শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২২

প্রশ্নপত্র ফাঁসে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে ছাত্রশিবিরের বিবৃতি

আবারো এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসে গভীর উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাশেদুল ইসলাম ও সেক্রেটারি জেনারেল রাজিবুর রহমান বলেন, অযোগ্য সরকারের আরেকটি নিকৃষ্ট নজির জাতিকে দেখতে হলো। দেশের বিভিন্ন স্থানে চলমান এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। একই সাথে প্রশ্নপত্র পরিবর্তন ও নির্বিচারে নকল সরবারহের ঘটনা ঘটছে। দিনাজপুর বোর্ডের কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারীতে মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা ও কেন্দ্র সচিবের তত্ত্বাবধানে চলমান এসএসসি পরীক্ষার ৬ টি বিষয়ের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। শেরপুরেও প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। অন্যদিকে যশোর শিক্ষাবোর্ডের নড়াইল ও লোহাগড়ায় বাংলা প্রথম পত্রের এমসিকিউ প্রশ্নপত্রের পরিবর্তে দ্বিতীয় পত্রের প্রশ্ন বিতরণ করা হয়। একই সময়ে অবাধে চলছে কেন্দ্রে কেন্দ্রে নকল সরবরাহ। এসএসসি পরীক্ষায় এমন অনৈতিক, অব্যবস্থাপনা ও শিক্ষা বিধ্বংসী কর্মকান্ডে দেশবাসী হতভম্ব ও শঙ্কিত। অথচ এবারের এসএসসি পরীক্ষা শুরুর আগে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সংবাদ সম্মেলনে দাবি করা হয়েছিল, প্রশ্নপত্র ফাঁসের সুযোগ নেই। কিন্তু দিনাজপুর বোর্ডের ঘটনায় দেখা গেল, পরীক্ষার দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের মাধ্যমেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। এর আগেও জেএসসি, বিসিএস সহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে সরকারি ও দলীয় লোকদের যোগসাজসে যা প্রমাণিত হয়েছে। এই জাতি বিনাশী অপতৎপরতা রোধে প্রতিবারই শিক্ষামন্ত্রী চরম ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন এবং নানা চাতুরতার মাধ্যমে বিষয়টি ধামাচাপা দিয়েছেন। ফলে আবারো এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলো। মূলত সরকারের মদদে প্রশ্নপত্র ফাঁস, বেশি নাম্বার দেওয়ার অনৈতিক প্রক্রিয়া, ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস ও পরিকল্পিত অস্থিরতা সৃষ্টির কারণে শিক্ষা ব্যবস্থা আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে। বার বার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা জাতিকে পঙ্গু করে দেয়ার ষড়যন্ত্রের বহিঃপ্রকাশ মাত্র। আমরা মনেকরি, শিক্ষামন্ত্রীর পদে থাকার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। এই ব্যর্থতার দায়ভার গ্রহণ করে তার অবিলম্বে পদত্যাগ করা উচিৎ।

নেতৃবৃন্দ বলেন, বার বার প্রমাণ হয়েছে প্রতিটি প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িতরা সবাই সরকার দলীয় লোক। অনৈতিক প্রক্রিয়ায় অযোগ্যদের নিয়োগ ও দলীয় পরিচয়ের কারণেই তাদের এখন পর্যন্ত কোন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া হয়নি এবং তা রোধে কার্যকরী পদক্ষেপও গ্রহণ করা হয়নি। সুতরাং এর পেছনে আগামী প্রজন্মকে ধ্বংস করার সুগভীর ষড়যন্ত্র আছে তাতে কোনো সন্দেহ নেই। আমরা অবিলম্বে এই ধ্বংসাত্মক খেলা বন্ধ করার দাবি জানাচ্ছি। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ অপরাধের সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে। প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং শিক্ষামন্ত্রীকে পদত্যাগ করতে হবে। অন্যথায় জাতির ভবিষ্যৎ নিয়ে এই অনৈতিক তামাশার পরিণাম শুভ হবেনা। জাতি তাদের সন্তানদের সুন্দর ভবিষ্যৎ নষ্ট হওয়ার এই প্রক্রিয়া মেনে নেবে না।