শহীদ আব্দুস শাকুর

৩০ নভেম্বর -০০০১ - ১৭ এপ্রিল ২০০১ | ১১২

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

শহীদ জাহাঙ্গীর আলম ইসলামের দাওয়াত নিয়ে রাজশাহীর অলি-গলি, রাজশাহী কলেজ, নিউ গভর্নমেন্ট ডিগ্রি কলেজ, সরকারি সিটি কলেজে ছুটে বেড়াতেন। সেই তরুণ শহীদ জাহাঙ্গীরকে আর কোনোদিনই দেখা যাবে না ইসলামের দাওয়াতী সামগ্রী হাতে ছুটে বেড়াতে। পাওয়া যাবে না চঞ্চল কিশোর আবদুশ শাকুরকে।

সেদিনের মর্মান্তিক ঘটনা
১৯৮২ সালের ১১ মার্চ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মতিহারের সবুজ চত্বরে শাব্বির, হামিদ, আইয়ুব ও জব্বার যে শহীদী মিছিল শুরু করেছিলেন, সেই মিছিলে শরীক হলেন আরও দু’জন মর্দে মুজাহিদ। শহীদ জাহাঙ্গীর আলম ও শহীদ আবদুশ শাকুর। এসএসসি পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর শহীদ আবদুশ শাকুর চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে বেড়াতে এলেন শাহ মাখদুমের পূণ্যভূমি রাজশাহীতে। দু’দিন থাকেন রাজশাহী শহরে। এরপর বেড়াতে যান পবা থানার দারুশা গ্রামে বন্ধু দিনারের বাড়িতে। রাত্রে খাওয়া দাওয়ার পর দিনারের প্রতিবেশি শিবির কর্মী শহীদ জাহাঙ্গীরসহ কযেকজন মিলে গল্প গুজবে মেতে উঠেন। কিন্তু তাদের সেই আনন্দঘন মুহূর্ত বেশি সময় স্থায়ী হয়নি। রাত আনুমানিক ১২ টার দিকে আওয়ামী সন্ত্রাসীচক্র অতর্কিতে তাদের উপর উপর্যুপরি বোমা নিক্ষেপ করে। বোমার আঘাতে ক্ষত বিক্ষত হন সবাই। ঘটনাস্থলেই শাহাদাত বরণ করেন আবদুশ শাকুর। আহতদের রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আহতদের মধ্যে মারাত্মক অবস্থায় ছিলেন শিবির কর্মী জাহাঙ্গীর, রুবেল ও মোখলেছ। ১৮ এপ্রিল সকাল ১০.৩০ মিনিটে শহীদ জাহাঙ্গীর তার স্বজন-সঙ্গীদের শোকসাগরে ভাসিয়ে মহান প্রভুর দরবারে পৌঁছে যান।

একনজরে শহীদ মু. আব্দুশ শাকুর
নাম : মু. আবদুশ শাকুর
পিতা : মু. আলতাফুর রহমান
মাতা : খাইরুন নেসা
ভাইবোন : ৩ ভাই ২ বোন ( তিনি ৪র্থ)
সাংগঠনিক মান : কর্মী 
দায়িত্ব- ছাবানিয়া উপশাখা সভাপতি
শিক্ষাগত যোগ্যতা : শাহদাত বরণ করার সময় কালীনগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ফলপ্রার্থী ছিলেন। ২য় বিভাগ পেয়ে উত্তীর্ণ হন।
যাদের আঘাতে শহীদ : ছাত্রলীগ
শহীদ হওয়ার তারিখ : ১৭.০৪.২০০১ রাত ১২.০০টা
যে শাখার শহীদ : চাঁপাইনবাবগঞ্জ
স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম- ছাবানিয়া, ডাকঘর- কালীনগর, থানা ও জেলা- চাঁপাইনবাবগঞ্জ।
কবরস্থানে : ছাবানিয়া সামাজিক গোরস্থান
শখ : ইসলামী সঙ্গীত শোনা

মায়ের প্রতিক্রিয়া
শাকুর ছিল সদা হাস্যোজ্জ্বল, নম্র ভদ্র। সে ছিল মিতব্যয়ী। তার ব্যাপারে কেউ কোনো দিন অভিযোগ করেনি। বড় ভাই নাইমুল ইসলাম বলছিলেন যে, আমাদের একটা আশা ছিল পরিবারে একজন ভাই শিক্ষিত হিসেবে তৈরি হচ্ছে কিন্তু ভাগ্যের নির্মম পরিহাস আল্লাহ তাকে আমাদের মধ্য থেকে একটি ফুটন্ত গোলাপ হিসেবে কবুল করেছেন।

প্রতিবেশির প্রতিক্রিয়া
সুন্দরপুর ইউনিয়ন আমীর ডা. মো: তাইজুদ্দনি বলেন, তিনি আসলে আনুগত্য পরায়ন ছিলেন। সংগঠনের জন্য এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত ছুটে বেড়াতেন যেন অবসরের কোনো বালাই নেই।

প্রত্যক্ষদর্শীর প্রতিক্রিয়া
তৎকালীন দায়িত্বশীল মো: নাজিমুদ্দিন বুলবুল বলেন, তার আনুগত্য আমাকে তথা সকল দায়িত্বশীলদেরকে মুগ্ধ করতো। তিনি বলেছেন আহত হওয়ার পর আব্দুর শাকুর ভাই কালেমা তাইয়্যেবা পড়তে পড়তে শাহাদাত বরণ করেন। তার মধ্যে বড় আকাক্ষা হলো শাহাদাতের তামান্না।

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ আব্দুস শাকুর

পিতা

মু. আলতাফুর রহমান

মাতা

খাইরুন নেসা

জন্ম তারিখ

নভেম্বর ৩০, -০০০১

ভাই বোন

৩ ভাই ২ বোন ( তিনি ৪র্থ)

স্থায়ী ঠিকানা

গ্রাম- ছাবানিয়া, ডাকঘর- কালীনগর, থানা ও জেলা- চাঁপাইনবাবগঞ্জ।

সাংগঠনিক মান

কর্মী

সর্বশেষ পড়ালেখা

শাহদাত বরণ করার সময় কালীনগর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এসএসসি ফলপ্রার্থী ছিলেন

শাহাদাতের স্থান

পবা থানার দারুশা গ্রামে


শহীদ আব্দুস শাকুর

ছবি অ্যালবাম: শহীদ আব্দুস শাকুর


শহীদ আব্দুস শাকুর

ছবি অ্যালবাম: শহীদ আব্দুস শাকুর