শহীদ জিয়াউর রহমান

১৪ জানুয়ারি ১৯৯৭ - ১৫ জুলাই ২০১৩ | ১৭৫

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

শাহাদাতের ঘটনা

“শহীদের মাতা-পিতা বলেন, আল্লাহ আমাদের সন্তনকে শহীদ হিসেবে কবুল করুন। বড় ভাই বলেন, শহীদ জিয়াউর রহমান সব সময় শাহাদাতের তামান্না পোষণ করতেন এবং শহীদদের ওপর লিখিত বইপুস্তক সব সময় পড়তেন।”

শহীদের পরিচিতি
শহীদ জিয়াউর রহমান চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার শিবগঞ্জ থানার ধুমি হায়াতপুর গ্রামে ১৯৯৭ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি পিতা মো: রফিকুল ইসলাম ও মাতা মোসা: বাদুনারা বেগমের সাত ছেলেমেয়ের মধ্যে অত্যন্ত- প্রিয় সন্তান ছিলেন। পরিবারের ইচ্ছা ছিল লেখাপড়া শিখে মানুষের মত মানুষ হবে জিয়াউর রহমান। গোবিন্দপুর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র জিয়া বন্ধুদের খুব প্রিয় ছিলেন।

যেভাবে তিনি আল্লাহর ডাকে চলে গেলেন
১৫ জুলাই ২০১৩ ছিল তথাকথিত যুদ্ধাপরাধ মামলায় আটক অধ্যাপক গোলাম আযমের রায় ঘোষণার দিন। প্রতিবাদে সারা দেশে হরতালের ঘোষণা দেয় জামায়াত। চাঁপাইনবাবগঞ্জেও শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হচ্ছিল। রোজাদার অবস্থায় জিয়াউর রহমান সেই হরতালে অংশগ্রহণ করেন। বেলা ১টায় শান্তিপূর্ণ হরতালকারীদের ওপর পুলিশ-বিজিবি বেপরোয়া গুলি চালায়। আহত অবস্থায় জিয়াউর রহমানকে রাজশাহী মেডিক্যালে নেয়ার পথে বিকেল ৩টায় শাহাদাত বরণ করেন।

সামগ্রিক ঘটনার বিবরণ
ধর্মনিরপেক্ষ আওয়ামী সরকার মতায় আসার পর থেকে ইসলামী আন্দোলনের নেতা-কর্মীদের ওপর সীমাহীন জুলুম নির্যাতন চালিয়ে আসছে। এরই ধারাবাহিকতায় তথাকথিত যুদ্ধাপরাধ মামলায় আটক জামায়াত নেতাদের একের পর এক ফাঁসির রায় দিচ্ছে অবৈধ ট্রাইব্যুনাল। ১৫ জুলাই ২০১৩ ছিল অধ্যাপক গোলাম আযমের রায় ঘোষণার দিন। প্রতিবাদে সারা দেশে হরতালের ঘোষণা দেয় জামায়াত। চাঁপাইনবাবগঞ্জেও শান্তিপূর্ণভাবে হরতাল পালিত হচ্ছিল। রোজাদার অবস্থায় জিয়াউর রহমান সেই হরতালে অংশগ্রহণ করেন। হঠাৎ বেলা ১টায় শান্তিপূর্ণ হরতালকারীদের ওপর পুলিশ-বিজিবি নৃশংসভাবে গুলি চালালে আহত হন অনেকে। মারাত্মক আহত অবস্থায় জিয়াউর রহমানকে রাজশাহী মেডিক্যালে নেয়ার পথে বিকেল ৩টায় তিনি শাহাদাত বরণ করেন। চাঁপাইনবাবগঞ্জের শহর সেক্রেটারি গোলাম মোস্তফা বলেন, এই সরকার আমাদের মানুষ মনে করছে না। পশু-পাখির মতো হত্যা করছে। মাত্র কয়েক মাসে প্রায় দেড় ডজন ইসলামী আন্দোলনের কর্মীকে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় হত্যা করা হয়েছে। সারা দেশে শত শত কর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, এই সরকার যদি মনে করে থাকে হত্যা করে গুম করে তারা পার পেয়ে যাবে তাহলে তারা ভুল করছে। প্রতিটি হত্যাকান্ডের, প্রতিটি গুমের বিচার বাংলার এই জমিনে আজ হোক কাল হোক হতেই হবে। হত্যাকান্ড চালিয়ে ইসলামী আন্দোলনকে কোনকালেই দাবিয়ে রাখা যায়নি, ভবিষ্যতেও যাবে না ইনশাআল্লাহ।

শহীদের আপনজনদের কথা
শহীদের মাতা-পিতা : আল্লাহ আমাদের সন্তানকে শহীদ হিসাবে কবুল করুন।
বড় ভাই : শহীদ জিয়াউর রহমান সব সময় শাহাদাতের তামান্না পোষণ করতেন এবং শাহীদদের ওপর লিখিত বইপুস্তুক সব সময় পড়তেন। ঈদে আমাকে একঢি সাইকেল কিনে দিতে বলেছিলেন কিন্তু তার আগেই তিনি শাহাদাত বরণ করেন।

ব্যক্তিগত প্রোফাইল
নাম : শহীদ জিয়াউর রহমান

পেশা : একাদশ শ্রেণীর ছাত্র ছিলেন।
জন্ম তারিখ ও বয়স : ১৪.০১.১৯৯৭, ১৬ বছর

আহত হওয়ার তারিখ : ১৫.০৭.২০১৩, বেলা ১টা
শাহাদাতের তারিখ : ১৫.০৭.২০১৩ বিকাল ৩টা

স্থান : রসূলপূর, শিবগঞ্জ, দাফন করা হয় : নিজ এলাকার সরকারি কবরস্থান
স্থায়ী ঠিকানা : গ্রাম : ধুমি হায়াতপুর, ডাকঘর : ধুমি হায়াতপুর, থানা : শিবগঞ্জ, জেলা : চাঁপাইনবাবগঞ্জ
পিতা : মো: রফিকুল ইসলাম, ৩ মাস আগে মারা গেছেন
মাতা : মোসা: বাদুনারা বেগম, বয়স ৫০ বছর, গৃহিণী
ভাইবোনের বিবরণ : মো: আবু বাক্কার, ব্যবসা; মোসা: আয়েশা খাতুন, গৃহিণী; মো: আজিম, ব্যবসা; মো: আনারুল, কৃষি; মোছা: ফাতেমা খাতুন, গৃহিণী; মোসা: রিমা খাতুন, গৃহিণী

এক নজরে

পুরোনাম

শহীদ জিয়াউর রহমান

পিতা

মো: রফিকুল ইসলাম

মাতা

মোসা: বাদুনারা বেগম

জন্ম তারিখ

জানুয়ারি ১৪, ১৯৯৭

ভাই বোন

৭ ভাই-বোন

স্থায়ী ঠিকানা

গ্রাম : ধুমি হায়াতপুর, ডাকঘর : ধুমি হায়াতপুর, থানা : শিবগঞ্জ, জেলা : চাঁপাইনবাবগঞ্জ

সাংগঠনিক মান

কর্মী

সর্বশেষ পড়ালেখা

গোবিন্দপুর ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণীর ছাত্র

শাহাদাতের স্থান

রাজশাহী মেডিক্যালে নেয়ার পথে


শহীদ জিয়াউর রহমান

ছবি অ্যালবাম: শহীদ জিয়াউর রহমান


শহীদ জিয়াউর রহমান

ছবি অ্যালবাম: শহীদ জিয়াউর রহমান