার ছেলেরা হত্যা করেছে তার প্রমাণ ভিডিও ফুটেজে সংরক্ষিত আছে। অথচ দেশের প্রচলিত আইনে হুকুমের আসামি শেখ হাসিনার বিচার হচ্ছে না। হামলা মামলা দিয়ে জামায়াতের কার্যক্রম বন্ধ করার চেষ্টা করা হচ্ছে। আওয়ামী লীগাররা সবসময় ’৭১ এর খুনি বলে জামায়াত শিবিরকে গালিগালাজ করে কিন্তু আজ পর্যন্ত ৪০ বছর পার হয়ে যাচ্ছে একজন জামায়াত নেতার অপকর্মের কোনো প্রমাণ তারা দেখাতে পারেনি। অথচ তাদের অপকর্মের ঘটনা দেশবাসীর জানা আছে। তারা শুধু বিদেশী প্রভুদের ওপর ভরসা করে ঈমানদারদের ওপর অত্যাচার চালাচ্ছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী কি একবার ভেবে দেখেছেন যে ঈমানদারদের সাথে আল্লাহ আছেন। প্রধানমন্ত্রী কি অর্থসহ কুরআন শরীফ পাঠ সম্পূর্ণ করেছেন? তিনি যদি কুরআন পড়ে থাকেন তাহলে ফেরাউন, নমরূদ ও সাদ্দাদের ধ্বংসের ইতিহাস জানেন। কী করে কায়েমি শাসকগোষ্ঠী ঈমানদার যারা কুরআনের বাহক ও ধারক তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে শহীদ করে দিয়েছে। আল্লাহ পাক তার আজাবের ফেরেশতা দিয়ে তাদের ধ্বংস করে দিয়েছেন। আল্লাহপাক এভাবেই কৃতকর্মের বদলা দিয়ে থাকেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর একটু ভেবে দেখা প্রয়োজন। উনার বাবার শেষ পরিণতি কী হয়েছিল। সময় থাকতে তওবা করে ঈমানদার নেতাকর্মীদের ওপর থেকে নির্যাতন অত্যাচার বন্ধ করুন নইলে ফেরাউন নমরূদের দশা আপনারও হতে পারে। সেই সময় মনে হয় বেশি আর বাকি নেই। আল্লাহর জমিনে পাপাচার বেশি হওয়ার কারণে আল্লাহ রেগে যান এবং আল্লাহর আরশ কেঁপে ওঠে, তখনই ভূমিকম্প হয়। বারবার ভূমিকম্প হওয়ায় মনে হয় ধ্বংসের আগাম ইশারা। আমাদের তওবা করে কুরআনের ধারক ও বাহক হওয়া উচিত।

কিন্তু আওয়ামী লীগ এমন একটা দল যা নাকি কুরআনের বিপরীত, তারা কুরআনের আইন প্রতিষ্ঠিত হতে দেবে না। তারা সুবিধাবাদী ইসলাম পালন করে তাই এই দল দিয়ে দেশের মানুষের জন্য ভালো কোনো কাজ হবে বলে আশা করা যায় না। তার দ্বারা কখনো ভাল কাজ হবে বলে আশা করা যায় না। মতায় এসে তার ফলশ্র"তি হিসেবে ৫৭ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করা হলো। সেনা অফিসাররা বারবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে সাহায্য চাওয়ার পরও প্রধানমন্ত্রী কোন ব্যবস্থা নিলেন না। তার মানে তিনিও এ হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত। শেখ হাসিনা আইনের কথা বলেন বড় গলায়। বিভিন্ন জায়গায় বক্তৃতা বিবৃতি দেন কিন্তু সরকারি মতাবলে ২৮ অক্টোবর খুনের মামলা প্রত্যাহার করে নিয়ে প্রমাণ করলেন তিনি আইনের ঊর্ধ্বে। আমরা দেশবাসী আইনকে শ্রদ্ধার চোখে দেখি। আইন হলো সব কিছুর ঊর্ধ্বে। আইনের ঊর্ধ্বে কেউ যেতে পারে না। আইনের কাছে কে প্রধানমন্ত্রী, কে রাষ্ট্রপতি বিচার বিবেচ্য নয়। আইনের চোখে যে দোষী হবেন তাকে আইনের শাসন মেনে নিতে হবে। এটা হলো স্বাভাবিকতা। কিন্তু' শেখ হাসিনা আইনের শাসনের অবমাননা করে একটা বড় ধরনের অপরাধ করেছেন। এই অপরাধের শাস্তি হওয়া উচিত। আমরা বাদিরা দুর্বল, এখন আমাদের জন্য কোন মানবাধিকারবাদী এগিয়ে আসছে না। যখন সন্ত্রাসীরা মারা যায় তখন মানবাধিকারবাদীরা চেঁচামেচি করতে থাকে। কিন্তু যেভাবে নামাজি, ভদ্র, চরিত্রবান ছেলেদের পিটিয়ে মারা হলো এ ব্যাপারে মানবাধিকার কর্মীদের কোনো আওয়াজ এ পর্যন্ত- বের হলো না। দিন দুপুরে সচেতন মানুষের সামনে শেখ হাসিনা যেই ঘটনাটি ঘটালেন তাই বিশ্বাসী ভুলবে না। কাল হাশরে এই বিশ্ববাসী তার বিরুদ্ধে সাক্ষী হিসেবে নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়াবে। আল্লাহপাক অবশ্যই তার বিচার করবেন। আল্লাহর কাছে যে মামলা দিয়ে রেখেছি পুত্রহারা, স্বামীহারা পিতৃহার মানুষের প্রতিদিনের প্রতি মুহূর্তে চোখের পানি আল্লাহর দরবারে জমা হচ্ছে। কেউ চিরদিন দুনিয়ায় থাকবে না।

