শহীদ হাফেজ রাশেদুল ইসলাম

২০ জানুয়ারি ১৯৯৩ - ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ | ১৪৬

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

“শিশুর মতো আহাজারি করে কেঁদে ওঠেন ৬০ বছর বয়সী বাবা আনোয়ারুল হক। অস্ফুট কণ্ঠে বলেন, ‘ও ছিল আমার বাবার মতো! এ যুগের মানুষ নয়, আগের যুগের মতো। ৩ দিন পর ডুবে থাকা লাশ তোলা হয় কিন্তু লাশের কোন বিকৃতি হয়নি। কাফনে তাজা রক্ত ঝরে পড়েছে। অনেক আলেম দেখে বলেছেন ‘এক বাক্য শহীদ’।”

শহীদের পরিচিতি
হাফেজ রাশিদুল ইসলাম চুয়াডাঙ্গ জেলার জীবননগর উপজেলার আন্দর বাড়িয়া গ্রামের আনারুল হক আনোয়ারের ছেলে। তারা পরিবারসহ রাজশাহীর জিন্নাহ নগর এলাকায় থাকতেন। রাজশাহী নগরীর আল জামিয়া আল্লামা কাসেমিয়া মাদরাসার ছাত্র ছিলেন ১৮ বছরের তরুণ হাফেজ রাশিদুল ইসলাম। পড়ালেখা করতেন হেদায়েতুন্নাহু শ্রেণীতে। ৪ ভাই আর ৩ বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন পঞ্চম। স্বপ্ন ছিল পড়ালেখা শেষ করে ভালো আলেম হওয়া এবং ইসলামের প্রচার করা। এ জন্য আল্লামা সাঈদীর ওয়াজের ক্যাসেট শুনে ওয়াজের প্র্যাকটিস করতেন। তার মোবাইলেও ওয়াজ শুনার ব্যবস্থা করেছিলেন। কিন্তু পুলিশের নির্মম আচরণ তরুণ হাফেজ রাশিদুলের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে দিল না। পুত্রহারা রাশিদুলের বাবা-মা শোকে দিশেহারা। শহীদ হাফেজ রাশিদুল এখন শুধুই স্মৃতি, শুধুই ইতিহাস।

যেভাবে তিনি আল্লাহর ডাকে চলে গেলেন
সেদিন ছিল শুক্রবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৩। এ দিনটিতে ছিল রাজধানীর শাহবাগের নাস্তিক-ব্লগারদের অবস্থানের প্রতিবাদে ইসলামী দলগুলোর ডাকা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ। কর্মসূচিতে অংশ নিতে হাফেজ রাশিদুল ইসলাম শিকদের সাথে জুমার নামাজ পড়ে সেই ড্রেসেই মাদরাসা থেকে বের হন। মিছিলের সাথে নগরীর কেদুর মোড় পৌঁছলে পুলিশ মিছিলে হামলা চালায়। মিছিলকারীরা শহর রাস্তা বাঁধ পেরিয়ে পদ্মার তীরে পৌঁছলে পুলিশ সেখানেও ধাওয়া করে। এ সময় হাফেজ রাশিদুল ইসলামসহ অনেকে পুলিশের হাত থেকে রাক্ষা পেতে পদ্মা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন। কিন্তু নির্মম পুলিশ নৌকা নিয়ে তাদের ওপর আক্রমণ করে। এ সময় পুলিশের সাথে সরকারদলীয় লোকজনও ছিল। রাশিদুল বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করতে থাকেন। তখন সাপ মারার মতো লগি-বৈঠা দিয়ে তাদের বেধড়ক পেটাতে থাকে। অতঃপর রাশিদুল অজ্ঞান হয়ে ভাসতে থাকলে বৈঠা দিয়ে তার দেহ পানির নিচে ডুবিয়ে দিয়ে পুলিশ ২ জন মাদরাসার ছাত্রকে গ্রেফতার করে নিয়ে চলে আসে। এ ঘটনার ৩ দিন পর ২৫ ফেব্রুয়ারি বাজে কাজলা নামক স্থানে রাশিদুল ইসলামের লাশ ভেসে ওঠে। সকালে ফজরের নামাজের পর এলাকার মানুষ তাকে দেখতে পায়। তার পরিবার এক সময় ঐ এলাকায় ভাড়া থাকতেন, তাই কেউ কেউ তাকে চিনতে পারে এবং বাসায় ফোন করে জানায়। খবর পেয়ে পুলিশও আসে কিন্তু এলাকার বিক্ষুব্ধ লোকজন তাদের তাড়া দেয়।

