শহীদ আহমদ জায়েদ

৩০ নভেম্বর -০০০১ - ১৭ আগস্ট ১৯৯৯ | ১০২

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

সেদিন যা ঘটেছিল

১৭ আগস্ট ১৯৯৯ সাল। তৎকালীন শহর সভাপতি সামছুল ইসলাম ভাইসহ কয়েকজন ভাইয়ের উপর ছাত্রলীগ সন্ত্রাসলি নৃশংস হামলা করে (দুই দিন আগে) গুরুতর আহত করে। প্রতিবাদে জেলা সভাপতি ওমর ফারুক ভাইয়ের নেতৃত্বে আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিলপূর্ব সমাবেশে (জেলার ১৭০ জন বাছাইকৃত কর্মী নিয়ে) শহীদ আহমাদ যায়েদকে একটি ইসলামী সংগীত পরিবেশনের জন্য বলা হয়। কিন্তু তিনি কিছুণ নীরব থেকে কী যেন ভাবলেন। এর পরই মিষ্টি স্বরে আবেগময় কণ্ঠে গেয়ে উঠলেন; ‘আল্লাহর পথে যারা দিয়েছে জীবন তাদেরকে তোমরা মৃত বলোনা-বলোনা মৃত...। সমাবেশে নেতৃবৃন্দ লক্ষীপুরকে বাতিলের হাত থেকে মুক্ত করতে এবং সন্ত্রাসীদের কবল থেকে লক্ষীপুর বাসীকে উদ্ধার করতে এক কঠিন জেহাদের শপথ নেয়ার আহবান জানান। শাহাদাতের প্রেরণায় উজ্জীবিত ছাত্র জনতা যথানিয়মে বিক্ষোভ মিছিল শুরু করে। মিছিলটি তমিজ মার্কেট হয়ে থানা রোড ঘুরে আবার একাডেমিতে এসে সমাপ্ত হয়। ইতোমধ্যে তাহের বাহিনীর সকল সন্ত্রাসীরা আমাদের অফিস আক্রমণ করার উদ্দেশ্যে লক্ষীপুর সরকারী কলেজে একত্রিত হওয়ার সংবাদ পাই।

এর কিছুক্ষণ পর সন্ত্রাসীরা গো হাটা রোডে আমাদের আক্রমণের জন্য মারাত্মক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে গুলি ও বোমাবাজি করতে করতে এগিয়ে আসছে। আমি অসুস্থ শরীর নিয়ে আমাদের সকল নেতাকর্মীদেরকে ডাকলাম। নারায়ে তাকবীর শ্লোগান দিয়ে সকলে সামনের দিয়ে এগিয়ে গেলে তার পিছু হটলো। সবুজ ভাই, সাজ্জাদ , ওয়াদুদসহ প্রায় ২০/২৫ জন তাদের গুলিতে মারাত্মকভাবে আহত হলো। আহতদের চিকিৎসার জন্য নেয়া হলো। জেলা সেক্রেটারী নূর নবী ভাইর নেতৃত্বে জাকারিয়া ভাইসহ ৩০/৩৫ জন কর্মী নিয়ে প্রায় এক ঘন্টা ধরে গো-হাটা মোড়ে রাস্তা ব্লক করে দাঁড়িয়ে থাকলেন। কিছুক্ষণ পরেই তারা পুণরায় সংঘবদ্ধ হয়ে গোলাবারুদ ও অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সাথে নিয়ে আমাদের উপর ঝাঁপিয়ে পড়লো। সন্ত্রাসীদের গুলিতে প্রিয় ভাই আহমাদ যাযেদ মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। লুটিয়ে পড়া অবস্থায় হাতুড়ি, লোহার রড ও হকিস্টিক দিয়ে পিটিয়ে পুরো শরীর থেতলিয়ে দেয় সন্ত্রাসীরা। এখানেই শেষ হয়নি হাযেনাদের হিংস্র ছোবল। খন্দকার মিজান ভাই তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন, পথরোধ করে রিক্সা থেকে নামিয়ে চাইনিজ কুড়াল ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে মাথার মগজ বের করে দেয় মাত্র দশম শ্রেনীর ছাত্র নিষ্পাপ এই ছোট্ট বালকটির। মাথার মগজ বের হয়ে যায় তৎকালীন চন্দ্রগঞ্জ সাথী শাখার সভাপতি নুর নবী ভাইয়ের, চোখ নষ্ট হয়ে যায় নাছির, আলমগীর ও জাহাঙ্গীরের। মারাত্মক আহত হলেন যোবায়ের ভাই (শহীদের বড় ভাই), জাকারিয়া ভাই, মনিরুল ইসলাম মিলন ভাই, মোরশেদ ভাই সহ আরো অনেকে। পুনঃহামলার আশংকা থাকায় আহতদেরকে সদর হাসপাতালে না নিয়ে ভাল চিকিৎসার জন্য ডা. ফয়েজ আহমদ সাহেব দুঃসাহসিকতার পরিচয় দিয়ে তার তত্ত্বাবধানে প্রাথমিক চিকিৎসা করেন। পরবর্তিতে ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে দীর্ঘ ২ বৎসর যাবৎ চিকিৎসা করার পরও মূল্যবান চোখ ফিরে পাননি প্রিয় ভাই নাছির, আলমগীর, ও জাহাঙ্গীর। দীর্ঘ সময় জাকারিয়া ভাইকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না, কে আবার কাকে খুঁজবে, সবাইতো আহত। মনে হচ্ছে এ যেন এক ময়দানে কারবালা। ঐদিন বিকেলেই আমরা শুনতে পাই আমাদের প্রিয় ভাই আহমাদ যায়েদ মহান প্রভুর ডাকে সাড়া দিয়ে জান্নাতে পাড়ি জমালেন। যার মন সব সময় ছিল শাহাদাতের জন্য ব্যাকুল। মুহুর্তের মধ্যে খবর চড়াতেই পড়ে গেল কান্নার রোল ।

