শহীদ সাজু হাসান

০১ জুন ১৯৯৬ - ১৫ ডিসেম্বর ২০১৩ | ১৯৫

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

শহীদের পরিচিতি:
পিতা-মাতার ৩ সন্তানের মধ্যে ৩য় শহীদ মো.সাজু ইসলাম ০১.০৬.১৯৯৬ সালে জন্ম গ্রহন করেন। ২ ভাই ও ১ বোন এবং কৃষক পিতা-মাতা সংসারে থেকে শহীদ সাজু অনেক কষ্ট করে লখা পড়া চালিয়ে যা"িছলেন। বাবা সাধারন কৃষক হওয়ার কারণে পড়ালেখার খরচই বহন করতে অনেক কষ্ট হত। তাই শহীদ সাজু কে তার নিজের লেখা পড়ার খরচের জন্য বাড়িতে প্রায় সময় কঠোর পরিশ্রম করে বাড়ির কাজ করতেন । তিনি এইচ এস সি ১ম বর্ষের ছাত্র ছিলেন।

যেভাবে তিনি আল্লাহর ডাকে চলে গেলেন:
১২.১২.১৩ তারিখে জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার তথাকথিত অবৈধ ট্রাইবুনাল কর্তৃক ফাঁসী কার্যকরের প্রতিবাদে ১৫.১২.১৩ তারিখে দেশব্যাপী হরতালের আহবান করে জামায়াতে ইসলামী। শহীদ সাজু ভাই কর্মসূচি পালনের জন্য রাতেই বাড়ি থেকে চলে আসেন এবং ১৫ ডিসেম্বর সকাল ৭ টায় থানা সভাপতি মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা পাটগ্রাম পৌরসভার সরেয় বাজার রেল লাইনের পার্শ্বে পিকেটিং করার জন্য উপস্থিত হওয়া মাত্রই পুলিশ, বিজিবি ও আওয়ামীলীগ সন্ত্রাসীরা অপর দিক থেকে এসে নির্বিচারে গুলি বর্ষণ করে। সংঘর্ষ চলার একপর্যায়ে সকাল ৮.৩০ টায় শহীদ সাজু গুলিবিদ্ধ হন। গুলিতে তার পেটের নাড়ি ভুড়ি বের হয়ে যায় এবং চিকিৎসার জন্য তাৎনিক ভাবে এম্বুলেসে করে রংপুর মেডিকেলে পাঠালে মেডিকেল গেটে সকাল ১১.৩০ টায় তিনি শাহাদাত বরণ করেন। ১৬.১২.১৩ তারিখ পোষ্টমর্টেমের পর সন্ধ্যা ৬ টায় লাশ পাটগ্রাম পৌছে। রাত ৮.৩০ টায় জানাজার শেষে পাটগ্রাম পৌরসভা সোহাগপুর বাংলাবাড়ি বাড়ির পার্শ্বে পারিবারিক কবর স্থানে তাকে দাফন করা হয়।

শাহাদাতের পূর্বের বিভিন্ন ঘটনা :
শহীদ সাজুর শহীদ হওয়ার প্রবল আকাংা ছিল। মাঝে মাঝে বাবা-মা ঘরের দরজায় তালা লাগিয়ে তাকে আবদ্ধ করে রাখতেন কিন্তু তার পরেও শহীদ সাজু ইসলাম যে কোন ভাবেই হোক প্রোগামে উপস্থিত হতেন। তিনি মায়ের কাছে মাঝে মাঝে বলতেন মা আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হতে পারি।

 

