শনিবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০১৪

‘ফাঁসির সেলে নির্ভীক, অবিচল মুহাম্মদ কামারুজ্জামান’

৩ নভম্বর সোমবার দেশের সর্বোচ্চ আদালত জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের ট্রাইব্যুনালে প্রদত্ত রায়ের বিরুদ্ধে দায়ের করা আপীল সংখ্যাগরিষ্ট মতের ভিত্তিতে খারিজ করে দিয়ে মৃত্যুদন্ড বহাল রাখেন। এই রায় প্রচারিত হওয়ার সাথে সাথে দেশে বিদেশে অসংখ্য, অগণিত মানুষের মাঝে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা দেখা দেয়। সরকারের পক্ষ থেকে ‘রিভিউর সুযোগ নেই’, ‘শর্ট জাজমেন্টের মাধ্যমেই রায় কার্যকর করা যাবে’ রায় কার্যকর করার প্রস্তুতি গ্রহণে জেল কর্তৃপক্ষকে আইনমন্ত্রীর নির্দেশ এ ধরনের প্রচার প্রপাগান্ডা দেশের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে অস্বস্তিকর পরিস্থির সৃষ্টি করে। সংবাদ মাধ্যমে ফাঁসির প্রস্তুতী এবং মহড়ার কথা প্রচারিত হতে থাকে। সুপ্রীম কোর্টের আপীল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ জাজমেন্ট প্রকাশের পূর্বে এ ধরণের সংবাদ মানুষের মাঝে ব্যাপক উদ্বেগের সৃষ্টি করে। এমনি পরিস্থিতিতে জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামানের মামলা সংক্রান্ত তার দিক নির্দেশনার জন্য আমরা আইনজীবীগণ ৬ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে উপস্থিত হয়েছিলাম।


জনাব কামারুজ্জামানের সাথে সাক্ষাৎঃ
তখন সকাল ১০টা। ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের প্রধান ফটকের সামনের চত্ত্বর আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনির মধ্যে মিডিয়ার ব্যাপক উপস্থিতি। কারা ফটকের সামনে উপস্থিত হতেই সংবাদকর্মীগণ আমাদের দিকে ছুটে আসেন। জানতে চান কখন কামারুজ্জামানের সাথে সাক্ষাৎ হবে এবং কি আলোচনা হবে। এর মধ্যেই প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করে আমাদেরকে সাক্ষাতের জন্য ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়। নিরাপত্তা তল্লাসী শেষে আমরা কারা ফটকের মধ্যবর্তী স্থানে তার সাক্ষাতের অপেক্ষায় ছিলাম। কিছুক্ষনের মধ্যেই জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামানকে আমাদের সামনে নিয়ে আসা হলো। তখন তার পরনে ছিল কারাগারের নির্ধারিত পোশাক, চোখে চশমা। তিনি অত্যন্ত ধীর, শান্ত ও স্থিরভাবে আমাদের সামনে উপস্থিত হলেন। আসসালামু আলাইকুম বলে তিনি আমাদের সামনে দাঁড়ালেন। কারা ফটকের মধ্যবর্তী স্থান থেকে একসঙ্গে আমরা ভিতরের একটি বসার কক্ষে প্রবেশ করলাম। আসনে বসার পূর্বেই তিনি আমাদের সাথে কুলাকুলি করলেন। অত্যন্ত স্বাভাবিক ও অবিচল ছিলেন তিনি। তার সেই কুলাকুলিতে এক বেহেশতি স্পর্শ অনুভব করলাম। মনের মাঝে তখন হাজারো স্মৃতি ভীড় জমাচ্ছিল। মনে হচ্ছিল যার সাথে কুলাকুলি করছি তিনি হয়তো অল্প সময়ের ব্যবধানেই শাহাদাতের পেয়ালা পান করবেন। আবার মনে হচ্ছিল, হতে পারে এটাই আমাদের শেষ সাক্ষাৎ। আমাদের এ ভাবনার মধ্যেই তিনি ধীরে ধীরে নিজ আসনে বসতে বসতে সংগঠন, দেশ, নিজের এলাকা ও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলেন। তার প্রতিটি কথা ও দৃষ্টির মধ্যে ছিল গভীরতা। যার মৃত্যুদন্ড কার্যকরের জন্য ইতিমধ্যেই আইনমন্ত্রী কারা কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন তা জানার পরও তার মাঝে কোন অস্থিরতা নেই, ভাবান্তর নেই। স্বাভাবিকভাবে তিনি আমাদের সাথে আলোচনায় মনোনিবেশ করলেন। তিনি তার দায়ের করা আপীল খারিজের বিষয়ে আইনী পরামর্শ দিলেন।


