বৃহস্পতিবার, ০১ আগস্ট ২০১৯

ডেঙ্গুর মহামারি থেকে বাঁচতে সকলের সচেতনতা জরুরি-ছাত্রশিবির


রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ডেঙ্গুর ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব রোধে সহায়তায় নেতাকর্মীদের নির্দেশ, তদারকির জন্য মনিটরিং সেল গঠন এবং সেই সাথে সকলকে সচেতনতার আহবান জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মোবারক হোসাইন ও সেক্রেটারি জেনারেল সিরাজুল ইসলাম বলেন, দেশে ডেঙ্গু ভয়ঙ্কর রুপ ধারণ করেছে। ইতোমধ্যে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বহু মানুষ মারা গেছেন। প্রতিদিনই মৃতের সংখ্যা বাড়ছে। হাসপাতালে রোগিদের জায়গা সংকুলান হচ্ছে না। পর্যাপ্ত সেবা ও ঔষধ পাওয়া যাচ্ছে না সব জায়গায়। আরো শঙ্কার বিষয় হলো এবার ডেঙ্গু ইতোমধ্যেই ৬২ টি জেলায় জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই বিপুল সংখ্যক মানুষ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সরকারের প্রচেষ্টা একেবারেই অপ্রতুল ও প্রশ্নবিদ্ধ। এমন ভয়াবহ অবস্থায় সচেতনতাই এখন ডেঙ্গু প্রতিরোধের উত্তম পন্থা। দেশের এই ভয়াবহ পরিস্থিতিতে সকলকে যার যার অবস্থান থেকে সচেতন ও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। বিশেষ করে ছাত্রসমাজকে ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করতে হবে।

নেতাকর্মীদের প্রতি ডেঙ্গু আক্রান্তদের সহায়তা ও ডেঙ্গু প্রতিরোধে পরিকল্পিত কার্যক্রম পরিচালনার নির্দেশ দিয়ে নেতৃবৃন্দ বলেন, দেশ ও জাতির সংকটকালে ছাত্রশিবিরের নিরব থাকার নজির নেই। ছাত্রশিবির প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সাধ্যমত বিপদগ্রস্থ মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে। এবারও তার ব্যতিক্রম হবে না ইনশাআল্লাহ। ডেঙ্গু আক্রান্তদের সহায়তা এবং প্রাদুর্ভাব প্রতিরোধে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে নেতাকর্মীদের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রতিটি এলাকায় বিশেষ টিম গঠন করে ডেঙ্গু প্রতিরোধের কর্মসূচি গ্রহন করতে হবে। ডেঙ্গু আক্রান্তদের সহায়তায় সার্বক্ষণিক রক্তদান ও রক্ত সংগ্রহে প্রচেষ্টা চালাতে হবে। পরিবার পাড়া মহল্লা সবখানে ডেঙ্গু প্রতিরোধের পদ্ধতিগুলোর বিষয়ে জনগণকে সচেতন করতে হবে। একইসাথে এডিস মশার প্রজননের স্থানগুলো ধ্বংস করতে সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে হবে। এসব কর্মকান্ডে তরুণ ও ছাত্রসমাজকে সম্পৃক্ত করতে হবে। কেউ ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে সাথে সাথে তাকে চিকিৎসার জন্য সহায়তায় সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। জাতিকে যেন আল্লাহ তায়ালা এই মহামারি থেকে রক্ষা করেন সে জন্য বিশেষ আমল ও দোয়া করতে হবে।

সবাইকে সচেতন হওয়ার আহবান জানিয়ে তারা বলেন, বিপদটা আমাদের সবার। সুতরাং নিজেদেরকেই সর্বোচ্চ সচেতন হতে হবে। সবাই মিলে সম্মিলিত প্রচেষ্টা চালালে এ মহামারি রোধ সম্ভব হবে, ইনশাআল্লাহ। আমাদের সকলকে জানতে হবে এবং জানাতে হবে যে, জমা হওয়া স্বচ্ছ পানিতে এডিস মশা ডিম পাড়ে। তাই ঘরে সাজানো ফুলদানি, অব্যবহৃত কৌটা, যেকোনো পাত্র বা জায়গায় জমে থাকা পানি তিন থেকে পাঁচ দিনের বেশী জমে থাকতে দেয়া যাবে না। এডিস মশা সাধারণত সূর্যোদয়ের আধা ঘণ্টার মধ্যে ও সূর্যাস্তের আধা ঘণ্টা আগে কামড়াতে পছন্দ করে। তাই এই দুই সময়ে মশার কামড় থেকে বিশেষভাবে সাবধানে থাকতে হবে। ঘুমানোর আগে অবশ্যই মশারি ব্যবহার করতে হবে। এটা ডেঙ্গু প্রতিরোধের সর্বোত্তম পন্থা। ডেঙ্গু জ্বর সন্দেহ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় পরীক্ষা ও চিকিৎসা করাতে হবে। এ কাজগুলো যার যার অবস্থানে থেকে সবাইকেই করতে হবে। আমরা আশা করি, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাতিকে এই ভয়ঙ্কর মহামারি থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে ইনশাআল্লাহ।

উল্লেখ্য সেক্রেটারি জেনারেল মোঃ সিরাজুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও সমাজসেবা সম্পাদক ডাঃ সালমান ফারসিকে সদস্য সচিব করে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রোধে জনসাধারণকে সচেতন করা ও আক্রান্তদের সহযোগিতা করার কার্যক্রম তদারকির লক্ষ্যে ছয় সদস্য বিশিষ্ট একটি কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল গঠন করা হয়েছে। এছাড়া উপরিউক্ত কার্যক্রমসমূহকে বাস্তবায়ণের লক্ষ্যে স্বেচ্ছাসেবক টিম ও আক্রান্তদের সহায়তায় একাধিক মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।