সামগ্রীক ঘটনার বিবরণ :
১২.১২.১৩ তারিখ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল আব্দুল কাদের মোল্লার অবৈধ ট্রাইবুনাল কতৃক দেয়া ম"ত্যুদন্ড কার্যকরের প্রতিবাদে ১৫.১২.১৩ তারিখ দেশব্যাপী হরতালের আহবান করে জামায়াতে ইসলামী। ১৫ ডিসেম্বর সকাল ৭ টায় থানা সভাপতি মনিরুল ইসলামের নেত"ত্বে পাটগ্রাম পৌরসভার ৯ নং ওর্য়াডের সরেয় বাজারে রেল লাইনের পার্শ্বে শান্তিপূর্ণ পিকেটিং ও মিছিলের উপর আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সহ পুলিশ ও বিজিবি নির্বিচারে গুলি চালায়। এলাকাবাসী সমবেত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলে, ফলে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ে। সকাল ৮.৩০ টায় শহীদ সাজু ইসলাম গুলিবিদ্ধ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। গুলি তার পেটে লেগে অপর পাশ দিয়ে বের হয়ে যায় এবং চিকিৎসার জন্য তাৎনিক এম্বুলেসে করে রংপুর মেডিকেলে নেয়া হলে মেডিকেল গেটে সকাল ১১.৩০ টায় তিনি শাহাদাত বরণ করেন। এছাড়াও আরো ১০/১৫ জন ভাই গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গুরুতর আহত হন। জনগনের প্রতিরোধ মুখর অবস্থা দেখে দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত উপজেলা নিবার্হী কর্মকতা রফিকুল ইসলাম ১৪৪ ধারা জারি করেন এবং প্রশাসন ও আওয়ামীলীগকে রা করার চেষ্টা করেন।

সাংগঠনিক মান:
ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাথী এবং পাটগ্রাম পশ্চিম সাথী শাখার পৌর পূর্ব উপশাখার সেক্রেটারী ছিলেন।

শহীদের আপন জনদের কথা:
মাতা: আমার সাজু সব সময় আমাকে বলত মা তুমি আমার জন্য দোয়া কর আমি যেন আল্লাহর রাস্তায় শহীদ হতে পারি।
পিতা: সাজু আমার কলিজার টুকরা ও নাই আমার কিছু নাই। জানাযার পূর্বে তিনি বলেন আমার ছেলের জন্য দোয়া করবেন সে যেন জান্নাত বাসি হয়।
ভাই-বোন: ভাই বলেন আমাকে ভাইয়া বলে আর কে ডাকবে। একমাত্র বোন ছোট ভাইকে হারিয়ে মোকে পাথর হয়ে গেছেন।
এলাকাবাসী: সাজু এলাকার সকলের অতি প্রিয় ছিল। আমরা সাজু ভাইয়ের শহীদি মর্যাদা এবং জান্নাত কামনা করি।
সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনের বিবরনঃ পাটগ্রাম পশ্চিম সাথী শাখার পৌর পূর্ব উপশাখার সেক্রেটারী পাটগ্রাম ও সর্বশেষ পৌর টেকনিক্যাল কলেজ সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছিলেন। শহীদ সাজু ইসলাম ভাই স্থানীয় শিবিরের দায়িত্বশীলদের মাধ্যমে দাওয়াত পেয়ে ২০০৯ সালের প্রথম দিকে সমর্থক হন এবং ২০১১ সালে সাথী শপথ নেন।
শিাগত যোগ্যতা : এইচ এস সি ১ম বষ

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ সাজু হাসান

পিতা

মোক্তার হোসেন

মাতা

আমেনা বেগম

জন্ম তারিখ

জুন ১, ১৯৯৬

ভাই বোন

তিন ভাই-বোনের মধ্যে সবার ছোট

স্থায়ী ঠিকানা

লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের সোহাগপুর বাংলাবাড়ি

সাংগঠনিক মান

সাথী

সর্বশেষ পড়ালেখা

পাটগ্রাম পৌর টেকনিক্যাল কলেজ ১ম বর্ষ

শাহাদাতের স্থান

রংপুর মেডিক্যাল হাসপাতাল


শহীদ সাজু হাসান

ছবি অ্যালবাম: শহীদ সাজু হাসান


শহীদ সাজু হাসান

ছবি অ্যালবাম: শহীদ সাজু হাসান