আপীলের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ দায়েরের প্রস্তুতীর নির্দেশঃ
জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান আপীলের রায় সম্পর্কে বললেন, ‘সরকার আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে প্রহসনের বিচারের আয়োজন করে। মিথ্যা সাক্ষীর ভিত্তিতে ট্রাইব্যুনাল আমাকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করে। এই রায়ের বিরুদ্ধে স্পষ্ট গ্রাউন্ড উল্লেখ করে আমি আপীল দায়ের করি। আমি আমার নিকট সংরক্ষিত রেডিওতে প্রচারিত খবরের মাধ্যমে জানতে পারি, সংখ্যাগরিষ্ট মতের ভিত্তিতে আমার আপীল খারিজ করা হয়েছে। রায় সম্পর্কে বিস্তারিত জানা আমার সম্পূর্ণ সাংবিধানিক অধিকার। আমার বিরুদ্ধে বিচার করা হলো, অথচ: এখন পর্যন্ত প্রদত্ত রায়ের কোন কপি আমাকে দেয়া হয়নি বা কোন কর্তৃপক্ষ আমাকে আদালতের আদেশ সম্পর্কেও অবহিত করেননি। যেসব মিথ্যা অভিযোগের ভিত্তিতে ও মিথ্যা সাক্ষ্যের উপর আমাকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছে তা কল্পকাহিনী ছাড়া আর কিছু নয়। যে সোহাগ পল্লীর কথা বলা হয়েছে আমি কখনো সেই সোহাগ পল্লীতে যাই নি, এমনকি সোহাগ পল্লী আমি চিনিও না।’
তিনি রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি হাতে পাওয়ার পর পরবর্তী ৩০ দিনের মধ্যে রিভিউ দায়েরের জন্য আইনজীবী হিসেবে আমাদেরকে নির্দেশ দেন। তিনি বলেন, ‘রিভিউ নিষ্পত্তির পর আমি বিবেচনা করব মহামান্য রাষ্ট্রপতির নিকট মার্সি পিটিশন করব কিনা।’
আমি আমার মুখে কোন কটু কথা কারো বিরুদ্ধে উচ্চারণ করি নাই ঃ
জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে হত্যা ও নির্যাতনের নির্দেশদাতার অভিযোগ আনা হয়েছে। এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি নির্দেশ দেয়াতো দূরের কথা আমার মুখে একটি কটু শব্দ উচ্চারণ করে আমি কাউকে কোনদিন গালি দেই নাই। যারা আমাকে চিনেন এবং জানেন তাদের কাছে স্পষ্ট যে, কটু শব্দ উচ্চারণ আমার স্বভাব বিরুদ্ধ।’


