মাসব্যাপী বৃক্ষরোপণ অভিযান ঘোষণা করেছে ছাত্রশিবির

২১ জুন থেকে ২০ জুলাই ২০২১ পর্যন্ত মাস ব্যাপি বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এ উপলক্ষ্যে রাজধানীতে কর্মসূচির উদ্বোধন ও ছাত্রদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ছাত্রশিবির। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সভাপতি সালাহউদ্দিন আইউবী। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রাজিবুর রহমান পলাশ, সাহিত্য সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম, দাওয়াহ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, প্রচার সম্পাদক গোলাম রাব্বানীসহ নেতৃবৃন্দ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে কেন্দ্রীয় সভাপতি বলেন, বৃক্ষ জীবজগতের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার এক বিশেষ নিয়ামত। বৃক্ষের সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের অস্তিত্বের সম্পর্ক। আমাদের জীবন ও জীবিকার জন্য বৃক্ষের প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। বৃক্ষ সমস্ত প্রাণীর খাদ্য যোগান দেয়। বিশাল এ প্রাণীজগৎকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য অক্সিজেন দেয়। সেই সাথে প্রাণীজগৎকে বিপন্নকারী কার্বন-ডাই অক্সাইড শোষণ করে। বন্যা, ক্ষরা, ঝড় নিয়ন্ত্রণ করে বৃক্ষ প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষা করে। আবহাওয়া ও জলবায়ুকে নাতিশীতোষ্ণ রাখে। মাটিকে উর্বর করে তোলে। রাসূল (সা.) নিজে গাছ লাগিয়েছেন, সাহাবায়ে কেরামকে গাছ লাগাতে ও বাগান করতে উদ্বুদ্ধ করেছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বৃক্ষরোপণকে সদকায়ে জারিয়া হিসেবে ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, ‘ বৃক্ষ থেকে মানুষ, পশু-পাখি যখন খাদ্য গ্রহণ করে, তখন তা রোপণকারীর জন্য সদকা হিসেবে পরিগণিত হয়।’ (বুখারি ও মুসলিম)। সুতরাং বৃক্ষরোপণের গুরুত্ব যে অপরিসীম তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
অন্যদিকে প্রাকৃতিক বিপর্যয় বাংলাদেশের এক ভয়াবহ সমস্যা। কিন্তু শুধুমাত্র গাছ লাগানোর মাধ্যমে এই বিপর্যয় রোধের পাশাপাশি আরো লাভবান হওয়া সম্ভব। পরিবেশের ক্ষতিকর দিক থেকে রক্ষা পেতে এবং সবুজ-শ্যামলিমায় ভরে তুলতে বেশী করে গাছ লাগাতে হবে। এতে করে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি দেশ আর্থিকভাবেও লাভবান হবে। সার্বিক দিক বিবেচনায় প্রতি বছরই ছাত্রশিবির প্রতিবছর বৃক্ষরোপন কর্মসূচি ঘোষণা ও বাস্তবায়ন করে থাকে।
উল্লেখ্য, এ বছর প্রতিবর্গ কিলোমিটারে ১টি করে মোট ১ লক্ষ ৪৭ হাজার বৃক্ষরোপণের বিশেষ কর্মসূচি পালনের লক্ষ্য নিয়ে আগামী ২১ জুন থেকে ২০ জুলাই ২০২১ পর্যন্ত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে ছাত্রশিবির। বৃক্ষরোপণ অভিযান সফল করতে নিম্নোক্ত কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
o প্রত্যেক জনশক্তি ১টি করে ফলজ, বনজ ও ঔষধি গাছের চারা রোপণ করবেন।
o প্রত্যেক জনশক্তি ২টি করে চারা বিতরণ করবেন।
o বৃক্ষ নিধন রোধ ও বৃক্ষরোপণের ব্যাপারে জনসচেতনতা তৈরির লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা।
o বিশেষত, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল ও মাদরাসার ছাত্রদের মাঝে গাছের চারা বিতরণ করা।
o নদী ভাঙ্গনসহ যেকোন ভাঙ্গন রোধে এবং বেড়ি বাঁধে পরিকল্পিতভাবে গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করা।
o বাড়িওয়ালাদের চারা গাছ উপহার দেওয়া ও তাঁদের বাড়ির আঙিনা বা ছাদে গাছের চারা রোপণ করে দেওয়া।
o বিগত বছরের রোপিত চারা গাছের পরিচর্যা করা।
o স্বাস্থ্যবিধি মেনে কর্মসূচি পালন করা।
o শাখা পর্যায়ে সর্বোচ্চ বৃক্ষরোপণকারী ১০ জন জনশক্তিকে বৃক্ষবন্ধু/পরিবেশ বন্ধু এওয়ার্ড প্রদান করা হবে।
o বৃক্ষরোপন ও পরিবেশ রক্ষায় অবদান রাখার জন্য কেন্দ্রীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে ৫ জনকে পরিবেশ বন্ধু এওয়ার্ড প্রদান করা হবে।