রবিবার, ২৮ আগস্ট ২০২২

চা শ্রমিকদের মজুরি মাত্র ১৭০ টাকা নির্ধারণের প্রতিবাদ ও অবিলম্বে শ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে ছাত্রশিবিরের বিবৃতি

প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক চা শ্রমিকদের মজুরি মাত্র ১৭০ টাকা নির্ধারণের প্রতিবাদ ও অবিলম্বে শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমান বলেন- যুগের পর যুগ চা শ্রমিকরা অবহেলিত এবং ন্যায্য মজুরি থেকে বঞ্চিত হয়ে আসছে। দৈনিক মজুরি ৩০০ টাকা করার দাবিতে আন্দোলন করছেন চা শ্রমিকরা। নামমাত্র মজুরিতে চা শ্রমিকদের মানবেতর জীবন যাপনের করুণ চিত্র গণমাধ্যমের কল্যাণে দেশবাসী দেখেছেন ও মর্মাহত হয়েছেন। জাতি আশা করেছিলো সরকার নিষ্পেষিত শ্রমিকদের জন্য যথোপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের আর্তনাদ, মানবেতর জীবনযাপন ও আকুতিকে এড়িয়ে গিয়ে একটি বিশেষ মহলের ইচ্ছামতো মাত্র ১৭০ টাকা মজুরি নির্ধারন করে দিয়েছেন যা শ্রমিকদের সাথে তামাশা ছাড়া কিছু নয়। এ সিদ্ধান্ত কোনভাবেই মানবিক ও ন্যায়সঙ্গত নয়।

নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকার ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় যুগের পর যুগ চা শ্রমিকরা নিষ্পেষিত হয়ে আসছেন। চা শ্রমিকদের বাসস্থান চা বাগানেই এবং এখানেই তারা সারাজীবন কাটিয়ে দেন। অথচ সেখানে ‘এ’ ক্যাটাগরির চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ছিলো ১২০ টাকা। 'বি' এবং 'সি' ক্যাটাগরির শ্রমিকদের মজুরি আরও কম। তা-ও আবার কমপক্ষে ২০ কেজি চা পাতা তুলতে পারলে এ মজুরি দেওয়া হয়। এর কম হলে প্রতি কেজিতে ৬ টাকা মজুরি থেকে টাকা কেটে রাখা হয়। অন্যদিকে চা শ্রমিকরা তাদের বাসস্থানে শাক-সবজি বা কোনো ফসল চাষ করলে তাদের রেশন দেওয়া হয় না। আর শ্রমিকদের সকল অসুস্থতায় কেবল প্যারাসিটামল ট্যাবলেট ছাড়া আর কিছু দেওয়া হয় না। চা শ্রমিকদের সন্তানদের পড়াশুনারও কোনো সুযোগ দেওয়া হয় না। এটা সরাসরি শ্রমিক শোষণ। চা শ্রমিকদের যেন দাস বানিয়ে রাখা হয়েছে। এটা কোনো সভ্য সমাজ বা রাষ্ট্রের চিত্র হতে পারে না।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, শ্রমিকরা মাত্র ৩০০ টাকা দৈনিক মজুরি দাবি করেছেন যা নিত্যান্তই অপ্রতুল এবং বিদ্যমান বাজার মূল্যের তুলনায় অনেক কম। তাদের ব্যাপারে রাষ্ট্র কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না বা দায়সারা ঘোষণাও দিতে পারে না। চা শ্রমিকদের শোষন বঞ্চনা থেকে মুক্তি দিতে হবে। তাদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। এটা কোনো দয়া নয়, বরং চা শ্রমিকদের অধিকার। আমরা অবিলম্বে চা শ্রমিকদের ন্যায্য দাবি মেনে নিয়ে তাদের জীবনযাপন উপযোগী বেতন-ভাতা নির্ধারণের জন্য সরকার ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।