জামায়াত কর্মীদের উদ্দেশ্যেঃ
তিনি জামায়াতের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামী আন্দোলন। ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র নতুন নয়। অতীতে যারাই ইসলামী আন্দোলন করেছেন তারাই বৈরী পরিবেশের শিকার হয়েছেন। আন্দোলনের অসংখ্য কর্মীদেরকে বিভিন্নভাবে নির্যাতন করা হয়েছে। মহাগ্রন্থ আল-কোরআনে আল্লাহ তায়ালা ঐসব নির্যাতনের বর্ণনা দিয়েছেন। নির্যাতনের মাধ্যমে দ্বীন প্রতিষ্ঠার পথ প্রশস্ত হয়। শহীদি খুন আন্দোলনকে বেগবান করে। আল্লাহ তায়ালা যদি আমাকে শাহাদাত নসিব করেন সেটা হবে আমার মহা সৌভাগ্য। শাহাদাতের মৃত্যু সকলের ভাগ্যে জুটে না। আল্লাহ যাদেরকে পছন্দ করেন তাদেরকেই শহীদ হিসেবে কবুল করেন। আমি যদি আল্লাহর পছন্দনীয় তালিকার একজন হই তাহলে সেটা সৌভাগ্য ছাড়া আর কিছু নয়। আমি জামায়াতের সর্বস্তরের কর্মীদের প্রতি আবেদন জানাতে চাই, আমার শাহাদাতের পর তারা যেন দ্বীন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে শহীদি খুনের বদলা নেয়। আমার শাহাদাতের কারণে কেউ যেন প্রতিহিংসার শিকার না হয়। ইসলামী আন্দোলনে প্রতিহিংসার কোন স্থান নেই। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমার রক্ত ইসলামী আন্দোলনকে বেগবান করবে এবং খুন রাঙ্গা পথ পাড়ি দিয়ে আমার এই প্রিয় মাতৃভূমিতে ইসলাম একদিন বিজয় লাভ করবে ইনশাআল্লাহ।’


তরুণ প্রজন্মের উদ্দেশ্যেঃ
জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান জামায়াত এবং তিনিসহ জামায়াত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে সরকার কর্তৃক কলঙ্ক আরোপের কথা উল্লেখ করে বলেন, তরুন প্রজন্মকে বিভ্রান্ত করার উদ্দেশ্যেই আমাদের চরিত্রে কলঙ্কারোপ করা হয়েছে। তাদের এই মিথ্যা অপবাদ অবশ্যই ব্যর্থ হবে। শিঘ্রই তরুণ প্রজন্ম সত্য সম্পর্কে জানতে পারবে এবং তারা সত্য প্রতিষ্ঠার জন্য ঝাপিয়ে পড়বে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, তরুণদের নেতৃত্বে এদেশে একদিন ইসলাম বিজয়ী আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। কোন জালেম শাহীর ষড়যন্ত্রই ইসলামী আন্দোলনের অগ্রযাত্রা স্তব্ধ করতে পারবে না।
তরুণ ছাত্র সমাজ ইসলামী আন্দোলনের জন্য ত্যাগ ও কুরবানীর যে নজরানা পেশ করেছে তা এদেশের ইসলাম প্রিয় জনতাকে আশান্বিত করেছে। যারা আমাদেরকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করছে তাদের ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হবে। নির্যাতন চালিয়ে কোন আদর্শিক আন্দোলনকে স্তব্ধ করা যায় না। আমি তরুণ ছাত্র সমাজের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, তোমরা আত্মগঠন ও নেতৃত্বের যোগ্যতা অর্জন করে স্বৈরশাসকের অভিশাপ থেকে জাতিকে উদ্ধার কর। জাতি তোমাদের দিকেই তাকিয়ে আছে। তোমাদের চারিত্রিক দৃঢ়তা, অনঢ় মনোবল ও সত্য প্রতিষ্ঠার অদম্য স্পৃহা ইসলামী আন্দোলনকে সাফল্যে দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।’


জনগণ জামায়াতের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েছেঃ
জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বলেন, ‘বর্তমান সরকারের পৌনে ছয় বছরের শাসনামলে জামায়াত ও ছাত্রশিবিরের উপর সীমাহীন নির্যাতনে জনগণ জামায়াতের প্রতি সহানুভূতিশীল হয়েছে। জামায়াতকে যুদ্ধাপরাধী সাব্যস্ত করার সরকারী ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হয়েছে। সরকার শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লাকে হত্যা করে ইসলামী আন্দোলনকে সামান্যতমও দূর্বল করতে পারেনি। বিগত উপজেলা নির্বাচনে এদেশের মানুষ জামায়াত সমর্থিত প্রার্থীদের বিজয়ী করে জামায়াতকেই আগামী দিনের আশ্রয়স্থল হিসেবে বেছে নেয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। অধ্যাপক গোলাম আযমের জানাযায় লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতি প্রমাণ করে দেশের জনগণ ইসলামী আন্দোলনের পক্ষে। তারা সরকারের অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ব্যক্ত করেছে। ইসলামী আন্দোলনের সফলতা বা অগ্রগতি স্তব্ধ করার ক্ষমতা কারো নেই। ইসলামী আন্দোলনের নেতা ও কর্মীদের যে রক্ত এ জমিনে ঝরেছে তা কখনো ব্যর্থ হবে না। রক্তের বদলা আল্লাহর দ্বীনের বিজয়ের মাধ্যমে মহান আল্লাহ নিজ হাতে প্রদান করবেন। সেদিন অত্যচার ও জুলুমের অবসান ঘটবে, মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসবে।’


