মঙ্গলবার, ০৫ মার্চ ২০২৪

শিক্ষকের গুলিতে শিক্ষার্থী আহতের প্রতিবাদ ও শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে ছাত্রশিবিরের বিবৃতি

সিরাজগঞ্জে শহীদ মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের শ্রেণিকক্ষে শিক্ষক ডা. রায়হান শরিফের গুলিতে ৩য় বর্ষের শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমাল আহত হওয়ার প্রতিবাদ, অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি ও ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার দাবি জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, "একটি স্বনামধন্য মেডিকেল কলেজে এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় জাতি স্তম্ভিত ও চরমভাবে ক্ষুব্ধ। শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছে যে, এ শিক্ষক নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রীদের হয়রানি করত। শ্রেণিকক্ষে আগ্নেয়াস্ত্র ছাড়াও দা, ছুরি ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে আসত। শিক্ষার্থীদের অকথ্য ভাষায় গালাগাল দিত, কথায় কথায় হুমকি দিত এবং ভয় দেখাত। তাকে কেউ কিছু করতে পারবে না বলে দম্ভোক্তি করত। তার আচরণ কখনোই একজন শিক্ষক বা ডাক্তারের মতো ছিল না। বরং তার আচরণ ছিল সন্ত্রাসীর মতো।

এসব বিষয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে শিক্ষার্থীরা বহুবার জানিয়েছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষ কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। এমন মদদের ফলশ্রুতিতেই বিনা কারণে শিক্ষার্থী আরাফাত আমিন তমালকে পোষা প্রাণী আখ্যা দিয়ে ঠান্ডা মাথায় গুলি চালিয়েছে শিক্ষক নামের কলঙ্ক ডা. রায়হান শরিফ।

গুলিটি আরাফাত আমিন তমালের পা ভেদ করে আরেক শিক্ষার্থীর কানের পাশ দিয়ে চলে যায়। একটুর জন্য আরেক শিক্ষার্থী প্রাণে বেঁচে গেছে। গুলি করার পরও শিক্ষক রায়হান দম্ভোক্তি করতে থাকে এবং গুরুতর আহত শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে নিতে অন্যান্য শিক্ষার্থীদের বাধা দেয়।

ছাত্রসমাজ জানতে চায়, একজন শিক্ষক শ্রেণিকক্ষে নিয়মিত নানা রকম অস্ত্র নিয়ে আসে কীভাবে? সব জেনেও উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি কেন? শ্রেণিকক্ষে অভিভাবকতুল্য শিক্ষকের কাছে যদি একজন শিক্ষার্থীর জীবন অনিরাপদ হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা যাবে কোথায়? শিক্ষার্থীদের জান-মালের নিরাপত্তা কে দেবে? এ জঘন্য ঘটনার দায়ভার কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এড়াতে পারে না।"

নেতৃবৃন্দ বলেন, "এমনিতেই ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগের অব্যাহত সন্ত্রাসের কারণে শিক্ষার্থীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এখন শিক্ষকও শিক্ষার্থীর ওপর গুলি চালাচ্ছে। এটা কোনোভাবেই একটি সভ্য দেশের চিত্র হতে পারে না। ইতিমধ্যে শিক্ষক নামের নরপশুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু এ গ্রেফতার যদি দায়সারা বা লোকদেখানো হয়, তাহলে ছাত্রসমাজ তা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। অবিলম্বে তাকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। একই সাথে মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষকেও জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।

সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে। অন্যথায় প্রয়োজনে নিজেদের জান-মাল রক্ষায় ছাত্রসমাজ ঐক্যবদ্ধ হয়ে কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।"