বৃহস্পতিবার, ০১ আগস্ট ২০২৪

অবৈধ সরকারের অবৈধ আদেশ জাতি ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে : ছাত্রশিবির

সম্পূর্ণ স্বৈরাচারী কায়দায় অবৈধ সরকার কর্তৃক বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন বাংলাদেশের জনগণ মানে না। অবৈধ সরকারের এই হাস্যকর সিদ্ধান্ত ছাত্রশিবিরসহ দেশের ছাত্রসমাজ ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে।

এক বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলাম বলেন, “১৯৭৭ সাল থেকে আজ অবধি বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির দেশের প্রতিটি সেক্টরে সৎ, দক্ষ ও দেশপ্রেমিক নাগরিক উপহার দিয়ে আসছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং সুন্দর একটি সমাজ বিনির্মাণের লক্ষ্যে ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিটি জনশক্তি জালেমের চোখ রাঙানি উপেক্ষা করে দেশ ও জাতির কল্যাণে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। গঠনমূলক কাজ, উন্নত নৈতিক চরিত্র ও ইসলামের সুমহান আদর্শের অনুসরণের মাধ্যমে এ কাফেলা আপামর ছাত্রজনতার আশা-ভরসার প্রতীকে পরিণত হয়েছে।

দেশের কৃষক, শ্রমিক, মজুর থেকে শুরু করে সকল শ্রেণি-পেশা ও ধর্ম-বর্ণের মানুষের ভালোবাসায় সিক্ত কাফেলা ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ বললেই এ কাফেলা নিষিদ্ধ হয়ে যায় না। নিষিদ্ধ করে কোনো আদর্শকে দাবিয়ে রাখা যায় না। সুতরাং, অবৈধ সরকার যত চেষ্টাই করুক, ছাত্রশিবিরকে দেশের মাটি ও মানুষ থেকে আলাদা করতে পারবে না। বরং রাতের আঁধারে শত শত নিরীহ আলেম হত্যা, অসংখ্য-অগণিত ইসলামপ্রিয় মানুষ হত্যা, ছোট ছোট ফুলের মতো নিষ্পাপ শিশু ও অসংখ্য ছাত্রের ওপর গণহত্যার দায়ে রক্তপিপাসু হাসিনা সরকারকেই জনতার আদালতে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ করা হবে।”

নেতৃবৃন্দ বলেন, “১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল কায়েম করে সকল রাজনৈতিক দলকে নিষিদ্ধ করেছিলেন৷ আওয়ামী লীগের ইতিহাস ভিন্নমতকে স্বৈরাচারী কায়দায় দমন-পীড়নের ইতিহাস। কিন্তু আওয়ামী লীগ বাকশালী মনোভাব লালন করলেও এর পরিণতি বেমালুম ভুলে গেছে। বাকশাল যেভাবে সীমাহীন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে ও পৃথিবী থেকে বাকশালের অস্তিত্ব মুছে গেছে; তেমনি আওয়ামী লীগের এ উদ্যোগও সীমাহীন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে এবং দেশের জনগণ বাকশালের মতো আওয়ামী লীগের অস্তিত্বও এ দেশের মাটি থেকে মুছে দিবে।

বাংলাদেশের জনগণ ইতোপূর্বে কোনো স্বৈরাচারকে মেনে নেয়নি। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে বিকিয়ে দিয়ে প্রতিবেশী প্রভুর অনুকম্পায় অবৈধভাবে দীর্ঘ ১৫ বছরের অধিক সময় ধরে ক্ষমতা দখল করে থাকা হাসিনা সরকারকেও মেনে নিচ্ছে না।”

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, “ছাত্রশিবিরকে নিষিদ্ধ ঘোষণাকারী গণহত্যা সংঘটনকারী সংগঠন আওয়ামী লীগকেই বিগত দুই মাসে জনগণ লালকার্ড দেখিয়ে দিয়েছে। ছাত্রলীগকে সাধারণ ছাত্ররা বিভিন্ন ক্যাম্পাসে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আওয়ামী লীগ ও তাদের অঙ্গসংগঠনগুলোও এখন দেউলিয়া হয়ে গেছে। দেশের সর্বস্তরের বুদ্ধিজীবী, শিক্ষক ও সচেতন মহল আজ একনায়কতান্ত্রিক ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। তাদের এই প্রজ্ঞাপন দেশের জনগণ ও ছাত্রসমাজও ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছে। ফলে সাধারণ ছাত্রজনতার ম্যান্ডেট হারিয়েছে স্বৈরাচার আওয়ামী লীগ সরকার। তাদের পতন ঘণ্টা ইতোমধ্যে বেজে গেছে।”

নেতৃদ্বয় বলেন, “ছাত্রশিবিরের একমাত্র অভিভাবক মহান আল্লাহ তায়ালা। দেশের ১৮ কোটি মানুষ এর পাহারাদার। সত্য ও সুন্দরের ঝান্ডাবাহী এই কাফেলার পথচলা একক কোনো স্বৈরাচারী দলের তথাকথিত নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তে থেমে যাবে না। মহান রবের ঘোষণা, ‘তারা আল্লাহর জ্যোতিকে তাদের মুখের ফুৎকারে নিভিয়ে দিতে চায়, কিন্তু আল্লাহ তাঁর জ্যোতিকে পূর্ণরূপে উদ্ভাসিত করবেনই; যদিও অবিশ্বাসীরা তা অপছন্দ করে’ (সূরা সফ ৬০ : ০৮)। তাই দুনিয়ার কোনো অপশক্তি আমাদের পথচলাকে থামিয়ে দিতে পারবে না।”

নেতৃবৃন্দ প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন, দেশের ছাত্রসমাজের হৃদয়ের মণিকোঠায় চির ভাস্বর হয়ে থাকবে প্রিয় এই কাফেলা। দীপ্ত পদভারে সত্য ও সুন্দরের পথে ছাত্রশিবির তার পথচলা অব্যাহত রাখবে, ইনশাআল্লাহ।

নেতৃবৃন্দ অনতিবিলম্বে এ অবৈধ প্রজ্ঞাপন বাতিল করে শুভবুদ্ধির প্রমাণ দেওয়ার আহ্বান জানান। অন্যথায় ছাত্রসমাজ ও আপামর জনতা অবৈধ সরকারের অবৈধ প্রজ্ঞাপনকে রুখে দিবে, ইনশাআল্লাহ।