বৃহস্পতিবার, ১৮ মে ২০১৭

কাঙ্ক্ষিত নাগরীক তৈরীতে শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর বিকল্প নেই

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত বলেন, দেশে পর্যাপ্ত মেধা সম্পদ থাকার পরও জাতির প্রত্যাশিত অগ্রগতি লক্ষনীয় নয়। মেধাবী শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়লেও প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা জাতিকে কাঙ্ক্ষিত নাগরিক উপহার দিতে পারছেনা। কাঙ্খিত নাগরিক তৈরিতে শিক্ষাব্যবস্থাকে ঢেলে সাজাতে হবে।

তিনি আজ ফেনীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির ফেনী শহর শাখা আয়োজিত এস এস সি ও দাখিল পরীক্ষায় জিপিএ ৫ প্রাপ্তদের জন্য সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ফেনী শহর সভাপতি আবু তৈয়বের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি বলেন, প্রতি বছর শিক্ষার্থীদের ঈর্ষনীয় মেধার স্বাক্ষর প্রমাণ করে দেশে মেধা সম্পদের অভাব নেই। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে এ অমূল্য সম্পদের যথাযথ বিকাশের কোন সুযোগ দেয়া হচ্ছে না। শিক্ষা নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে। শিক্ষক, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীর অক্লান্ত পরিশ্রমে আপাত সফলতা আসলেও তার যথাযথ কাজে লাগানোর নিশ্চয়তা নেই। এমনকি জিপিএ ৫ পাওয়া বহু শিক্ষার্থী মান সম্মত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির সুযোগ পাচ্ছে না। মেধাবীরা তাদের যোগ্যতা থাকার পরও ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অধ্যায়ন করতে পারছে না। অন্যদিকে সরকার দলীয় লোকদের যোগসাজোসে ধারাবাহিক ভাবে প্রশ্ন ফাঁসের ফলে শিক্ষাব্যবস্থা আজ ভেঙ্গে পড়ার উপক্রম। শিক্ষাঙ্গনে সরকারি ছাত্রসংগঠনের সন্ত্রাস, চাঁদাবাজী, অস্ত্রবাজী, অশ্লীলতা ও মাদকের প্রসারসহ নানা অপকর্মে মেধাবীদের সাফল্যের দিকে এগিয়ে যাওয়ার পথকে কঠিন করে দিয়েছে। ফলে মেধার প্রকৃত কল্যাণ থেকে জাতি বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া ভূলে ভরা পাঠ্যপুস্তক, সেকুলার পাঠ্যসূচি ও অস্বচ্ছ মেধা মূল্যায়ন পদ্ধতির কারণে দেশ পরিচালনার জন্য কাঙ্খিত যোগ্য নেতৃত্ব গড়ে উঠছে না। এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে এবং কাঙ্ক্ষিত নাগরিক তৈরিতে গোটা শিক্ষাব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, মেধা যদি জাতির কল্যাণে আসতে না পারে সেই মেধা অর্থহীন হয়ে পড়বে। বর্তমানে হচ্ছেও তাই। এভাবে চলতে থাকলে মেধাবীরা হতাশ হয়ে পড়বে। যার মারাত্মক প্রভাব পড়বে শিক্ষা ব্যবস্থায়। জাতির অগ্রযাত্রা থেমে যাবে। যা কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায়না। সুতরাং অবিলম্বে শিক্ষা ব্যবস্থা ঢেলে সাজাতে হবে। মেধাবীদের মেধার বিকাশে সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের নিজেদের গঠনের পথে সকল প্রতিকূলতা দূর করতে হবে।

তিনি মেধাবীদের উদ্দেশ্যে বলেন, নৈতিকতাহীন মেধা কখনো জাতির কল্যাণ বয়ে আনতে পারে না। আর কুরআনের আলোকে জীবন গঠন ছাড়া নৈতিকতা সম্পন্ন কল্যাণময় জীবন গঠনও সম্ভব নয়। ছাত্রশিবির প্রতিটি মেধাবীকে জাতির কাঙ্ক্ষিত নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ছাত্রশিবির মেধাবীদের যোগ্যতা সম্পন্ন করে গড়ে তুলতে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের এই প্রচেষ্টা বিফলে যায়নি। ইতিমধ্যেই ছাত্রশিবিরের প্রচেষ্টার সফলতার বিভিন্ন নজির জাতি দেখতে পাচ্ছে। কোন মানবীয় পথ, মত বা আদর্শ নয় বরং কুরআনের আলোকে পথ চলার কারণেই ছাত্রশিবির আজ দেশে অশ্লীলতা, সন্ত্রাস, চাদাবাজি ও মাদকমুক্ত কাঙ্ক্ষিত সংগঠন। আজ আমরা দৃঢ়তার সাথে বলতে পারি ছাত্রশিবির মেধার লালন ক্ষেত্র। সুতরাং আমরা মেধাবীদের বলব, সকল শঙ্কা হতাশা দূরে ঠেলে নৈতিক শক্তিতে বলিয়ান হয়ে এগিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় গ্রহণ করতে হবে। ছাত্রশিবির সবসময় মেধাবীদের পাশে থাকবে ইনশআল্লাহ।

সংশ্লিষ্ট