শহীদ শামীম হোসেন

২৮ আগস্ট ১৯৯৩ - ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ | ১৯৬

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

১৯৬. শহীদ শামীম হোসেন
১৫ই ডিসেম্বর ২০১৩, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লাকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে অন্যায়ভাবে ফাঁসি দেয়ার প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর ডাকা হরতাল চলাকালে ৩.৩০ টায় জয়পুরহাটের হারোকি বাজারে পিকেটিং এর সময় গ্রামবাসীর সাথে আওয়ামী পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির দ্বিমুখী সংঘর্ষের সময় পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি নির্বিচারে গুলি চালালে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে শাহাদাত বরণ করেন হাতিগাড়ী দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসার মেধাবী ছাত্র ও শিবিরের কর্মী শামীম হোসেন। পিতা ইকবাল হোসেন ও মাতা সফুরা বেগম এর তিন সন্তানের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ ছেলে শামীম। তিনি জয়পুরহাট জেলার সদর থানার কড়াইমাদ্রাসার জলাটুল গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা।

শহীদের পরিচিতি:
শহীদ মোঃ শামীম হোসেন ২৮.০৮.১৯৯৩ সনে জন্ম গ্রহন করেন। পিতা-মাতার ৩ সন্তানের মধ্যে তিনি ২য়। তারা ০২ ভাই ও ০১ বোন। তিনি হাতিগাড়ী দাখিল মাদ্রাসায় নবম শ্রেণীতে লেখা-পড়া করতেন এবং শিবিরের কর্মী ছিলেন। অষ্টম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় তার ব্লাড ক্যান্সার ধরা পড়ে। ক্যান্সার চিকিৎসার কারনে দীর্ঘ দিন পড়া লেখা বন্ধ থাকে।

যেভাবে তিনি আল্লাহর ডাকে চলে গেলেন:
‘ঘটনা স্থল হালট্টীগ্রাম’ শহীদের নিজ বাড়ি থেকে প্রায় অর্ধ কিলোমিটার দুরে। ১৫ডিসেম্বর ২০১৩ তথাকথিত বিচারের নামে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ডাকে সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল চলছিল। হরতাল কর্মসূচীতে অংশ নেয়ার জন্য ঘটনাস্থলে আসেন শহীদ শামিম হোসেন। প্রতিবাদ মিছিল শুরু হলে আওয়ামী সন্ত্রাসী, পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি হামলা চালায় ও নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে। গ্রামবাসিরা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে শক্তিশালী প্রতিরোধ গড়ে তোলে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে তিনি মারাত্মক আহত হন। বিকাল ৪ টায় তাকে জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে সন্ধ্যা ৭ টায় তিনি শাহাদাত বরণ করেন। তুলাট মাঠে জানাজা শেষে জলাটুল পারিবারিক কবরস্থানে শহীদ শামীম হোসেনকে দাফন করা হয়।

শাহাদাতের পূর্বের বিভিন্ন ঘটনা :
শহীদ শামিম সর্বদা তার মা বাবাকে বলতো আমি শহীদ হতে চাই। ঘটনার দিন কর্মসূচীতে যাওয়ার সময় বাবা-মাকে বলে এসেছেন- আমি শহীদ হওয়ার জন্য যাচ্ছি।

সামগ্রীক ঘটনার বিবরণ:
১৫ডিসেম্বর ২০১৩ তথাকথিত বিচারের নামে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লার ফাঁসির প্রতিবাদে জামায়াতের ডাকে সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ছিল। এলাকার সকল কর্মসূচীই জয়পুরহাট সদর উপজেলার পুরানাপৈল ইউনিয়নের হালট্ট্রী মোড় থেকে শুরু হত। হরতাল, অবরোধ কর্মসূচী পালন করার সময় স্থানীয় হালট্টীগ্রামে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা নারকীয় হামলা চালায়। নির্বিচারে শত-শত রাউন্ড টিয়ার সেল ও গুলি বর্ষণ করতে থাকে। বিকাল ৪টায় তখন আশে পাশের সকল গ্রামের হাজার হাজার মানুষ একত্র হয়ে সন্ত্রাসী হামলার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধের গড়ে তোলে এবং শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করতে থাকে। এই হামলায় ঘটনাস্থলেই ৩জন শাহাদাত বরণ করেন।

সাংগঠনিক মান:
ইসলামী ছাত্রশিবিরের কর্মী ছিলেন।

শহীদের আপন জনদের কথা:
শহীদের গর্বিত মা, বাবা: ক্যান্সারে আমাদের সন্তান মৃত্যু বরন না করে শহীদ হওয়ায় আমরা গর্বিত এবং কলিজার টুকরো কে হারিয়ে আমরা মর্মাহত। আল্লাহ যেন শামিমকে জান্নাতবাসী করেন।
শহীদ শামিমের ভাই: শামিম সর্বদা মানুষকে বলতো- এমন কি আমাদের সবাইকে বলত- আমি শহীদ হতে চাই, আল্লাহ যেন আমাকে শহীদ হবার সুযোগ দান করেন। আমরা তার শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা করি।

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ শামীম হোসেন

পিতা

ইকবাল হোসেন

মাতা

সফুরা বেগম

জন্ম তারিখ

আগস্ট ২৮, ১৯৯৩

ভাই বোন

তিন ভাই-বোনের মধ্যে সর্বকনিষ্ঠ

স্থায়ী ঠিকানা

জয়পুরহাট জেলার সদর থানার কড়াইমাদ্রাসার জলাটুল গ্রাম

সাংগঠনিক মান

কর্মী

সর্বশেষ পড়ালেখা

হাতিগাড়ী দ্বিমুখী দাখিল মাদ্রাসা নবম শ্রেণী

শাহাদাতের স্থান

জয়পুরহাট আধুনিক হাসপাতাল


শহীদ শামীম হোসেন

ছবি অ্যালবাম: শহীদ শামীম হোসেন


শহীদ শামীম হোসেন

ছবি অ্যালবাম: শহীদ শামীম হোসেন