বাদ আসর রাজশাহী নগরীতে প্রায় পাঁচ হাজার লোকের অংশগ্রহণে এবং মাওলানা আব্দুস সামাদের ইমামতিতে শহীদের জানাযা সম্পন্ন হয়। র‌্যাব-পুলিশের বেষ্টনীর কারণে জানাযা পূর্ব-পরে কোন মিছিল-বিােভ অনুষ্ঠিত হয়নি। তবে ঘরোয়া পরিবেশে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠান করা হয়। পরের দিনের জাতীয় পত্রিকায় এই নির্মম খবরটি আসে। দৈনিক আমার দেশের নিউজটি ছিল নিম্নরূপ : আমার দেশ, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৩
রাজশাহীতে গত শুক্রবার ইসলামী সমমনা ১২ দলের বিােভ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে গিয়ে পুলিশের তাড়া খেয়ে নিখোঁজ হওয়া মাদরাসা ছাত্র হাফেজ রাশিদুল ইসলামের (১৯) লাশ পদ্মা নদী থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। স্থানীয়দের সংবাদের ভিত্তিতে বোয়ালিয়া থানা পুলিশের একটি দল গতকাল সকাল সাড়ে ৮টায় মহানগরীর কেদুর মোড় এলাকার পদ্মা নদী থেকে ভাসমান অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে। নিহত হাফেজ রাশিদুল মহানগরীর নিউমার্কেট সুলতানাবাদ এলাকার কাশেমিয়া ইসলামিয়া মাদরাসার জামায়াতে নাহমীরের ছাত্র। চুয়াড়াঙ্গা জেলার জীবননগর উপজেলার আন্দোলবাড়িয়া গ্রামের আনারুল হক আনোয়ারের ছেলে। নিহতের বুকের বাঁ পাশে গুরুতর আঘাতের চিহ্ন রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ দিকে লাশ উদ্ধারের খবরে মাদরাসার শিক্ষক ও সহপাঠীদের মধ্যে শোকের মাতম বিরাজ করছে। নিহতের লাশ দেখতে নগরীর হাজার হাজার মানুষ ভিড় করে। এদিকে লাশ উদ্ধারের পর ইসলামী সমমনা দলের কর্মীরা প্রায় ৩০ মিনিট মহানগরীর সাহেবাজার তালাইমারী সড়ক অবরোধ করে রাখে। আধা ঘণ্টা অবরোধের পর পুলিশের একটি ভ্যান এলাকায় গেলে বিুব্ধ এলাকাবাসীর তোপের মুখে পিছু হটে যায়। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ ও র‌্যাব নিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করে। হাফেজ রাশিদুলের সহপাঠীরা জানান, ইসলামবিরোধী ব্লগার চক্রের ইসলাম অবমাননার প্রতিবাদে গত শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ শেষে রাজশাহী মহানগরীতে সহপাঠীদের সাথে ইসলামপন্থী ১২ দলের ডাকা বিক্ষোভে অংশ নেন হাফেজ রাশিদুল। বিক্ষোভ চলাকালে পুলিশ নির্বিচারে গুলি চালাতে চালাতে ধাওয়া করলে আত্মরার জন্য চার সহপাঠীর সাথে তিনি মহানগরীর কুমারপাড়া এলাকা দিয়ে নৌকায় পদ্মার চরে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালান। এ সময় পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছোড়ে। এ সময় একটি গুলি রাশিদুলের বুকের বাঁ পাশে লাগলে তিনি জ্ঞান হারিয়ে পদ্মা নদীতে পড়ে যান। পুলিশ তাকে উদ্ধারের চেষ্টা না চালিয়ে বাকিদের লক্ষ্য করে আরো কয়েক রাউন্ড গুলি ছুড়ে চলে যায় বলে জানান তারা। অপর একটি সূত্র জানায়, এ ঘটনার পর হাফেজ রাশিদুলের খোঁজ না পেয়ে পরদিন শনিবার সকালে বোয়ালিয়া মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন মাদরাসা কর্তৃৃপক্ষ। এ সময় পুলিশের গুলিতে হাফেজ রাশিদুল আহত হয়ে পদ্মায় নিখোঁজ হয়েছেন বলে জানানো হলে উদ্ধার তৎপরতা না চালিয়ে গড়িমসি করতে থাকে পুলিশ। সর্বশেষ পদ্মা নদী থেকে লাশ উদ্ধারের পর পুলিশ ময়নাতদন্তর- ছাড়াই তড়িঘড়ি করে লাশ দাফনের জন্য মাদরাসা কর্তৃপকে চাপ দেয় বলে অভিযোগ করেন সংশ্লিষ্টরা। একই সাথে এ নিয়ে কোনো ধরনের ‘বাড়াবাড়ি’ না করার জন্য নিহতের পরিবারকে শাসিয়ে যায় তারা।

