সোমবার, ২৫ এপ্রিল ২০২২

"অর্থনীতি সমৃদ্ধকরণে রাসূল সা.-এর ভূমিকা" -- হাবিবুর রহমান

মহান আল্লাহ তায়ালা মহাগ্রন্থ আল কুরআনে ইরশাদ করেছেন, ওমা আরসালনাকা ইল্লা রাহমাতাল্লিল আলামিন। অর্থ: হে নবী আপনাকে মানবজাতির জন্য রহমতস্বরূপ পাঠানো হয়েছে। সত্যি, মানুষের জন্য অফুরন্ত শান্তির বার্তা নিয়ে আগমন ঘটেছিল মানবতার মুক্তির দিশারি, সর্বকালের সবশ্রেষ্ঠ মানুষ, নবীকুলের শিরোমণি, পথহারা পথিকের পথপ্রদর্শক, অর্থনৈতিক সংস্কারক বিশ্বনবী মহামানব হযরত মুহম্মদ সা.-এর। মানবসমাজের জন্য আল্লাহ তার মাধ্যমেই পাঠিয়ে ছিলেন রহমতের অমিয় ধারা। সেই রহমতের গুণেই অন্ধকারাচ্ছন্ন, পাপ-পঙ্কিলতাময় বসুন্ধরায় আইয়্যামে জাহেলিয়াতের সমাজ ভরে উঠেছিল আলোয় আলোয়। সমস্ত পৃথিবীতে যখন পাপ-পুণ্যের, বিবেক-বুদ্ধির অন্ধ বিশ্বাসের জালে আবদ্ধ হয়ে পড়েছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে মহান আল্লাহ তায়ালার ঐশী বাণী নিয়ে হযরত মুহাম্মাদ সা. পৃথিবীতে আগমন করেন। অর্থনীতির সকল ক্ষেত্রে তাঁর দূরদর্শিতা দিয়ে যে আমূল পরিবর্তন সাধন করেছেন তা পরবর্তীতে বিশ্বের অর্থনীতিবিদদের নিকট আদর্শ হয়ে থাকে। রাসূল সা. কুরআনের নির্দেশ অনুযায়ী অর্থনীতিতে দিয়েছেন এক যুগান্তকারী নতুন কর্মসূচি।

১. হালাল উপায়ে উপার্জন ও হালাল পথেই ব্যয়:-
ইসলামী জীবনব্যবস্থা কিছু কিছু পেশা, খাদ্য ও পানীয় এবং কর্মকাণ্ডকে হারাম বা অবৈধ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। উপার্জন, ভোগ, বণ্টন ও উৎপাদন সকল ক্ষেত্রেই এ বিধান প্রযোজ্য। মানুষের জীবিকা অর্জনের দু’টি পন্থা রয়েছে। একটি হালাল অপরটি হারাম। হালাল পদ্ধতিতে যে কেউ অর্থ উপার্জনের পূর্ণ স্বাধীনতা রাখে। কিন্তু হারাম উপায়ে একটি পয়সাও উপার্জন করার সুযোগ ইসলাম দেয়নি। মানুষ যে পন্থায়ই জীবিকা অর্জন করুক তার আয় ও ব্যয় সম্পর্কে অবশ্যই আল্লাহ তাআলার নিকট জবাবদিহি করতেই হবে। রাসূল সা. বলেন, ‘কিয়ামতের দিন পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর না দেওয়া পর্যন্ত কোনো আদম সন্তানের একটি পাও নড়বে না: (১) তার জীবনকাল কোন কাজে অতিবাহিত করেছে? (২) যৌবন (শক্তি-সামর্থ্য) কোন কাজে লাগিয়েছে? (৩) তার সম্পদ কোথা থেকে উপার্জন করেছে? (৪) কোন পথে তা ব্যয় করেছে? (৫) অর্জিত জ্ঞান অনুযায়ী কতটুকু কাজ করেছে?’ (তিরমিযী: ২৪১৯)
আল্লাহ সুবহানু ওয়া তায়ালা বলেন, ‘হে মানবমণ্ডলী! তোমরা পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র খাদ্য ভক্ষণ কর।’ (সূরা বাকারা : ১৬৮)
আল্লাহ তায়ালা বলেন, আল্লাহ তোমাদের যেসব বস্তু দিয়েছেন তন্মধ্যে থেকে হালাল ও পবিত্র বস্তু খাও আর আল্লাহকে ভয় কর। (সূরা মায়িদাহ : ৮৮)

