শহীদ সাইফুল ইসলাম

৩০ নভেম্বর -০০০১ - ১৪ ডিসেম্বর ২০১৩ | ১৯১

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

শহীদের পরিচিতি:

পিতা-মাতার ৪র্থ সন্তান শহীদ সাইফুল ইসলাম ১৯৯৪ সালে নোয়াখালী জেলার অন্তর্গত কোম্পানীগঞ্জ থানার রামপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। ৮ভাই ও ৪ বোনের সংসারে দারিদ্র পিতা-মাতা সন্তানদেরকে বড় করার স্বপ্ন দেখছিলেন। বড় ও মেঝ ছেলেকে অনেক কষ্টে কামিল পাশ করান। শহীদ সাইফুল ইসলামকে জমি বিক্রয় করে পড়ালেখা করাচ্ছিলেন। অনেক বড় আশা ছিল তাকে ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে গড়ে তুলবেন। শহীদ সাইফুল দ্বীনি কাজে ব্যস্থতা মাঝেও টিউশন করে নিজের খরচ বহন করতেন। এলাকার মানুষের কাছে প্রিয়পাত্র ছিলেন তিনি। তিনি এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থী ছিলেন।

যেভাবে তিনি আল্লাহর ডাকে চলে গেলেন:
১৪.১২.২০১৩ তারিখ মিছিলে অংশ নেয়ার জন্য শহীদ সাইফুল ইসলাম বাড়ী থেকে ৯ কি.মি. দুরে বসুরহাট উপস্থিত হন। মিছিলে প্রায় ২০০০ লোক অংশগ্রহণ করে। বেলা ৩ টায় মিছিল শুরুর পর পরই সশস্ত্র পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা মুহুর্মুহ গুলিবর্ষণ করলে ঘটনাস্থলেই বুকে গুলিবিদ্ধ হয়ে শাহাদাত বরণ করেন শহীদ শহীদ সাইফুল ইসলাম। শাহাদাতের পর সাথীরা তার লাশ বাড়ীতে নিয়ে যায়। হাজার হাজার এলাকাবাসির উপস্থিতিতে জানাযা শেষে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

শাহাদাতের পূর্বের বিভিন্ন ঘটনা:
শহীদ সাইফুল সাধারণ ভাবে চলা ফেরা করতেন এবং সব সব সময় শহীদি তামান্না পোষন করতেন। তিনি ছিলেন পরিশ্রমী, আমানতদার ও আত্মসংযমী। ফজরের নামাজের জন্য সবার আগে জাগ্রত হয়ে সবাইকে নামাযের জন্য জাগিয়ে তুলতেন। শাহাদাতের পূর্বে তাঁর শেষ কথা ছিল প্রয়োজনে শহীদ হবো তবুও বাতিলকে জমিন ছেড়ে দিব না।

সামগ্রীক ঘটনার বিবরণ:
৫ই ফেব্রুয়ারি ‘১৩ ইং তারিখের পূর্ব থেকেই আওয়ামী সরকার বিশ্বখ্যাত মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মাও: মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মু. মুজাহিদ, শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাসহ ইসলামী আন্দোলনের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করে। এর বাংলার প্রতিটি জনপদে ইসলাম প্রিয় মানুষ গুলো ফুঁসে উঠে। সে থেকে অদ্যবদি জালিম সরকার অন্যায় ভাবে ইসলামী নেতৃবৃন্দকে শতাব্দীর নিকৃষ্ট মিথ্যাচার করে ফাঁসির রায় প্রদান করে। সর্বশেষ যাবজ্জীবন দন্ডপ্রাপ্ত শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে বিশ্বের নজিরবিহীন মৃত্যুদন্ডের রায় দেয় এবং তড়িঘড়ি করে ১২.১২.২০১৩ ইং রাত ১০:০১ ঘটিকায় ফাঁসি দিয়ে শহীদ করা হয়। শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির পর প্রতিবাদের ঝড় উঠে কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাটেও। সেই দিন শত শত ভাইকে সাথে নিয়ে মিছিলে নেতৃত্ব দেন ও সকল জনশক্তিকে বাতিলের বিরুদ্ধে লড়াই কারর সাহস যোগান তিনি। ১৪ই ডিসেম্বর পুলিশ প্রসাশনের অনুমতি নিয়ে শান্তিপূর্ণ ভাবে প্রতিবাদ মিছিল শুরু হলে সম্পূর্ন বিনা উস্কানিতে নিরস্ত্র ও শান্তিকামী জনতার উপর পুলিশ ও আওয়ামী ছাত্রলীগের সশস্ত্র ক্যাডাররা নির্বিচারে গুলি বর্ষন করে ফলে আব্দুল আজিজ রায়হান, সাইফুল ইসলাম, মতিউর রহমান সজিব, আব্দুস সাত্তার, মাহমুদুল ইমলাম নিশু, আবদুন নুর রাসেল ও সাইফুল ইসলাম শাহাদাত বরণ করেন।

আর সে সাথে আব্দুল্লাহ আল নোমান, সোহাগ, তুষার, মানিক, অষ্টম শ্রেণির ছাত্র উসমান গণি আলো সহ ৩০/৩৫ জন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে ব্যথা-বেদনায় মানবেতর জীবন যাপন করছে।

সাংগঠনিক মান:
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী এবং ইউনিয়ন সভাপতি।

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ সাইফুল ইসলাম

পিতা

মৌলভী নূর হোসাইন

মাতা

বিবি আয়েশা

জন্ম তারিখ

নভেম্বর ৩০, -০০০১

ভাই বোন

১২ ভাই-বোনের মধ্যে চতুর্থ

স্থায়ী ঠিকানা

নোয়াখালী জেলার কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার রামপুর গ্রাম

সাংগঠনিক মান

সাথী

সর্বশেষ পড়ালেখা

বামনী ডিগ্রি কলেজ, এইচ.এস.সি পরীক্ষার্থী

শাহাদাতের স্থান

কোম্পানীগঞ্জের বসুরহাট


শহীদ সাইফুল ইসলাম

ছবি অ্যালবাম: শহীদ সাইফুল ইসলাম


শহীদ সাইফুল ইসলাম

ছবি অ্যালবাম: শহীদ সাইফুল ইসলাম