এ অভিযোগ অস্বীকার করে মহানগরীর রোয়ালিয়া জোনের সহকারী কমিশনার (এসি) রোকনুজ্জামান বলেন, নিখোঁজ ওই মাদরাসা ছাত্রকে উদ্ধারে পুলিশি তৎপরতা অব্যাহত ছিল। তবে ওই সময় তাদের লক্ষ্য করে পুলিশ গুলি ছোড়েনি বলে দাবি করেন তিনি। তিনি আরও বলেন, নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় লাশ ময়নাতদন্ত- ছাড়াই দাফনের অনুমতি দেয়া হয়েছে। একই সঙ্গে এ নিয়ে নিহতের পরিবারকে চাপ প্রয়োগের বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।

অন্য দিকে সংবাদ পেয়ে হেফাজতে ইসলাম রাজশাহীর সভাপতি হাফেজ মাওলানা আবদুস সামাদসহ ইসলামপন্থী ১২ দলের নেতাকর্মীরা লাশ দেখতে কাশেমিয়া ইসলামিয়া মাদরাসায় গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। এ ঘটনায় সাধারণ মুসল্লিদের মধ্যে চরম উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ওই এলাকায় বিপুলসংখ্যক র‌্যাব-পুলিশ মোতায়েন করা হয়।

রাশিদুল সাধারণত মাগরিবের আগে বাড়িতে আসতেন না। শাহাদতের দুই দিন আগে রাশিদুল বিকেলে বাসায় আসেন। কিন্তু তখন তার মা বাজারে থাকায় তিনি অনেকক্ষণ বাসায় প্রবেশ করতে পারেননি। এতে তিনি মায়ের ওপর অভিমান করেন। পরে অবশ্য তা ভুলে যান। যে দিন শেষ বারের মতো বাড়ি থেকে যান সেদিন কেন যেন অনেকক্ষণ রাশিদুলের দিকে তাকিয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন তার মা। যাওয়ার দিন কালো আঙুর খাওয়া এবং ছোট বোন মুন্নীর সাথে দুষ্টুমির স্মৃতি এখনও ভুলতে পারেন না শহীদ রাশিদুলের মা।

শহীদের স্বজনদের কথা
বাবার আহাজারি : শিশুর মতো আহাজারি করে কেঁদে ওঠেন ৬০ বছর বয়সী বাবা আনোয়ারুল হক। অস্ফুট কণ্ঠে বলেন, ‘ও ছিল আমার বাবার মতো। এ যুগের মানুষ নয়, আগের যুগের মতো। ৩ দিন পর ডুবে থাকা লাশ তোলা হয় কিš' লাশের কোন বিকৃতি হয়নি কাফনে তাজা রক্ত ঝরে পড়েছে। অনেক আলেম দেখে বলেছেন, ‘ও এক বাক্যে শহীদ’।