আকাশ বাতাস যেন ভারি হয়ে ধ্বনিত হচ্ছে এক বেদনার আর্তনাদ। চতুর্দিকে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। ১৮ আগস্ট দুপুরে চক চত্ত্বরে জানাযার আয়োজন। সকলেই প্রস্তুত জানাযার জন্য, কিন্তু সন্ত্রাসীরা প্রস্তুত আরো লাশের জন্য। তারা গুলি করতে থাকে জানাযায় আগত মুসল্লীদের উপর। সাবেক জেলা সভাপতি আ ন ম আবুল খায়ের ভাই সহ আহত হলেন অনেকেই। ওরা সম্পন্ন করতে দিল না শহীদের জানাযা। সকলেই হয়ে পড়লো ছত্রভঙ্গ। আর উপায় না দেখে সন্ত্রাসের নিকট জিম্মি লক্ষীপুর বাসী শহীদ আহমাদ যায়েদের জানাযা পড়তে পারেনি চক বাজারে। সকলেই ক্ষুব্ধ কিন্তু কী আর করা, পরে দারুল আমান একাডেমীতে সংক্ষিপ্ত জানাযার মাধ্যমে এ মহান শহীদকে তার পারিবারিক কবরস্থানে তার পূর্ব পুরুষ ইসলামী আন্দোলনের অগ্রসেনানীদের সাথে শায়িত করা হয়।

যেভাবে ঘটনার সূত্রপাত
১. ১৯৯৯ সালের আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহের দিকে আলীপুরে উদ্ভূত এ কঠিন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে আমরা বাংলাদেশের ইসলামী আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ও সাবেক এমপি আলহাজ্ব মাস্টার শফিক উল্লাহ সাহেব ও প্রাক্তন জেলা আমীর মাস্টার হাছানুজ্জামান স্যার এর সাথে পরামর্শ করছিলাম। আলোচনার মাঝ পথেই শুনতে পেলাম আমাদের পার্শ্ববর্তী গো-হাটার মোড়ে সন্ত্রাসীরা আমাদের প্রিয় শফিক ভাইকে (তৎকালীন পৌর জামায়াতের সেক্রেটারী) গুলি করে মারাত্মক ভাবে আহত করেছে, তার মাথা থেকে ফিনকি দিয়ে রক্ত বের হচ্ছে অথচ তাকে চিকিৎসা করার জন্য কেউ যেতে পারছেনা, আমরা কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়লাম।

