শহীদ জাহাঙ্গীর আলম

৩০ নভেম্বর -০০০১ - ১৯ এপ্রিল ২০০১ | ১১৩

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

শহীদ জাহাঙ্গীর আলম ইসলামের দাওয়াত নিয়ে রাজশাহীর অলি-গলি, রাজশাহী কলেজ, নিউ গভর্নমেন্ট ডিগি কলেজ, সরকারি সিটি কলেজে ছুটে বেড়াতেন। সেই তরুণ শহীদ জাহাঙ্গীরকে আর কোনোদিনই দেখা যাবে না ইসলামের দাওয়াতী সামগ্রী হাতে ছুটে বেড়াতেন।

সেদিন যা ঘটেছিল
১৯৮২ সালের ১১ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মতিহারের সবুজ চত্বরে শাব্বির, হামিদ, আইয়ুব, ও জবক্ষার যে শহীদী মিছিল শুরু করেছিলেন, সেই মিছিলে শরীক হলেন আরও দু’জন মর্দে মুজাহিদ। শহীদ জাহাঙ্গীর আলম ও শহীদ আবদুশ শাকুর। এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর শহীদ আবদুশ শাকুর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বেড়াতে এলেন শাহ মাখদুমের পূণ্যভূমি রাজশাহীতে। দু’দিন থাকেন রাজশাহী শহরে। এরপর বেড়াতে যান পবা থানার দারুশা গ্রামে বন্ধু দিনারের বাড়িতে। রাত্রে খাওয়া দাওয়ার পর দিনারের প্রতিবেশি শিবির কর্মী শহীদ জাহাঙ্গীরসহ কযেকজন মিলে গল্প গুজবে মেতে উঠেন। কিন্তু তাদের সেই আনন্দঘন মুহূর্ত বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। রাত আনুমানিক ১২ টার দিকে আওয়ামী সন্ত্রাসীচক্র অতর্কিতে তাদের উপর উপর্যুপরি বোমা নিক্ষেপ করে। বোমার আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হন সবাই। ঘটনাস্থলেই শাহাদাত বরণ করে আবদুশ শাকুর। আহতদের রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়তে থাকেন শিবির কর্মী জাহাঙ্গীর, রুবেল ও মোখলেছ। ১৮ এপ্রিল সকাল ১০.৩০ মিনিটে শহীদ জাহাঙ্গীর তার স্বজন-সঙ্গীদের শোকসাগরে ভাসিয়ে মহান প্রভুর দরবারে পৌঁছে যান।

একনজরে শহীদ মু. জাহাঙ্গীর আলম
নাম : মু. জাহাঙ্গীর আলম
পিতা : মোহাম্মদ আবদুস সামাদ দেওয়ান
মাতা: মোসাম্মাৎ তসলিমা বেগম
ভাইবোন : ৩ ভাই, ১ বোন (তিনি ২য়)
স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম: রাধানগর, পোস্ট: দারুশা, থানা: পবা, জেলা- রাজশাহী
শিক্ষাগত যোগ্যতা : দারুশা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে প্রাইমারি ও প্রথশ এসএসসি পাশ করেন ১৯৯৪ সালে। শাহ্ মাখদুম কলেজ থেকে দ্বিতীয় বিভাগে এইচএসসি পাশ করেন। শাহাদাত বরণের সময় রাজশাহী সিটি কলেজে অনার্স ১ম বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন।
সাংগঠনিক মান : সাথী
আহত হওয়ার তারিখ ও স্থান : ১৭ এপ্রিল ২০০১, দারুশা হাটে রাত ১২.০০
শহীদের হওয়ার তারিখ ও স্থান : ১৯ এপ্রিল রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে
যাদের আঘাতে শহীদ : ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের বোমার আঘাতে শহীদ হন।
কবর স্থান : দারুশা পরিবারিক গোরস্থান
যে শাখার শহীদ : রাজশাহী মহানগরী
শহীদের শখ : ইসলামী সঙ্গীত শোনা

মায়ের প্রতিক্রিয়া
জাহাঙ্গীর আমার ছেলেদের মধ্যে অন্যতম চরিত্রের অধিকারী ছিল। সে সর্বদা আমার খোঁজ খবর নিত। সে কোনো সময় ইসলামে জীবন দানের জন্য সদা ব্যস্ত থাকতো। এলাকার অত্মীয় স্বজন প্রতিবেশীদের সাহায্য করার জন্য ব্যাকুল থাকতো।

বাবর প্রতিক্রিয়া
জাহাঙ্গীরের মতো ছেলে পাওয়া খুব ভাগ্যের ব্যাপার। তার আহত হওয়ার পর আমার কোনো জ্ঞান ছিল না। আমি ২ বছর যাবত ঠিকভবে চলাফেরা করতে পারিনি।

শিক্ষকের প্রতিক্রিয়া
শহীদের শিক্ষক নুর হোসেন বলেন, জাহাঙ্গীর ছাত্র হিসেবে ছিল আমায়িক আচরণের অধিকারী। সে সকল শিক্ষকদের সাথে অনেক ভাল ব্যবহার করতো। এমন ছাত্র হারানো অবর্ণনীয় কষ্টের। এমন ছাত্রদের অকালে ঝরে পড়া আমাদের জন্য অশনি সংকেত।

বড় ভাই আলমগীর হোসেনের প্রতিক্রিয়া
সে অন্যান্য ছেলেদের চেয়ে অনেক নম্র, ভদ্র, শান্ত শিষ্টের অধিকারী ছিল। সে আমাদের তথা বড়দের কে শ্রদ্ধা আর ছোটদেরকে অনেক স্নেহ করতো। আমি ইসলামী আন্দোলন করছি। লেখাপড়া শেষ করে আন্দোলনের জন্যই ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নির্বাচন করবো।

জাহাঙ্গীর ভাই এর ফুফু মোসাম্মাৎ মরজিনা বলেন
আহত হওয়ার দিন আমার বাড়িতে গেলে খেতে বললে অল্প কিছু খাওয়া দাওয়া শেষে বললো ফুফু আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন ভাল থাকি।

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ জাহাঙ্গীর আলম

পিতা

মোহাম্মদ আবদুস সামাদ দেওয়ান

মাতা

মোসাম্মাৎ তসলিমা বেগম

জন্ম তারিখ

নভেম্বর ৩০, -০০০১

ভাই বোন

৩ ভাই, ১ বোন (তিনি ২য়)

স্থায়ী ঠিকানা

গ্রাম: রাধানগর, পোস্ট: দারুশা, থানা: পবা, জেলা- রাজশাহী

সাংগঠনিক মান

সাথী

সর্বশেষ পড়ালেখা

রাজশাহী সিটি কলেজে অনার্স ১ম বর্ষে অধ্যয়নরত ছিলেন

শাহাদাতের স্থান

রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে


শহীদ জাহাঙ্গীর আলম

ছবি অ্যালবাম: শহীদ জাহাঙ্গীর আলম


শহীদ জাহাঙ্গীর আলম

ছবি অ্যালবাম: শহীদ জাহাঙ্গীর আলম