শহীদের মা : শহীদ হাফেজ রাশিদুলের মা তার কলিজার টুকরোকে হারিয়ে পাগলপ্রায়। ছেলের স্মৃতি উল্লেখ করে বললেন, ‘ছেলে আমার খুবই ভালো ছিল। অন্য ভাইবোনদের থেকে ও ছিল ভিন্ন। আমি কোন বকা দিলে ও আমার বুকে মাথা রেখে আমাকেই আদর করতো। আর কখনই আমার কথার প্রতিবাদ করতো না। ছেলে আমার মাদরাসায় পড়লেও ইলেকট্রিক্যাল অনেক কাজ পারতো। নিজেদের বাসা ছাড়াও অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের বাসার ইলেকট্রিক্যাল কাজ বিনা পয়সায় করে দিতো, বলেই ডুকরে কেঁদে ওঠেন শহীদ রাশিদুলের মা। ছেলের ব্যবহৃত জামা-কাপড় স্মৃতিময় জিনিসপত্র জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করেন। আর ছেলে হত্যার বিচার দাবি করেন। শহীদের বোন : শহীদের ছোট বোন এইচএসসি পরীার্থী আজমিরা খাতুন মুন্নী বিষন্ন হয়ে বলেছে, তার ভাই খুব ভালো ছিল। আমাকে খুব আদর করতো ও ভালবাসতো। ভাইয়ের জন্য তার খুব খারাপ লাগে বলে জানিয়েছে সে। ভাই হত্যার জন্য পুলিশকে দায়ী করে সংশ্লিষ্ট পুলিশের শাস্তি দাবি করেছে। প্রতিবেশী সহপাঠী সবাই বলেছেন, রাশিদুল ছেলে হিসেবে খুবই ভদ্র ছিল। সে কারো সাথে কখনও বেয়াদবি করেনি। প্রতিবেশী সবাই হাফেজ রাশিদুল হত্যার জন্য শেখ হাসিনার সরকারকে দায়ী করেছে এবং বিচার চেয়েছে।

ব্যক্তিগত প্রোফাইল
নাম : শহীদ হাফেজ রাশিদুল ইসলাম

পেশা : রাজশাহী নগরীর আল জামিয়া আল্লামা কাসেমিয়া মাদরাসার ছাত্র ছিলেন ১৮ বছরের তরুণ হাফেজ রাশিদুল ইসলাম। পড়ালেখা করতেন হেদায়েতুন্নাহু শ্রেণীতে।
জন্ম তারিখ ও বয়স : ২০ জানুয়ারি, ১৯৯৩ সাল, ২১ বছর

আহত হওয়ার তারিখ : ২২ ফেব্রুয়ারি ’১৩
শাহাদাতের তারিখ : ২২ ফেব্রুয়ারি ’১৩, বিকাল ৩টা

স্থান: পদ্মা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন পুলিশ থেকে বাঁচতে, অজ্ঞান হয়ে ভাসতে থাকলে বৈঠা দিয়ে তার দেহ পানির নিচে ডুবিয়ে দেয়

দাফন করা হয় : পারিবারিক কবরস্থানে
স্থায়ী ঠিকানা : বাড়ির নাম : গ্রাম : আন্দর বাড়িয়া, ডাকঘর : আন্দর বাড়িয়া, উপজেলা : জীবননগর, জেলা : চুয়াডাঙ্গা

পিতা : মো: আনোয়ারুল হক, ৬০ বছর, মসজিদের খাদেম

মাতা : সালেহা বেগম, ৪৮ বছর, গৃহিণী

ভাইবোনের বিবরণ : মো: শরিফুল ইসলাম, গার্মেন্টসে চাকরিরত, রফিকুল ইসলাম, কুরিয়ার সার্ভিস, শামীমা খাতুন, গ"হিণী, আনোয়ারা খাতুন, গ"হিণী, আজমীরা খাতুন মুন্নি, এইচএসসি পরীার্থী, হাসিবুল ইসলাম, এইচএসসি

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ হাফেজ রাশেদুল ইসলাম

পিতা

মো: আনোয়ারুল হক

মাতা

সালেহা বেগম

জন্ম তারিখ

জানুয়ারি ২০, ১৯৯৩

ভাই বোন

৪ ভাই আর ৩ বোনের মধ্যে তিনি ছি

স্থায়ী ঠিকানা

বাড়ির নাম : গ্রাম : আন্দর বাড়িয়া, ডাকঘর : আন্দর বাড়িয়া, উপজেলা : জীবননগর, জেলা : চুয়াডাঙ্গা

সর্বশেষ পড়ালেখা

আল জামিয়া আল্লামা কাসেমিয়া মাদরাসা, হেদায়েতুন্নাহু শ্রেণীতে

শাহাদাতের স্থান

পদ্মা নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন পুলিশ থেকে বাঁচতে, অজ্ঞান হয়ে ভাসতে থাকলে বৈঠা দিয়ে তার দেহ পানির নিচে ডুবিয়ে দেয়


শহীদ হাফেজ রাশেদুল ইসলাম

ছবি অ্যালবাম: শহীদ হাফেজ রাশেদুল ইসলাম


শহীদ হাফেজ রাশেদুল ইসলাম

ছবি অ্যালবাম: শহীদ হাফেজ রাশেদুল ইসলাম