২. সামাদ স্কুলের মোড় থেকে কয়েকজন ছাত্রলীগ সন্ত্রাসী আমাদের সামাদ স্কুলের সভাপতি আব্দুস শহীদ ও জামাল ভাইয়ের পথ রোধ করে তাদেরকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। তৎকালীন শহর সভাপতি হিসেবে আমি ও সেক্রেটারী শামসুল ইসলাম ভাইয়ের উপর থানায় অভিযোগ করে সাইকেল উদ্ধারের দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। এর পূর্বে জেলা সেক্রেটারী ফারুক হুসাইন, নুর নবী ভাই ও জাকির হোসেন সবুজ ভাই এ ব্যাপারে বিপ্লবের কাছে গিয়েছিলাম। কিন্তু সে আমাদের কোন পাত্তাই দেয়নি বরং উল্টো আমাদের সাথে বিভিন্ন দুর্ব্যবহার করে, সে বলেছে তোমাদের সাহস কী তোমরা আমার নিকট আবার সাইকেল চাইতে এসেছ? এই সাইকেল তোমাদের ... দিয়ে ঢুকিয়ে দেব, আমরা আশ্চর্য হয়ে যাই একজন নেতার মুখ থেকে এরকম বিশ্রি গালি কীভাবে বের হয়। যাই হোক আমরা অভিযোগ নিয়ে থানার তৎকালীন ওসি নুরুল আফসার এর সাথে দেখা করি। ওসি সাহেব টিএসআইকে দায়িত্ব দেন। সে অনুযায়ী টিএসআই সাহেব আমাদেরকে তার সাথে সরকারি কলেজের পাশে সন্ত্রাসী লিটনদের বাড়ি নিয়ে যান এবং সাইকেল নেয়ার সত্যতা যাচাই করে তিনি চলে আসেন। তার বাবা আমাদেরকে বলেছেন আগামীকাল ১২টার মধ্যে আমরা আমাদের সাইকেল পেয়ে যাব। আমি, শামছু ভাই ও আবুল কাশেম বাহার ভাই একই রিক্সায় করে আসতে থাকি, আমরা কলেজ হোস্টেলের পাশে আসলেই ২/৩ জন সন্ত্রাসী আমাদেরকে জোরপূর্বক তাদের ঘাঁটি নামে পরিচিত কলেজ হোস্টেলে ঢুকিয়ে ফেলে এবং দীর্ঘ আমাদেরকে সেখানে আটকে রেখে অপরাপর সন্ত্রাসীদের খবর দেয়, কিছুণের মধ্যেই দেখি তিনটি মোটর সাইকেলে করে কিছু সন্ত্রাসী চলে আসে।


তারা এসেই আমাদের উপর নির্যাতন শুরু করে, এক পর্যায়ে তারা হাত পা বেঁধে তাদের হোন্ডার মাঝখানে বসিয়ে নিয়ে যায় জাইল্লা টোলায় মুজিব তাহেরের পুরনো বাড়ির সামনে। অন্ধকারের মধ্যে রাস্তার এক পাশে নিয়ে আমাদের উপর উপর্যুপরি হামলা চালানো হয়। আমাদের সাথে থাকা বাহার ভাইকে গাড়িতে করে নিয়ে যায় এক অপরিচিত স্থানে এবং সেখানে তার উপর চালানো হয় অমানুষিক নির্যাতন। শামছু ভাইকে মাটিতে ফেলে পায়ে হাতুড়ি দিয়ে পেরেক মারার মত করে মারাত্মক আঘাত করছে এবং তাকে চিৎকার করতেও দিচ্ছে না। আমার হাতের কবজি কেটে ফেলার সিদ্ধান্ত করে বাড়িতে গিয়ে দা খুঁজে পায়নি। অতঃপর আমাকে একটু দূরে নিয়ে কিল ঘুষি দিয়ে প্রচণ্ডভাবে আঘাত করে এবং অতিশীঘ্রই লক্ষীপুর ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য বলে। এদিকে পুলিশ খবর পেয়ে বাহার ভাইকে তাদের কবল থেকে উদ্ধার করে এবং আমাদেরকে খুঁজতে থাকে। এদিকে আমি শামছু ভাইকে নিয়ে বহুকষ্টে সদর হাসপাতালে চলে আসি। ডাক্তাররা রোগীর অবস্থা দেখে হতভম্ব হয়ে চিকিৎসা শুরু করে। কিন্তু এখানে বেশিক্ষণ থাকা সমীচীন নয় ভেবে তাড়াতাড়ি পুলিশ পাহারায় শামছু ভাইকে নিয়ে দারুল আমান একাডেমীতে চলে যাই। যেখানে উপস্থিত সকলের মধ্যে কান্নার রোল পড়ে গেল। জরুরী পরামর্শ বৈঠকে প্রতিবাদ মিছিল করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

যেমন ছিলেন শহীদ যায়েদ
আমার মনে পড়ে ১৯৯৫ সাল থেকে একাডেমী মসজিদে নামায পড়তে গিয়ে প্রতিদিনই এশার নামাযের দ্বিতীয় কাতারে যায়েদকে দেখতাম এবং প্রতিটি নামাযে সে সবার আগে হাজির থাকতো। দেখা হলেই মিষ্টি স্বরে সালাম দিয়ে বলে উঠত ভাইয়া কেমন আছেন? সে ছিল একজন সুমধুর কণ্ঠ শিল্পী, যার গান না শুনলে যেন কোন প্রোগামই প্রাণবন্ত হতোনা।