এই জন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানাই আমরা শহীদের মা হতে পেরেছি। কারণ একজন শহীদ কাল হাশরে ৭০ জনকে শাফায়াত করতে পারবেন, যাদের জন্য জাহান্নাম অবধারিত ছিল। এই ঘটনার কারণে আমাদের ছেলেরা কত বড় মর্যাদা লাভ করেছেন এর শুকরিয়া আদায়ের শেষ নেই।  ইসলামের দুশমনরা মাসুম, শিপন, মুজাহিদের হত্যা করে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কাজকে বন্ধ করে রাখতে পারেনি। ওরা নেই, দুনিয়ায় ওদের হারানো শোককে শক্তিতে রূপান্তরিত করে শত শত মাসুম, শিপন, মুজাহিদ এগিয়ে আসছে ওদের শূন্যস্থান দখল করার জন্য। এই ইসলামী কাফেলার স্রোতকে দুনিয়ার কোনো শক্তি রোধ করতে পারবে না। আল্লাহর পথে বাধা দিতে গিয়ে তারাই ধ্বংসের অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবে ফেরাউন ও নমরূদের মত।

এই আটাশে অক্টোবরে নতুন করে শহীদদের আত্মদানের কথা স্মরণ করে আমাদের দ্বীন কায়েমের পথ চলা হোক আরো বেগবান। আর চোখের পানি নয়, আওয়ামী হায়েনাদের বিষাক্ত ছোবল থেকে দেশের ঈমানদার জনগণকে রা করার দায়িত্ব আজ আমাদের অর্থাৎ জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবিরের ওপর। জামায়াতে ইসলামী ও ছাত্রশিবির আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায় না। তারা মনে করে কবরে আজাবের ফেরেশতাদের শাস্তির তুলনায় পুলিশের নির্যাতন তু"ছ। তাই তারা সমস্ত বাধা বিঘœ অতিক্রম করে আল্লাহর পথে এগিয়েই যাবে। কখনো পিছপা হবে না। আল্লাহপাক এ দায়িত্ব পালনের তৌফিক দান করুন। আমিন। 

লেখিকা : শহীদ মাসুমের মা

এক নজরে শহীদ সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম
নাম : সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম
পিতা : মাহতাব উদ্দিন আহমদ
মাতা : শামছুন নাহার রুবি
মাতার পেশা : শিক্ষিকা (উপাধ্যক্ষ, ব্রাইটফোর ল্যাবরেটরি স্কুল, ঢাকা)
বয়স : ১৬ বছর
স্থায়ী ঠিকানা : ১৩০/১৬, বাগানবাড়ি, মাদারটেক, বাসাবো, সবুজবাগ, ঢাকা।
ভাইবোন : দুই ভাই ও তিন বোন
শিক্ষাজীবন : শাহাদাতের সময় তিনি সরকারি তিতুমীর কলেজে ইংরেজি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।
সাংগঠনিক জীবন : সংগঠনের সাথী ও ২৭ নম্বর ওয়ার্ড দক্ষিণ সভাপতি ছিলেন।
শাহাদাতের তারিখ ওস্থান : ২৮ অক্টোবর ২০০৬ বায়তুল মোকাররমের উত্তর সড়কে ১৪ দলের হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ নভেম্বর ২০০৬ ভোর ৪টায় ইবনে সিনা হাসপাতালে শহীদ হন।

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম

পিতা

মাহতাব উদ্দিন আহমদ

মাতা

শামছুন নাহার রুবি

জন্ম তারিখ

জানুয়ারি ১৬, ২০১৬

ভাই বোন

দুই ভাই ও তিন বো

স্থায়ী ঠিকানা

১৩০/১৬, বাগানবাড়ি, মাদারটেক, বাসাবো, সবুজবাগ, ঢাকা

সাংগঠনিক মান

সাথী

সর্বশেষ পড়ালেখা

সরকারি তিতুমীর কলেজে ইংরেজি বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষ

শাহাদাতের স্থান

ইবনে সিনা হাসপাতাল


শহীদ সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম

ছবি অ্যালবাম: শহীদ সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম


শহীদ সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম

ছবি অ্যালবাম: শহীদ সাইফুল্লাহ মুহাম্মদ মাসুম