বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০১৯

এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রহসনমূলক রায় বহাল রাখায় শিবিরের প্রতিক্রিয়া

রাজনৈতিক ছকে অবিচারের মাধ্যমে এটিএম আজহারুল ইসলামকে হত্যার ষড়যন্ত্র করছে সরকার

সরকারের মদদপুষ্ট ও বিতর্কিত ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রদত্ত প্রহসনমূলক রায় আপিল বিভাগে বহাল রাখাকে সরকারের সাজানো ছক উল্লেখ করে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বার্তায় ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন ও সেক্রেটারি জেনারেল সিরাজুল ইসলাম বলেন, একটি বিতর্কিত, প্রশ্নবিদ্ধ, কলঙ্কিত ও সরকারের মদদপুষ্ট ট্রাইবুনালের প্রহসনমূলক রায় আপীল বিভাগ বহাল রেখে দেশের জনগণকে আবারো হতাশ করেছে। রাজনৈতিক অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতেই এই ন্যায়ভ্রষ্ট রায় বহাল রাখা হয়েছে বলে মনে করে বিবেকবান জনগণ। একটি মহলের ইশারায় একের পর এক জামায়াত নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে ফরমায়েশি মৃত্যুদন্ড প্রদান করেছে ট্রাইব্যুনাল। কিন্তু আপিল বিভাগ থেকে মানুষ ন্যায়বিচার প্রত্যাশা করে। ট্রাইবুনালের সাজানো রায় নিয়ে দেশ-বিদেশে চরম বিতর্ক ও বিরুপ প্রতিক্রিয়া থাকার পরও এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে রায় বহাল রাখা হয়েছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বাস্তবায়ন করতেই তাঁর বিরুদ্ধে এই সাজনো রায় বহাল রাখা হয়েছে বলে মনে করে সচেতন দেশবাসী। সাজানো এ রায়ে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয়নি।

নেতৃবৃন্দ বলেন, এটিএম আজহারুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রদত্ত রায় যে ন্যায়ভ্রষ্ট তা বিচার প্রক্রিয়ার বিভিন্ন ধাপে ধাপে প্রমাণিত হয়েছে। যাদের সাক্ষীতে তাকে মৃত্যুদন্ড দেওয়া হয়েছে তাদের একজন ৬ কিলোমিটার, একজন ৩ কিলোমিটার আরেকজন দেড় কিলোমিটার দূর থেকে অপরাধকর্মে আজহারুল ইসলামকে সম্পৃক্ত হতে দেখেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এমনকি তারা নিহতদের গ্রামের বাসিন্দা বা আত্নীয় স্বজনও নয়। এমন নির্লজ্য মিথ্যা সাক্ষীর উপর কোন আসামীর মৃত্যুদন্ড হতে পারে তা সুস্থ-বিবেকবান মানুষ বিশ্বাস করতে পারেনা। তাছাড়া প্রসিকিউসনের পক্ষে ১৮ জন সাক্ষীকে অনুমতি দেয়া হলেও আসামীর পক্ষে মাত্র ৪ জনকে সাক্ষ্য দিতে অনুমতি দেওয়া হয়েছে। প্রসিকিউসন ও তদন্ত সংস্থাকে দেড় বছর সময় দেয়া হলেও আসামী পক্ষকে দেয়া হয়েছে মাত্র ৪ সপ্তাহ। এই মামলা সেই সময় আমলে নেয়ার জন্য বলা হয়েছিল যখন বিচার বিভাগের ইতিহাসের কালো অধ্যায় স্কাইপি ক্যালেঙ্কারীর ফাঁস হয়েছিল এবং এই ক্যালেঙ্কারী দায় মাথায় নিয়ে বিচারপতি নিজামুল হক নাসিম পদত্যাগ করেছিলেন। তাছাড়া মামলার পদে পদে ছিল অসঙ্গতি। ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে নয় বরং এ রায় আওয়ামলীগ ও তাদের সহযোগি বিভ্রান্ত শাহবাগী আন্দোলনকারীদের বক্তব্যে ও ইচ্ছার প্রতিফলন হয়েছিল। এরপরও কোন বিশেষ মহলকে খুশি করতেই এই রায় বহাল রাখা হয়েছে কিনা তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। সামান্যতম বিবেচনাবোধ সম্পন্ন মানুষ এ রায় মেনে নিতে পারেনা।

নেতৃবৃন্দ বলেন, আদালতকে জনগণ ন্যায়বিচারের প্রতিক হিসেবে দেখতে চায়। কিন্তু জামায়াত নেতৃবৃন্দের উপর বার বার যে অবিচার করা হচ্ছে তাতে জাতি হতাশ। জনগণ বার বার বিচারের নামে অবিচার দেখতে প্রস্তত নয়। আমরা আশা করি তিনি মামলার রিভিউয়ের মাধ্যমে নির্দোষ প্রমাণিত হবেন। তাঁর মুক্তির মাধ্যমে আদালতের প্রতি মানুষের পূর্ণ আস্থা ফিরে আসবে বলে আমরা আশা করি।

নেতৃবৃন্দ যেকোন সংকির্ণতা ও প্ররোচণার উর্দ্ধে উঠে ন্যায়বিচারের স্বার্থে নির্দোষ জনপ্রিয় জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলামকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে আদালতের প্রতি আহবান জানান।

শাহাদাত হোসাইন
প্রচার সম্পাদক
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির

সংশ্লিষ্ট