বুধবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৮

২৮শে অক্টোবরের শহীদদের রক্ত ইসলামী আন্দোলনের ভিত্তিকে আরও সুদৃঢ় করেছে-শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের জন্য ২০০৬ সালের ২৮শে অক্টোবর একটি বিশেষ অধ্যায়। এ দিন আওয়ামী অপশক্তি বাংলার জমিন থেকে ইসলামী আন্দোলনকে ধ্বংস করে দিতে এক ভয়াবহ নারকীয়তার অবতারণা করে। কিন্তু তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়নি। বরং বুমেরাং হয়েছে। ২৮শে অক্টোবরের শহীদদের রক্ত ইসলামী আন্দোলনের ভিত্তিকে আরও সুদৃঢ় করেছে।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগরী পশ্চিম শাখার উদ্যোগে শহীদ মুজাহিদুল ইসলামের শাহাদাতের সর্বোচ্চ মর্যাদা কামনা এবং ২৮শে অক্টোবর ঐতিহাসিক পল্টন ট্রাজেডি দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি আব্দুল আলিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে মহানগরী সেক্রেটারি যোবায়ের হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হকসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, ২৮শে অক্টোবর বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে এক কলঙ্কজনক অধ্যায়। সেদিন আ.লীগ প্রধান শেখ হাসিনার দায়িত্বহীন আহবানে হায়েনারা সশস্ত্র অবস্থায় জামায়াত-শিবির নেতাকর্মীদের উপর ঝাপিয়ে পরে। তাদের লগি-বৈঠার তান্ডবে সেদিন জীবন হারাতে হয় নিরপরাধ মেধাবী ছাত্র শহীদ মুজাহিদ, ফয়সাল, মাসুম, শিপন, রফিকসহ ৬ জনকে। এই বর্বর হত্যাযজ্ঞ ও লাশের উপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের নৃত্য বিবেকবান প্রতিটি মানুষকে স্তব্ধ করে দেয়। শান্তিকামী মানুষের হৃদয় শিউরে উঠে। নোংড়া রাজনীতির ভয়ানক রুপ দেখে সারা বিশ্ববাসী। এই নৃশংসতা চালিয়ে অপশক্তি ইসলামী আন্দোলনকে ধ্বংস করে দেয়ার সুগভীর ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে তাদের সেই স্বপ্ন হতাশায় পরিণত হয়েছে। শহীদের রক্ত বৃথা যায়নি। তাদের প্রতিফোটা রক্ত আজ কথা বলেছে। সাধারণ ছাত্ররা যে কোন সময়ের তুলনায় বেশি হারে ছাত্রশিবিরের পথচলায় শরিক হয়েছে। জনগণের কাছে ছাত্রশিবিরের গ্রহণযোগ্যতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের জনগণ ছাত্রশিবিরের মাঝে আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ার কারিগর প্রত্যাশা করছে। এটাই ঐতিহাসিক বাস্তবতা। ইতিহাসের প্রতিটি বাক সাক্ষী শহীদের রক্ত কখনো বৃথা যায়নি। বাংলাদেশেও বৃথা যাবেনা ইনশাআল্লাহ।

তিনি আরও বলেন, ২৮ অক্টোবরের খুনের বিচার না হওয়া স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য লজ্জাজনক। খুনিরা এখনো বহাল তবিয়েতে আছে এবং দেশ ও ইসলাম বিরোধী নানা ষড়যন্ত্রেও নেতৃত্ব দিচ্ছে। এই খুনীদের বিচার না হওয়ায় বাংলাদেশে বিচাহীনতার সংস্কৃতির এক উজ্বল দৃষ্টান্ত। এর ফলে তাদের চক্রান্তের জাল আরো বিস্তৃত হয়েছে। নির্মমতা ও খুনের ধারা তীব্র গতি লাভ করেছে। তাদের ষড়যন্ত্র আজ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে হুমকির মুখে ফেলে দিয়েছে। সেদিন তারা জামায়াত নেতৃবৃন্দকেও হত্যা করতে চেয়েছিল। কিন্তু তখন তারা সফল না হলেও পরবর্তিতে বিচারের নামে অবিচারের মাধ্যমে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদসহ জামায়াত নেতৃবৃন্দকে হত্যা করেছে। ২৮শে অক্টোবরের লগি-বৈঠার তান্ডব থেকে শুরু করে দেশপ্রেমিক জামায়াত নেতৃবৃন্দর বিচার বিভাগীয় হত্যাকান্ড একই সূত্রে গাঁথা। আমরা বলব, সময় ও ক্ষমতা চিরদিন আওয়ামী খুনিদের বলয়ে থাকবে না। অবশ্যই ক্ষমতার পালা বদল হবে। কিন্তু ২৮শে অক্টোবরের বর্বরতার ইতিহাস কখনো মুছে যাবে না। সময়ের ব্যবধানে অবশ্যই খুনিদের বিচারের কাঁঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে। খুনিদের কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে। জাতি এই বর্বর হায়েনাদের কখনোই ভূলে যাবেনা এবং ক্ষমাও করবেনা।