শহীদ কুতুব উদ্দিন

৩০ নভেম্বর -০০০১ - ১০ জানুয়ারি ১৯৯৩ | ৫১

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

শহীদি কাফেলা বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ৫১তম শহীদ কুতুব উদ্দিন। আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন, ‘তাদেরকে হত্যা করা হয়েছে শুধুমাত্র একারণেই যে তারা সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর ঈমান এনেছে’। শহীদ কুতুব উদ্দিনের অপরাধ ছিল একটাই যে, তিনি ইসলামী জীবনবিধান প্রতিষ্ঠার কাজকে নিজের জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।

শহীদের পরিচয়
কুতুব উদ্দিন। বাবার নাম মুহাম্মদ আবদুল বারী সওদাগর। চাঁদ মিয়া সওদাগরের বাড়ি, ধুরং, ফটিংছড়ি, চট্টগ্রাম। ৪ ভাই ৩ বোনের মাঝে কুতুব উদ্দিন ছিলেন ভাইদের মধ্যে তৃতীয়। মিষ্টি কথা আর অতিথি আপ্যায়নের জন্য তিনি ছিলেন সকলের প্রিয়মুখ।

শিক্ষাজীবন
শহীদি কাফেলার কর্মী কুতুব উদ্দিন ছিলেন মেধবী মুখ। তিনি কৃতিত্বের সাথে এসএসসি পাস করেন। পরে এইচএসসি পড়ার জন্য ফটিকছড়ি ডিগ্রি কলেজে ভর্তি হন। কিন্তু মানবতার দুশমন হায়েনারা তাকে পড়াশোনা শেষ করতে দেয়নি।

সেদিনের ইতিহাসে
ফটিকছড়িতে মানুষের মুখাশধারী হায়েনার দলেরা একে একে ইসলামী আন্দোলনের ১৫ জন নিবেদিত মুজাহিদকে হত্যা করেছিল। আহত করেছিল অসংখ্য কর্মীকে। পরিবেশ ছিল শান্ত॥ সাধারণ মানুষ ধরেই নিয়েছিল ফেরাউনের প্রেতাত্মারা অসংখ্য মানুষকে আহত নিহত করে হয়তাবা ক্লান্ত হয়ে পড়ছে। কিন্তু না খুনিদের তৃষ্ণা আরো বেড়ে গেল। তারা ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের হত্যা করতে নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করতে থাকে। দিনটি ছিল ১০ই জানুয়ারি ১৯৯৩ সাল কলেজে পরিবেশ শান্ত। শহীদ কুতুব ক্লাস করার জন্য তার বিদ্যালয় ফটিকছড়ি ডিগ্রি কলেজে যান। কিন্তু না; ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা কুতুব ভাইকে অপহরণ করে পাইন্দা এর দিকে নিয়ে যায়। কুতুব ভাইকে আটক রেখে মুক্তিপণ দাবি করে। মুক্তিপণ দিয়েও বর্বরদের নিকট থেকে রক্ষা করা যায়নি কুতুবকে। তারা নির্মমভাবে হত্যা করে ইসলামী আন্দোলনের ৫১তম শহীদ কুতুব উদ্দিনকে। আজো পর্যন্ত কুতুব ভাইয়ের লাশ পাওয়া যায়নি। শহীদের পিতা-মাতা আজো জানতে পারেনি কেন তাদের সন্তানকে হত্যা করা হয়েছে, কিইবা ছিল তার অপরাধ? তবে হ্যাঁ তার অপরাধ শুধু এটাই ছিল যে তিনি ইসলামী আন্দোলনের কর্মী ছিলেন। বন্ধুদের ইসলামের দাওয়াত দিতেন, সত্য কথা বলতেন, সত্যের সাথে থাকতে বলতেন।

একনজরে শহীদ কুতুব উদ্দিন
নাম : কুতুব উদ্দিন
পিতার নাম: মরহুম মুহাম্মদ আব্দুল বারী সওদাগর
মাতার নাম : রহীমা বেগম
সাংগঠনিকমান : কর্মী
সর্বশেষ লেখাপড়া: এইচএসসি।
সর্বশেষ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান : ফটিকছড়ি ডিগ্রি কলেজ
শহীদ হওয়ার স্থান : প্রথমে পাই্দাং এর দিকে নিয়ে যায়, পরে অন্যস্থানে সরিয়ে ফেলে। আজো তার লাশ খুঁজে পাওয়া যায়নি। আঘাতের ধরন জানা যায়নি।
যাদের হাতে শহীদ : মুজিববাদী ছাত্রলীগ।
শহীদ হওয়ার তারিখ অপরহরণ ১০.০১.১৯৯৩ 
স্থায়ী ঠিকানা : চাঁন মিয়া সওদাগর বাড়ি, দুরুং, ফটিকছড়ি চট্টগ্রাম
ভাইবোনদের সংখ্যা : ৪ ভাই ৩ বোন
ভাইবোনদের মাঝে অবস্থান : ৩য়
পারিবারের মোট সদস্য : ৮ জন।
শহীদের সখ : শহীদি মৃত্যু

শহীদ হওয়ার পূর্বে স্মরণীয় বাণী
তিনি প্রায়ই বলতেন, ‘আমি শহীদ হলে আমার লাশ খুঁজে পাওয়া যাবে না’।
কিন্তু আমরা জানি যে, তিনি শাহাদাতের মাধ্যমে যে গৌরবজনক রক্ত সিঁড়ি পাড়ি দিয়েছেন তার জন্যই তিনি অমর হয়ে থাকবেন আমাদের মাঝে। যুগ থেকে যুগান্তর।

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ কুতুব উদ্দিন

পিতা

মুহাম্মদ আবদুল বারী সওদাগর

মাতা

রহীমা বেগম

জন্ম তারিখ

নভেম্বর ৩০, -০০০১

ভাই বোন

৪ ভাই ৩ বোন

স্থায়ী ঠিকানা

চাঁন মিয়া সওদাগর বাড়ি, ধুরং, ফটিকছড়ি, চট্টগ্রাম

সাংগঠনিক মান

কর্মী

সর্বশেষ পড়ালেখা

এইচ এস সি, ফটিকছড়ি ডিগ্রী কলেজ

শাহাদাতের স্থান

পাইন্দাং নিয়ে যায়, পরে গুম করা হয়, তার লাশ আজো পাওয়া যায় নি। আঘাতের ধরণ জানা যায়নি।