রবিবার, ১৫ আগস্ট ২০২১

ধর্মহীন শিক্ষা ব্যবস্থা জাতির নৈতিক অধঃপতনের জন্য দায়ী : শিবির সভাপতি

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী বলেছেন, শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য মানুষের মনুষ্যত্বের বিকাশ সাধন করা। জ্ঞানের আলোয় আলোকিত হয়ে সমাজ রাষ্ট্র উদ্ভাসিত করা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থায় আলোকিত মানুষ তৈরীর পরিবর্তে মনুষ্যত্বহীন মানুষ তৈরী হচ্ছে। আজকের সমাজে প্রতিটি অন্যায় অনাচার কাজের সাথে তথাকথিত শিক্ষিত মানুষরা জড়িত। মূলত প্রচলিত ধর্মহীন নাস্তিক্যবাদী শিক্ষা ব্যবস্থা জাতির এই নৈতিক অধঃপতনের জন্য দায়ী।

তিনি আজ ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখা আয়োজিত ১৫ আগস্ট ইসলামী শিক্ষা দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। শাখা সভাপতি মু. আবুল খায়েরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

শিবির সভাপতি তিনি বলেন, বর্তমান পৃথিবীর সকল সমস্যার সমাধান কেবল মাত্র আল কুরআনে নিহিত রয়েছে। আর মানবজাতির শিক্ষার জন্য কুরআন থেকে উত্তম আর কিছু হতে পারে না। সুতরাং সমাজ রাষ্ট্রে শান্তি শৃঙ্খলা, সাম্য-ন্যায় বিচার ও আদর্শিক জাতি গঠনের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থাকে কুরআন-সুন্নাহর আলোকে ঢেলে সাজাতে হবে। শিক্ষা ব্যবস্থাকে প্রকৃত ইসলামী রূপদান করা গেলে জাতি এর সুফল হাতে নাতে পাবে।

তিনি আরো বলেন, প্রতিদিনের দৈনিক পত্রিকা খোলার সাথে সাথে হত্যা খুন রাহাজানির সংবাদের সাথে সাথে ব্যাপক ভাবে দুর্নীতি অবিচার ও শোষণের সংবাদ আমাদের চোখে পড়ে। এইগুলো একটি সভ্যদেশ ও বিশেষভাবে শতকরা ৯০ ভাগ মুসলমানের দেশে চলতে পারে না। এই দেশের মুসলমানদের ঈমান আকিদা ধ্বংস ও ইসলামের দিকে একনিষ্ঠতা রুখে দিতে একদল মুসলমান নামধারী নাস্তিক্যবাদী বিচ্ছিন্ন শক্তি ভিনদেশী বন্ধুদের সহযোগিতায় প্রতিটি সরকারের ওপর চাপ দিয়ে কৌশলে নাস্তিক্যবাদী ধর্মহীন শিক্ষা ব্যবস্থা জাতির ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। যার বিষাক্ত ফলাফল আজ সমাজের প্রতিটি রন্ধে রন্ধে প্রকাশিত হচ্ছে।

তিনি বলেন, আধুনিকতা ও প্রগতির নামে তরুণ সমাজের হাতে মাদক তুলে দিয়ে তাদেরকে বিপথগামী করা হচ্ছে। নারী পুরুষের মাঝে তথাকথিত সমান অধিকার বাস্তবায়ন করতে গিয়ে নারীর মান সম্মান পুরুষের কাছে স্বেচ্ছায় বিলিন হয়ে যাচ্ছে। আজ যারা আইনের রক্ষক হয়ে কাজ করার কথা তারাই আইন ভাঙতে বেশি তৎপর। তারা ধর্ষণের মত অপরাধে জড়িয়ে যাচ্ছে। আজ তথাকথিত ধনি পরিবারের সন্তানরা নৈতিক শিক্ষার অভাব ও ভিনদেশী অপসংস্কৃতির প্রভাবে নারী ও মাদকের নেশায় হারিয়ে যাচ্ছে। তাদের ঘর বাড়ী যেন মাদকের আখড়া। এটি জাতির জন্য মোটেও কল্যাণকর নয়।

তিনি বলেন, শহীদ আব্দুল মালেক ১৯৬৯ সালেই বুঝেছিলেন, এই জাতির শিক্ষা ব্যবস্থা ইসলামীকরণ না করা হলে জাতির ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে। আজকের সমাজ শহীদ আব্দুল মালেকের আশংকার ই প্রতিধ্বনি দিচ্ছে। সেদিন ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার পক্ষে কথা বলার জন্য আব্দুল মালেককে সমাজতান্ত্রিক ও সেক্যুলারপন্থিরা নির্মম ভাবে খুন করেছিল। এখনো সময় আছে শহীদ আব্দুল মালেকের স্বপ্নের ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা বাস্তবায়ন করে জাতিকে একটি সুন্দর সমাজ ও রাষ্ট্র উপহার দেওয়ার। তাহলেই শহীদ আব্দুল মালেকের রক্তের ঋণ পরিশোধ হবে।

তিনি অনতিবিলম্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দিয়ে শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করারও আহবান জানান।