মঙ্গলবার, ১৪ আগস্ট ২০১৮

কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জাতির বিবেককে জাগ্রত করেছে -শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেছেন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে কোমলমতি শিশু-কিশোররা যে নজির সৃষ্টি করেছে তা বাংলাদেশের ইতিহাসের অংশ হয়ে থাকবে। তাদের দাবি যৌক্তিক, ন্যায্য ও জনগণের প্রত্যাশিত। দেশবাসী তাদের চেতনাকে স্বাগত জানিয়েছে। কোমলমতি শিক্ষার্থীরা জাতির বিবেককে জাগ্রত করেছে।

তিনি আজ কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে ছাত্রশিবির লাঙ্গলকোট উপজেলার উদ্যোগে স্কুল ছাত্রদের মাঝে গাছের বিতরণ ও রোপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ছাত্রশিবির নাঙ্গলকোট উপজেলা উত্তর সভাপতি হাবিবুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা জেলা দক্ষিণের সভাপতি জুবায়ের ফয়সাল, কুমিল্লা মহানগরী সেক্রেটারি শাহাদাত হোসেন, নাঙ্গকোট সদর উপজেলা সভাপতি ইব্রাহিম ফয়সাল, লাঙ্গলকোট উপজেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সেক্রেটারি আনোয়ার হোসেন, বিশিষ্ট শিক্ষক আফজাল হোসেন মিয়াজী, কুমিল্লা জেলা দক্ষিণের প্রচার সম্পাদক আশেক এলাহিসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।

শিবির সভাপতি বলেন, দেশের সড়ক ব্যবস্থাপনায় যত অনিয়ম চলছিল শিক্ষার্থীরা সব হাতে নাতে ধরিয়ে দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে গাড়ি চালকদের লাইসেন্স দেখতে চাওয়ার পরই জাতি জানতে পেরেছে এ দেশের বিচারপতি, মন্ত্রী, এমপি, পুলিশ এদের গাড়িরও রেজিস্ট্রেশন নেই, ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। এরা দু:সাহসিকতার অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এরা মন্ত্রী-এমপি ও পুলিশ কর্মকর্তার সামনেই আওয়াজ তুলেছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’। যদিও কোমলমতি শিক্ষার্থীদের দাবী মানার আশ্বাস দিয়েও ছাত্র আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সরকার অপপ্রচার ও হামলা করছে। দাবী মানার ঘোষণার বিপরীত চিত্র দেখছে জনগণ। দাবী না মেনে উল্টো ছাত্রলীগকে লেলিয়ে দিয়ে সরকার চরম বাড়াবাড়ি করছে। শিক্ষার্থীরা কেউ গাড়ির লাইসেন্স দেখার চাকরি নেয়নি। তারা রাজপথে নেমেছিল শুধু অনিয়মগুলো চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেওয়ার জন্য এবং তারা তা করতে সক্ষম হয়েছে। ড্রাইভিং লাইসেন্স না থাকায় এদের সামনে লজ্জিত হয়ে পুলিশ প্রটেকশনে থাকা মন্ত্রীরা লজ্জায় গাড়ি থেকে নেমে গেছে। পুলিশরা হাত জোড় করে এদের কাছে শপথ করেছে আইন মেনে চলার। লাইসেন্স না থাকায় এক পুলিশকে দিয়ে আরেক পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা করিয়েছে। সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থাপনা কিভাবে করতে হয়ে জাতিকে এরা আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। বিশ্বে কিশোর বিপ্লবের নজির এরাই স্থাপন করেছে। শিক্ষার্থীরা তাদের দাবীকে গণদাবিতে পরিণত করেছে।

তিনি বলেন, ছাত্রশিবির এমন একটি সুশৃঙ্খল ও সবার জন্য নিরাপদ সোনার বাংলা গড়ার জন্যই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। অন্যায় অনিয়মের বিরুদ্ধে কোমলমতি শিক্ষার্থীদের অবস্থান ও দেশ প্রেম সবার মত আমাদেরও আশান্বিত করেছে। আমরা বিশ্বাস করি যোগ্যতা ও নৈতিকতার সমন্বয়ে গড়ে তুলতে পারলে এই কিশোর তরুণরাই জাতিকে প্রত্যাশিত সমৃদ্ধ সোনার বাংলা উপহার দিতে সক্ষম হবে। আমরা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, জাতির প্রকৃত কল্যাণে কাজ করতে চাইলে নীতিহীন, দূর্নীতিবাজ ও আদর্শহীনরা বাধার প্রাচীর সৃষ্টি করবে, যা ইতিমধ্যে কোমলমতি শিক্ষার্থীসহ জাতি দেখেছে। কিন্তু জাতির প্রত্যাশা পূরণে শিক্ষার্থীদের দৃঢ় প্রত্যয়ী হতে হবে। মনে রাখতে হবে, বাধার প্রাচির অতিক্রম করেই সমৃদ্ধ দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে হয়। ছাত্রসমাজের যে কোন যৌক্তিক ন্যায্য দাবী ও গঠনমূলক কাজে ছাত্রশিবিরের সমর্থন ছিল আছে এবং থাকবে ইনশাআল্লাহ। বৃক্ষরোপন, স্বাক্ষরতা অভিযান, মাদক বিরোধী কর্মসূচি, অসহায়দের মাঝে শীতবস্ত্র বিতরণ, বন্যার্তদের সহায়তা, স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবসসহ জাতীয় দিবস পালন, অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের সহায়তাসহ বিভিন্ন সমাজ কল্যাণমূলক কাজে আমরা আগামী দেশ গড়ার কারিগর শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ত করার চেষ্টা করি। কেননা আজকের কিশোর তরণদের নিয়েই আগামীর সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে চায় ছাত্রশিবির।