শনিবার, ২৮ জানুয়ারি ২০২৩

ফিলিস্তিনের জেনিন শরণার্থী শিবির ও গাজা উপত্যকায় দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের বর্বর হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ

দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবির এবং গাজা উপত্যকায় দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলের বর্বর হামলা ও নারী, শিশুসহ নিরপরাধ ফিলিস্তিনিদের ওপর হত্যাযজ্ঞের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। 

এক যৌথ বিবৃতিতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান ও সেক্রেটারি জেনারেল মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর আবারও ইহুদিবাদী ইসরাইল হত্যাযজ্ঞ শুরু করেছে। দখলকৃত পশ্চিম তীরের জেনিন শরণার্থী শিবিরে বর্বর হামলা চালিয়ে নারী, শিশুসহ ১০জন ফিলিস্তিনি মুসলমানকে হত্যা করেছে। এ বর্বরতায় মারাত্মকভাবে আহত হয়েছে আরও বেশ কয়েকজন মুসলমান। এমনকি গুরুতর আহতরা সঠিকভাবে চিকিৎসা পর্যন্ত পাচ্ছে না। এরই মাঝে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় বিমান হামলা চালানো হচ্ছে। আর বরাবরের মতো বিশ্ব সম্প্রদায় বিশেষ করে মুসলিম বিশ্ব একপ্রকার নীরব ও দায়সারা ভূমিকা পালন করছে- যা ইসরাইলের বর্বরতাকে আরও উসকে দিয়েছে। মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল আকসা মসজিদ নিয়ে একের পর এক উসকানিমূলক কর্মকাণ্ড করে যাচ্ছে ইসরাইল। সম্প্রতি ইসরাইলের উগ্রপন্থী মন্ত্রী বেন গেভির পবিত্র আল আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করে পবিত্র স্থানের অবমাননা করেছে। অবৈধ দখলদার ইসরাইল যখন-তখন ফিলিস্তিনের মাটিকে রক্তাক্ত করছে, গণহত্যা চালাচ্ছে। গাজা উপত্যকাকে উন্মুক্ত কারাগারে পরিণত করেছে। ফিলিস্তিনি নাগরিকদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করছে। অথচ বিশ্ব নেতৃবৃন্দ ও সংস্থাগুলো এখন পর্যন্ত ইসরাইলের বর্বর কর্মকাণ্ড থামাতে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি- যা মানবতার জন্য চরম লজ্জাজনক বিষয়।

মুসলিম নেতৃবৃন্দের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন- মুসলমানদের প্রথম কিবলা, তৃতীয় পবিত্রতম স্থান বায়তুল মুকাদ্দাস শুধু ফিলিস্তিনি মুসলমানদের সম্পদ নয়; বরং পুরো মুসলিম উম্মাহর সম্পদ। একইভাবে পবিত্র মসজিদকে রক্ষা করাও শুধু ফিলিস্তিনিদের দায়িত্ব নয়; বরং পুরো উম্মাহর দায়িত্ব। কিন্তু শুধু ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণ জীবন দিয়ে বায়তুল আকসাকে রক্ষা করে যাচ্ছে। আর প্রায় ২০০ কোটি মুসলমান ও নেতারা অস্বাভাবিক দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিচ্ছে- যা অবৈধ রাষ্ট্র ইসরাইলের ধারাবাহিক নৃসংশতার প্রতি সরাসরি উৎসাহ দেওয়ার শামিল। বিশ্ববিবেক বিশেষ করে মুসলিম উম্মাহর জন্য এটা বড়ো লজ্জার বিষয়। বারবার ফিলিস্তিনের মাটি ও পবিত্র মসজিদের প্রাঙ্গণ মুসলমানদের রক্তে রঞ্জিত হওয়ার পরও হাত গুটিয়ে বসে থাকা ঈমানের পরিপন্থি কাজ। বিশ্ব নেতৃত্ব ফিলিস্তিনিদের সাথে যুগের পর যুগ প্রতারণা করে আসছে। বিশ্বের মানবাধিকারের ছবকদাতারা ফিলিস্তিনের বর্বরতায় শুধু নীরবই থাকে না; বরং ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে ইহুদিবাদীদের সমর্থন ও সহাযোগিতা করেছে। সুতরাং আর অন্য কারও দিকে তাকিয়ে থেকে লাভ নেই। মুসলমানদের পবিত্র স্থান, ভূমি ও উম্মাহকে। রক্ষা করতে মুসলমানদেরকেই দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এখনও মুসলিম বিশ্বের নেতৃবৃন্দ হাত গুটিয়ে বসে থাকা মানে প্রথম কিবলার প্রহরী মুসলিমদের হত্যার মদদ দেওয়া। মুসলিম দেশের নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে বায়তুল আকসা ও ফিলিস্তিন মুক্ত করার ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে- এটাই সমস্ত মুসলিম উম্মাহর ব্যাকুল প্রত্যাশা।

ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়ে শিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, ফিলিস্তিনের মজলুম জনগণের জন্য আমাদের হৃদয় সিক্ত। বায়তুল আকসার প্রহরী ফিলিস্তিনের বীর জনগণের প্রতি আমাদের অকুণ্ঠ সমর্থন অব্যাহত থাকবে। আপনাদের রক্ত বৃথা যাবে না। প্রথম কিবলা ও মাতৃভূমির পবিত্রতা রক্ষায় ইহুদিবাদীদের বর্বরতায় শাহাদাতবরণকারীদের পবিত্র রক্ত বৃথা যেতে পারে না। এই বর্বরতা অবৈধ ইসরাইলের পতনকে তরান্বিত করবে, ইনশাআল্লাহ।

নেতৃবৃন্দ অবিলম্বে ইসরাইলি বর্বরতা থেকে ফিলিস্তিনিদের রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে জাতিসংঘ, ওআইসি, আরবলীগ, বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও বিশ্ববাসীর প্রতি আহ্বান জানান।