২. সুদ উচ্ছেদ:-
ইসলামে ‘সুদকে সম্পূর্ণভাবে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে। কারণ সুদের ভয়াল থাবায় দরিদ্র মানুষ আরও দারিদ্র্যের চরম সীমায় পৌঁছে যায়। সুদের ভয়াবহতার কথা তুলে ধরে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘যদি তোমরা না ছাড় তবে আল্লাহ ও তার রাসূলের পথে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও।’ (সূরা বাকারা : ২৭৯)
আল্লাহ তায়ালা বলেন, হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ তায়ালাকে ভয় কর, আর সুদের যা বকেয়া আছে তা ছেড়ে দাও, যদি তোমরা মুমিন হও।’ (সূরা বাকারা : ২৭৮)
তিনি আরও বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ তোমরা চক্রবৃদ্ধি হারে সুদ খেয়ো না এবং আল্লাহকে ভয় করো যাতে তোমরা সফলকাম হতে পারো।’ (সূরা আলে ইমরান : ১৩০)
হাদিসের বাণীতে সুদ প্রসঙ্গ : জাবের রা. থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সা. লানত করেছেন সুদগ্রহীতার ওপর, সুদদাতার ওপর, সুদের লেখকের ওপর এবং সুদের সাক্ষীদ্বয়ের ওপর এবং তিনি বলেছেন, যারা সুদ খায়, সুদ দেয়, সুদের হিসাব লিখে এবং সুদের সাক্ষ্য দেয়, রাসূল সা. তাদের ওপর লানত করেছেন এবং তারা অপরাধের ক্ষেত্রে সকলেই সমান। (সহীহ মুসলিম-৩৯৪৮)
আবু হুরায়রা রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সা. বলেছেন, সুদের ৭০টি (পাপের) স্তর রয়েছে। যার নিম্নতম (পাপের) স্তর হলো ব্যক্তি তার মায়ের সাথে জেনা করা। (ইবনু মাজাহ-২২৭৪)
সুদ উচ্ছেদের আসল উদ্দেশ্য ছিল, কার্পণ্যের পরিবর্তে বদান্যতা, স্বার্থান্ধতার পরিবর্তে সহানুভূতি ও পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা এবং সুদের পরিবর্তে যাকাত। তাই বর্তমান যুগে একটি উন্নয়ন্নশীল সমাজ ও রাষ্ট্রের সার্বিক প্রয়োজন পূরণে সক্ষম এমন একটি সুদবিহীন অর্থব্যবস্থা বাস্তবেই গড়ে তোলা সময়ের দাবি।

৩. ব্যবসায়িক অসাধুতা উচ্ছেদ:-
সর্বপ্রকার ব্যবসায়িক অসাধুতা ইসলামের দৃষ্টিতে কঠোর শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মজুদদারি, কালোবাজারি, চোরাকারবারি, মুনাফাখোরি নিষিদ্ধ। ওজনে কারচুপি, ভেজাল দেওয়া, নকল করা প্রভৃতিও জঘন্য ধরনের অপরাধ। ব্যবসায়িক অসাধুতার কারণেই সাধারণ জনগণ নিদারুণ কষ্টে দিনাতিপাত করে থাকে।
তাইতো রাসূল সা. পণ্য মজুদ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করে তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি মুসলিমদের ওপর ইহতিকার করবে অর্থাৎ, অতিরিক্ত দামের আশায় খাদ্যদ্রব্য বিক্রয় না করে মজুদ করে রাখবে, আল্লাহ তাকে কুষ্ঠরোগ ও দারিদ্র্যের কশাঘাতে শাস্তি দেন। (ইবনু মাজাহ-২১৫৫)
এ প্রসঙ্গে আল কুরআনে ঘোষণা করা হয়েছে, তোমরা মাপে ঠিক দাও এবং কারো ক্ষতি করো না, সঠিক দাঁড়িপাল্লায় ঠিকমত ওজন কর। লোকদের পরিমাপে কম বা নিকৃষ্ট কিংবা দোষমুক্ত জিনিস দিও না এবং দুনিয়াতে অশান্তি সৃষ্টি করে বেড়িয়ো না। (সূরা আশ শোয়ারা : ১৮১-১৮৩)
রাসূল সা. বলেন, ‘সত্যবাদী ও আমানতদার ব্যবসায়ী (কিয়ামতের দিন) নবীগণ, সিদ্দিকিন (অতি সত্যবাদী) ও শহীদগণের সঙ্গে থাকবে।’ (তিরমিজি-১২১২)