অপরদিকে সে একজন ভালো ক্রিকেটার হিসেবেও সকলের মাঝে পরিচিত ছিল। ছিল একজন নম্র ভদ্র অমায়িক ও অনুপম সুন্দর চরিত্রের অধিকারী আল্লারহর দ্বীনের এক অকুতোভয় সৈনিক। তাকে সব সময় দেখতাম একজন আনুগত্য পরায়ন, নির্ভীক ও শাহাদাতের জন্য পাগলপারা একজন মুজাহিদ হিসেবে। আমি তখন লক্ষীপুর শহর শাখার সভাপতি এবং যায়েদ আমার অধীনে সামাদ স্কুল শাখার শাখার কর্মী। একদিন তার বাবা আমাকে বললেন যায়েদতো ইদানীং নিয়মিত স্কুলে যাচ্ছে না। আমি তার বাবার সামনেই তাকে জিজ্ঞেস করলাম। সে জবাব দিল স্কুলে গিয়ে কী লাভ হবে? দুনিয়াতে আর কয়দিন বাঁচবো? সন্ত্রাসীরা যেভাবে বেড়ে উঠেছে, তারা আমাকে স্কুলে মারতে আসে, আমাকে রাজাকার বলে গালি দেয়, আমাকে নানা অপমান অপদস্থ করছে। আপনার কেউতো কিছু বলছেন না, সন্ত্রাসীদের মোকাবেলায় কোন প্রতিবাদও করছেন না। কিন্তু আমি মনে করি এই অশান্ত লক্ষীপুরকে শান্ত করতে প্রয়োজন শহীদের। আর আমি সেই শাহাদাতের জন্য প্রস্তুত। আমরা তার কথায় আশ্চর্য হয়ে যাই। দু’জনেই যেন বাকরুদ্ধ হয়ে পড়লাম। তাকে আর কিছুই বলতে পারলাম না। তার কথাই এক পর্যায়ে বাস্তবে রূপ নিলো, শাহাদাতের অমীয় সুধা পান করে শামিল হলেন জান্নাতি সেই মিছিলে।

এক নজরে শহীদ আহমাদ যায়েদ
নাম : আহমাদ যায়েদ
পিতার নাম : মাস্টার মনির আহমদ
সর্বশেষ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান : আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়
সাংগঠনিক মান : কর্মী
অন্যান্য কৃতিত্ব : কণ্ঠ শিল্পী
জীবনের লক্ষ্য কী ছিল : ডাক্তার
আহত হওয়ার স্থান : গো-হাটা এরশাদ ভিলা মসজিদের সামনে, লক্ষীপুর
শহীদ হওয়ার স্থান : লক্ষীপুর থেকে নোয়াখালী যাওয়ার পথে
আঘাতের ধরন : গুলি
যাদের আঘাতে নিহত : বাংলাদেশ ছাত্রলীগ
শহীদ হওয়ার তারিখ : ১৭.০৮.১৯৯৯
যে শাখার শহীদ : লক্ষীপুর শহর
স্থায়ী ঠিকানা : দারুল আমান একাডেমী, গোডাউন রোড, সদর , লক্ষীপুর
ভাই-বোন : ১১ ভাই-বোন
ভাইদের মাঝে অবস্থান : ৪র্থ
ভাই বোনদের মাঝে অবস্থান : ৯ম
পরিবারের মোট সদস্য : ১৩ জন
পিতা : জীবিত, পেশা- স্কুল মাস্টার
মাতা : জীবিত, পেশা- গৃহিনী 

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ আহমদ জায়েদ

পিতা

মাস্টার মনির আহমদ

জন্ম তারিখ

নভেম্বর ৩০, -০০০১

ভাই বোন

১১ ভাই-বোন

স্থায়ী ঠিকানা

দারুল আমান একাডেমী, গোডাউন রোড, সদর , লক্ষীপুর

সাংগঠনিক মান

কর্মী

সর্বশেষ পড়ালেখা

দশম শ্রেণী, আদর্শ সামাদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়

শাহাদাতের স্থান

লক্ষীপুর থেকে নোয়াখালী যাওয়ার পথে


শহীদ আহমদ জায়েদ

ছবি অ্যালবাম: শহীদ আহমদ জায়েদ


শহীদ আহমদ জায়েদ

ছবি অ্যালবাম: শহীদ আহমদ জায়েদ