মঙ্গলবার, ১৮ জুন ২০১৯

মিশরের সাবেক প্রেসিডেন্ট ড. মুহাম্মদ মুরসির ইন্তেকালে ছাত্রশিবিরের গভীর শোক

মিশরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একমাত্র প্রেসিডেন্ট, বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম শীর্ষ নেতা ড. মুহাম্মাদ মুরসির ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেছে ও তার শাহাদাতের কবুলিয়াতের জন্য সবাইকে আল্লাহর দরবারে দোয়া করার অনুরোধ জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ শোক বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন ও সেক্রেটারি জেনারেল মোঃ সিরাজুল ইসলাম বলেন, সারা বিশ্বের ইসলামপ্রিয় কোটি জনতার প্রিয় নেতা, মিশরে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একমাত্র প্রেসিডেন্ট, ড. মুহাম্মদ মুরসি স্বৈরাচার জালিম শাসক আব্দুল ফাত্তাহ সিসি’র আদালতে থাকা অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিঊন)। ইসলামবিরোধী বর্বর শাসকের সাজানো মামলায় আটক থাকা অবস্থায় জীবনের শেষ প্রান্তে তিনি পরিবারের সান্নিধ্য ও উন্নত চিকিৎসা-বঞ্চিত অবস্থায় ইন্তেকাল করেছেন। তার এই বেদনাদায়ক ইন্তেকালে ছাত্রশিবিরের দায়িত্বশীল, কর্মী ও বাংলাদেশের জনগণসহ সমগ্র মুসলিম বিশ্ব গভীরভাবে শোকাহত।

নেতৃবৃন্দ বলেন, শুধু মিশর নয় বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের যে জোয়ার উঠেছে তার অন্যতম কারিগর ছিলেন ড. মুহাম্মদ মুরসি। ইসলামের উত্থান ঠেকাতে আন্তর্জাতিক ইসলামবিরোধী অপশক্তির প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় জেনারেল আব্দুল ফাত্তাহ সিসি ইসলামপ্রিয় ছাত্রজনতা, নারী-শিশু-বৃদ্ধের উপর গণহত্যা চালায় এবং জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট মুরসিসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেপ্তার করে কারাপ্রকোষ্ঠে নিক্ষেপ করে। কারাগারে তাদের উপর নির্যাতনসহ বহু নেতাকর্মীকে নির্বিচারে ফাঁসি দিয়ে হত্যা করেছে বর্বর স্বৈরাচারি সিসির অবৈধ সরকার।

কিন্তু শত নির্যাতন অবিচার সত্ত্বেও ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীল ও কর্মীরা ইসলামের মহান আদর্শ থেকে চুল পরিমাণ বিচ্যুত হননি। জুলুম সহ্য করেছেন কিন্তু বাতিলের কাছে মাথা নত করেননি। ইসলামী আন্দোলনের নেতৃত্ব দেয়ার অপরাধেই মূলত তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র করেছিল সিসি কর্তৃপক্ষ। আর সে কারণেই একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরও ড. মুহাম্মদ মুরসিকে পরিবারের সান্নিধ্য ও চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত করে তিলে তিলে হত্যা করা হয়েছে। তাই আমরা আশা করি, তিনি আল্লাহর দরবারে শহীদ হিসেবে কবুলিয়াত পাবেন, ইনশাআল্লাহ।

নেতৃবৃন্দ হুশিয়ার করে দিয়ে বলেন, ইসলামী আন্দোলনের সিপাহসালারদের হত্যা করে ইসলামী বিপ্লব ঠেকানো যাবে না। ড. মুহাম্মদ মুরসি বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের প্রেরণা। তিনি ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘কুরআন আমাদের সংবিধান, রাসূল (সাঃ) আমাদের নেতা, শাহাদাত আমাদের পথ’ এবং তিনি এ দৃপ্ত ঘোষণার উপরই অটল ছিলেন। ফলে আজ সারা বিশ্বের কোটি তরুণের হৃদয় মুরসির জন্য বিগলিত। তিনি ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের জন্য অনন্তকাল প্রেরণার বাতিঘর হয়ে থাকবেন ইনশাআল্লাহ। ইসলাম রক্ষা ও প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন ভূমিকার জন্য মিশরের জনগণ ও মুসলিম বিশ্ব শ্রদ্ধার সাথেই স্মরণ করবে তাঁকে।

নেতৃবৃন্দ মরহুমের রুহের মাগফিরাত ও শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করেন এবং শোক সন্তপ্ত পরিবার ও সাথীরা যেন ধৈর্যধারণ করতে পারে সেজন্য মহান আল্লাহর কাছে দোয়া করেন।