মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০১৯

কথিত অস্ত্র উদ্ধারের সাথে ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে সমকাল ও আমাদের সময় পত্রিকার মনগড়া প্রতিবেদন ও পুলিশের বানোয়াট বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে দৈনিক সমকাল, আমাদের সময়ে ‘ঢাকায় কেন ভারী অস্ত্র’ শীর্ষক বানোয়াট প্রতিবেদন ও ঢাকা মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার ডিআইজি মনিরুল ইসলামের মিথ্যাচার এবং ভিত্তিহীন বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক প্রতিবাদ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন ও সেক্রেটারি জেনারেল সিরাজুল ইসলাম বলেন, দৈনিক সমকাল ও আমাদের সময়ের ভারসাম্যহীন বানোয়াট প্রতিবেদনকে সমৃদ্ধ করতে ঢাকা মহানগর পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কমিশনার ডিআইজি মনিরুল ইসলাম কোন তথ্য প্রমাণ ছাড়াই বিদ্বেষপ্রসূত বক্তব্য দিয়েছেন।

ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে এসব প্রতিবেদন এবং পুলিশ কর্মকর্তার দায়িত্বহীন বক্তব্য নিকৃষ্ট মিথ্যাচার। কল্পনাপ্রসূত প্রতিবেদনে জঙ্গিদের সাথে ছাত্রশিবিরকে জড়ানোর অপচেষ্টা করা হয়েছে। আর পুলিশ কর্মকর্তা ধারণা ও বিদ্বেষের উপর ভর করে বলেছেন, জামায়াত নেতাদের ফাঁসি কার্যকরের প্রতিশোধ নিতে এসব অস্ত্র ঢাকায় আনা হতে পারে। একজন উচ্চপদস্থ পুলিশ কর্মকর্তা কিভাবে ধারণার উপর ভর করে এমন একটি গুরুতর অভিযোগ আনতে পারেন তা আমাদের বোধগম্য নয়। আসলে এই পুলিশ কর্মকর্তা ও দলীয় মনোভাবাপন্ন গণমাধ্যমগুলো

এর আগেও ছাত্রশিবিরকে জড়িয়ে অপপ্রচার চালিয়েছে যা সময়ের ব্যবধানে মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু তাদের বিদ্বেষপূর্ণ রাজনৈতিক প্রতিহিংসামূলক অবস্থান ও কুঅভ্যাসের পরিবর্তন হয়নি। আমরা স্পষ্ট করে বলতে চাই, এসব বানোয়াট কল্পকাহিনী জনগণ বহু আগেই ছুড়ে ফেলেছে। একই সাথে দলকানা গণমাধ্যম ও দায়িত্বহীন পুলিশ কর্মকর্তাকে চ্যালেঞ্জ করে বলতে চাই, ছাত্রশিবিরের সাথে জঙ্গিবাদের সামান্যতম কোন সম্পর্ক এখন পর্যন্ত কেউ প্রমাণ করতে পারেনি এবং পারবেও না। কারণ ছাত্রশিবির জঙ্গিবাদকে ঘৃণা করে। বরং গুলশানে হামলাকারী সশস্ত্র জঙ্গি ছিল আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতার ছেলে, ময়মনসিংহে জঙ্গি ছিনতাইয়ের মূল হোতা ছিল যুবলীগ নেতা।

স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও জঙ্গি ফাহিমকে ছাত্রশিবিরের সাথে জড়িয়ে মিথ্যা বক্তব্য দিয়েছিলেন যা পরে শরিয়তপুরের পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্যের মাধ্যমে মিথ্যা প্রমাণ হয়েছিল। তাছাড়াও জঙ্গিবাদী বহু ঘটনার সাথে আ.লীগের নেতাকর্মীদের সরাসরি সম্পৃক্ততা প্রমাণিত হয়েছে। অন্যদিকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রকাশ্যে আগ্নেয়াস্ত্র প্রশিক্ষণ চালিয়েছে ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসীরা। তাছাড়া প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিনই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা আগ্নেয়াস্ত্রের মহড়া দিচ্ছে ও নানা রকম নৃশংস ঘটনা ঘটাচ্ছে যা দেশবাসী দেখছে।

কিন্তু এই পুলিশ কর্মকর্তা কোন দিনই তাদের নাম মুখে আনেননি। সমকাল, আমাদের সময়ের মত দলকানা গণমাধ্যমও এসব বিষয় চাতুরতার সাথে এড়িয়ে গেছে। দেশবাসীর কাছে পরিস্কার যে সরকার নিজেদের ব্যর্থতাকে আড়াল এবং ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে মনিরুলের মত কিছু দলীয় পুলিশ কর্মকর্তাদের ব্যবহার করছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, ছাত্রশিবির নিজস্ব গঠনমূলক কর্মসূচি নিয়ে ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে। কোন প্রকার অস্ত্র বা জঙ্গিবাদের সাথে ছাত্রশিবিরের দূরতম কোন সম্পর্ক নেই। কারণ শিবির জঙ্গিবাদে বিশ্বাস করে না।

নেতৃবৃন্দ বলেন, অস্ত্রধারী সন্ত্রাসীদের এড়িয়ে গিয়ে উল্টো নিয়মতান্ত্রিক সংগঠনের বিরুদ্ধে ইনিয়ে বিনিয়ে মিথ্যাচার ও কুৎসা রটনা করা এসব সাংবাদিক ও পুলিশ কর্মকতার কোন প্রকারের দায়িত্বের মধ্যে পড়ে তা জাতির বোধগম্য নয়। কোন গোষ্ঠির ক্রীড়নক হয়ে দায়িত্ব ভূলে মিথ্যাচার করা পুলিশ ও সাংবাদিকতার পবিত্র দায়িত্বের প্রতি চরম প্রতারণা। জাতি গণমাধ্যম ও পুলিশকে আরো দায়িত্বশীল ভূমিকায় দেখতে চায়। এমন দায়িত্বহীন ভূমিকা অব্যাহত রাখলে জনগণের অনাস্থা ছাড়া তারা আর কিছুই অর্জন করতে পারবে না। যা কোনভাবেই কাঙ্খিত নয়।

নেতৃবৃন্দ আইন-শৃঙ্খলার পবিত্র দায়িত্বে নিয়োজিত থেকে মিথ্যাচার না করতে সংশ্লিষ্ট গণমাধ্যম ও পুলিশের প্রতি আহ্বান জানান।