৪. জাকাত ব্যবস্থার প্রবর্তন:-
জাকাত ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ রোকন। কুরআনে নামাজ প্রতিষ্ঠার পরেই বহু জায়গায় জাকাতের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জাকাতের হুকুম শুধু আমাদের ওপর নয় বরং অতীতেও অন্যান্য নবীর উম্মতদের ওপর জাকাতের বিধান বলবৎ ছিল। সমাজে আয় ও বণ্টনের ক্ষেত্রে বিরাজমান পার্থক্য দূরীকরণে জাকাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। জাকাত আদায়ের ফলে ব্যক্তির অন্তঃকরণের প্রশস্ততা, পারস্পরিক ভালোবাসা, কল্যাণ কামনা, সহযোগিতা ও সহানুভূতি বৃদ্ধি পায়। অন্যদিকে যাকাত আদায় না করার ফলে ব্যক্তির আল্লাহর হুকুমের অমান্য করার পাশাপাশি কার্পণ্যতা, স্বার্থসিদ্ধিতা, হিংসা, বিদ্বেষ ও অসৎ প্রবণতা বহুগুণে বৃদ্ধি পায়। তা ছাড়া জাকাত আদায়ের ফলে সম্পদ পবিত্র হয় এমনকি বৃদ্ধিও পায়।
জাকাতের নির্দেশ দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, তাদের সম্পদ থেকে জাকাত উসুল করো যা তাদের পবিত্র ও পরিশুদ্ধ করবে। (সূরা তওবা : ১০৩)
আল্লাহ তায়ালা অন্যত্র বলেন, আল্লাহ তায়ালা যাদেরকে সম্পদশালী করেছেন অথচ তারা সে সম্পদ নিয়ে কার্পণ্য করে, তাদের ধারণা করা উচিত নয় যে, সেই সম্পদ তাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে, বরং উহা তাদের জন্য অকল্যাণকর হবে। অচিরেই কিয়ামত দিবসে, যা নিয়ে তারা কৃপণতা করেছে সে সমস্ত ধন-সম্পদকে কিয়ামতের দিন তাদের গলায় বেড়ি বানিয়ে পরানো হবে। (সূরা আলে ইমরান : ১৮০)

৫. বায়তুলমালের প্রতিষ্ঠা:-
রাসূলে করীম সা. নবগঠিত মদিনা রাষ্ট্ প্রতিষ্ঠার সাথে সাথে বায়তুলমালেরও প্রতিষ্ঠা করেন। বায়তুলমাল বলতে বিভিন্ন উৎস হতে অর্জিত ও রাষ্ট্রের কোষাগারে জমাকৃত ধন-সম্পদকেই বলা হয়। রাষ্ট্রের সীমার মধ্যে একজন লোকও যেন ক্ষুধায়, পিপাসায়, বিনা চিকিৎসায়, শীতবস্ত্র না থাকায়, বন্যায় ও খরায় এমনকি মৌলিক অধিকার হতে বঞ্চিত না হয় তার ব্যবস্থা করা বায়তুলমালের প্রধান দায়িত্ব। ইসলাম এভাবেই সকল নাগরিকের আর্থিক নিরাপত্তা বিধানের ব্যবস্থা করেছে।

৬. ভূমিস্বত্ব ব্যবস্থা বাস্তবায়ন:-
ইসলামী অর্থনীতিতে ভূমিস্বত্ব ব্যবস্থার গুরুত্ব সীমাহীন। ভূমি সকল কিছুর উৎপত্তিস্থল। আবার এই ভূমিই সব কিছুরই ধ্বংসস্থল। আর সেই জমিকে কখনও পতিত রাখাকে ইসলাম সমর্থন করে না। তাই সে জমি ব্যক্তির হোক অথবা রাষ্ট্রের হোক।
আল্লাহ তায়ালা ঘোষণা করেছেন, জমি আল্লাহ তাআলার। তাঁর বান্দাদের মধ্য থেকে তিনি যাকে ইচ্ছা উত্তরাধিকারী করবেন। (সূরা আরাফ : ১২৮)
রাসূল সা. দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেছেন, যে লোক কোনো অনাবাদি জমি আবাদ করবে, সে তার মালিক হবে। আর যদি জালিম অন্যের জমিতে গাছ লাগায়, তবে সে তার মালিক হবে না। (আবু দাউদ: ৩০৬২)

৭. শ্রমনীতির প্রয়োগ:-
ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনাদর্শ হিসেবে অন্যান্য সকল দিকের মতো শ্রমজীবীদের সমস্যা ও সমাধান প্রদান করেছে। শ্রমিকের অধিকারের ব্যাপারে ইসলাম যতটা গুরুত্ব দিয়েছে পৃথিবীর অন্য কোন ধর্মে তার নজির খুঁজে পাওয়া যাবে না। ইসলাম চায় শ্রমিক ও মালিকের সৌহার্দ্যমূলক সম্পর্ক। যেখানে মালিক ও শ্রমিক সবার স্বার্থ সংরক্ষণ হবে। শ্রমিকের মজুরি এমনভাবে নির্ধারণ করা প্রয়োজন যাতে সে পরিবার-পরিজন নিয়ে সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে জীবনযাপন করতে পারে। এমনকি অন্ন, বস্ত্র, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা-সমানভাবে পেতে পারে। তাইতো এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, ‘নিশ্চয় আমি মানুষকে সৃষ্টি করেছি শ্রম নির্ভর করে।’ (সূরা বালাদ : ৪)
রাসূল সা. বলেছেন, ‘শ্রমিকের ঘাম শুকানোর আগেই তার পারিশ্রমিক দিয়ে দাও।’ (ইবনু মাজাহ-২৪৪৩)