শেষ বিচারের দিন আল্লাহ আমাদেরকে পুরস্কৃত করবেনঃ
দুনিয়ার আদালতে আমাদের উপর জুলুম করা হয়েছে। এটাই শেষ বিচার নয়। আদালতে আখেরাতেই হবে শেষ বিচার। সেদিন সর্বশ্রেষ্ঠ বিচারক ‘আহ্কামুল হাকিমিন’ মহান রাব্বুল আলামীন বিচারকের আসনে বসবেন। আজ যারা আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে, মিথ্যা সাক্ষ্য দিয়েছে এবং যারা ভুল বিচার করে আমার উপর জুলুম করেছেন তারা প্রত্যেকেই সেদিন হবেন আসামী। আর আমি হব বাদী। সেদিন আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের কাছে সমস্ত সত্য উন্মোচিত হবে। আল্লাহ তায়ালা সেদিন আমাদেরকে দুনিয়ার জীবনের জুলুমের প্রতিদান দিবেন এবং পুরস্কৃত করবেন। মুমিনদের প্রতি আল্লাহ প্রদত্ত ওয়াদা কখনো মিথ্যা হতে পারে না।


দেশবাসীর প্রতি সালাম জানাই ও দোয়া চাইঃ
জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান বলেন, ‘আমি ৫৩ মাস যাবৎ সরকারের বন্দীশালায় আটক জীবনযাপন করছি। আমিসহ জামায়াত নেতৃবৃন্দের মুক্তির দাবীতে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীগণ আন্দোলন করতে গিয়ে সরকার কর্তৃক নানাভাবে নির্যাতিত হয়েছেন। অনেকে পঙ্গু হয়েছেন, হাত, পা, চোঁখ হারিয়েছেন, অনেকে সর্বস্ব হারিয়েছেন। রিমান্ডের নামে অবর্ণনীয় নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। দেশের জনগণ আমাদের মুক্তি আন্দোলনে সমর্থন ও সহযোগীতা করেছেন। আল্লাহ তাদের সবাইকে উপযুক্ত বদলা দিবেন।
আমি দেশবাসীর প্রতি আমার সালাম জানাই এবং তাদের নিকট দোয়া চাই। দুনিয়ার জীবনে সাক্ষাৎ না হলেও আখেরাতে আমাদের সাক্ষাৎ হবে। আল্লাহ আমাদের মঙ্গল করুন। সত্য পথে অবিচল থাকার তাওফিক দিন। আমীন।’

সাক্ষাৎ শেষে জনাব মুহাম্মদ কামারুজ্জামান আবারো আমাদের সাথে কুলাকুলি করলেন। আমাদেরকে একে একে দীর্ঘক্ষণ বুকে আগলিয়ে রেখে কপালে চুমু দিলেন। দৃঢ়ভাবে উচ্চারণ করলেন জান্নাতের সিড়িতে তোমাদের সাথে আমার সাক্ষাৎ হবে ইনশাআল্লাহ্।
এক বেদনাবিধুর পরিবেশে তাকে বিদায় জানালাম। তিনি ডান হাত উঁচু করে আমাদেরকে সালাম জানাতে জানাতে কারাগারের ভিতরের অংশে প্রবেশ করলেন। সে দৃশ্য আবেগের, উদ্দীপনার ও দ্বীনের পথে জীবন উৎসর্গ করার প্রেরণার। হৃদয়ের গভীর গহনে এ স্মৃতি আমৃত্যু দেদীপ্যমান হয়ে থাকবে। আল্লাহ তায়ালা তার সকল ত্যাগ ও কুরবানী কবুল করুন। আমীন।’

সংশ্লিষ্ট