৮. ইনসাফপূর্ণ বণ্টন:-
সম্পদের সুষ্ঠু বণ্টনের ওপরেই নির্ভর করে একটি জাতির সমৃদ্ধি ও উন্নতি। অর্থ এবং সম্পদের উৎপাদন যতই প্রচুর হউক না কেন, তার বণ্টন ব্যবস্থা যদি বিশুদ্ধ নীতি ও নির্ভুল পদ্ধতিতে কার্যকর না হয়, তবে তা সাংঘাতিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। বণ্টন-ব্যবস্থার ভুল নীতির দরুনই বর্তমান মানুষের আকাশছোঁয়া বিরোধ ও বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। একদিকে প্রাচুর্য এবং অপরদিকে দুঃসহ দরিদ্রতা মানব-সমাজকে ভারসাম্যহীন করে ধ্বংসের মুখে নিক্ষেপ করছে। তা কেবল ব্যক্তিগত জীবনেই নয়, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ ও জাতির মধ্যেও আজ বৈষম্য দিনের পর দিন মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে। আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেছেন, ‘সম্পদ যেন কেবল তোমাদের ধনীদের মধ্যে আবর্তিত না হয়।’ (সূরা হাশর : ৭)

৯. উত্তরাধিকার ব্যবস্থার যৌক্তিক রূপ:-
মানবতার মহান শিক্ষক মুহাম্মাদ সা. আবির্ভাবের পূর্বে পৃথিবীতে উত্তরাধিকার আইন স্বাভাবিক ছিল না। অর্থনীতিবিদরা মনে করেন যে, পাশ্চাত্য সমাজব্যবস্থায় বিরাজমান বৈষম্যের কারণ হলো এটিই। সেখানে বংশের বড় সন্তানেরাই উত্তরাধিকার হতো। বঞ্চিত হতো পরিবারের অন্যান্য সকল সদস্যরা। হিন্দু ধর্মের দিকে তাকালে দেখা যায় সেখানে উত্তরাধিকার সূত্রে ছেলেদেরকে সমান অধিকার দেওয়া হলেও মেয়েদেরকে একেবারেই বঞ্চিতা করা হয়। এর ফলে অত্যাচার, অবিচার, অনাচার ও নানা ধরনের সমাজবিধ্বংসী কাজ বাড়তেই থাকে। এই অবস্থা নিরসনের জন্য ইসলাম উত্তরাধিকার ব্যবস্থার যৌক্তিক রূপ দিয়েছে। যার বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে সূরা নিসার ১১ ও ১২ নম্বর আয়াতে।

১০. ন্যায়সঙ্গত রাষ্ট্রীয় হস্তক্ষেপ:-
ইসলামী অর্থনীতির মূল লক্ষ্য হলো সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা। সুবিচার প্রতিষ্ঠাই হলো অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সুনীতির শাসন ও দুর্নীতির প্রতিরোধ। রাষ্ট্ এই উপায়েই পারে সমাজ থেকে সুদ, ঘুষ, মুনাফাখোরি, মজুদদারি, চোরাচালানকারী, কালোবাজারি, আত্মসাৎকারী, উৎপাদন ও বিপণন ক্ষেত্রে সকল প্রকারের অসাধুতা দমন করতে। আর তখনই অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সমাজে শান্তি ও শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। তাই ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়, আন্দালুশিয়া হতে ইন্দোনেশিয়া পর্যন্ত অর্ধ পৃথিবী ইসলামী শাসনব্যবস্থার গৌরবোজ্জ্বল যুগে ইসলামী অর্থনীতিতে ছিল না শ্রেণিবৈষম্য। এমনকি কোন ক্ষুধাতুর মানুষও খুঁজে পাওয়া যেতো না। আজও বিশ্ব অর্থনীতিকে সচল ও সমৃদ্ধ রাখার জন্য প্রয়োজন মানবতার মহান শিক্ষক মুহাম্মাদ সা.-এর দেয়া সকল কর্মসূচির পূর্ণ অনুসরণ। বিশেষ করে সামগ্রিকভাবে ইসলামী জীবনব্যবস্থা বাস্তবায়ন। তাহলে আবার ফিরে আসবে ইসলামী অর্থনীতির হারানো গৌরব, সৃষ্টি হবে নতুন আর এক স্বর্ণোজ্জ্বল অধ্যায়।