শুক্রবার, ১২ জুলাই ২০১৯

নারী ও শিশু ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং খুনের ঘটনাসমুহের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবীতে রাজধানীসহ সারাদেশে শিবিরের মানববন্ধন

নারী ও শিশু ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং খুনের ঘটনাসমুহের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবীতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন শাখা।

মানববন্ধনে অংশ নিয়ে শিবির নেতৃবৃন্দ বলেন, একের পর এক নৃশংস ও লোমহর্ষক ঘটনায় দেশবাসী আতঙ্কিত। ধর্ষণ যেন এক মহামারিতে পরিণত হয়েছে। খুন নৃশংসতা নিত্যদিনের স্বাভাবিক বিষয়ে পরিণত হয়েছে। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়সহ কোন জনপদেই যেন আজ নারীরা নিরাপদ নয়। সরকারের প্রশ্রয়ে দেশকে ধর্ষণের স্বর্গরাজ্যে পরিণত করেছে সন্ত্রাসীরা। বর্তমানে ধর্ষণ ভয়াবহ রুপ ধারণ করেছে। গত ছয় মাসে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে শিশু ধর্ষণের সংখ্যা। শুধু বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুযায়ী গত ছয় মাসে ৫৩৭ জনেরও বেশি শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছে। গণধর্ষণের শিকার হয়েছে ৫৩ শিশু, হত্যা করা হয়েছে ২০৮ শিশুকে। এছাড়া শিশুকে ধর্ষণের পর তাকে হত্যা এবং ধর্ষণের শিকার শিশুর আত্মহত্যার ঘটনা ঘটেছে বেশ কিছু। ৯২ বছরের বৃদ্ধা থেকে শুরু করে ২ বছরের শিশু পর্যন্ত ধর্ষণের শিকার হচ্ছে।

এটা কোন সভ্য সমাজ বা দেশের চিত্র হতে পারে না। একটি মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে এমন সামাজিক দূর্দশা কোন ভাবেই কাঙ্খিত ছিল না। কিন্তু রাষ্ট্রের মদদে অবাদে অশ্লীলতা বেহায়াপনার প্রসার, ভিনদেশী উলঙ্গ সংস্কৃতি আমদানি ও শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিক শিক্ষার সংকির্ণকরনের কারনে সামাজিক নৈতিক এবং অবক্ষয় চরম আকার ধারণ করেছে। যার ভয়াবহ কুফল ভোগ করতে হচ্ছে জাতিকে।

নেতৃবৃন্দ বলেন, অন্যদিকে সরকারের বিচারহীনতা ও সরাসরি প্রশ্রয়ে ধর্ষণের মত ঘৃন্য কাজ নির্বিঘ্নে করে যাচ্ছে নরপিশাচরা। আর এসব অপকর্মে বেশির ভাগ সরকার-দলীয় সন্ত্রাসীরা জড়িত থাকার কারণে সরকার এমন জঘন্য বিষয়গুলো এড়িয়ে যাচ্ছে। ফলে সারাদেশেই ধর্ষণকে মহামারিতে রুপ দিয়েছে তারা। চরম বিচারহীনতা আজকের এই ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য দায়ী। গত নির্বাচনের পর সুবর্ণচরে শুধুমাত্র নৌকায় ভোট না দেয়ার কারণে চার সন্তানের জননীকে গণধর্ষণ করেছে আওয়ামী সন্ত্রাসীরা সন্ত্রাসীরা। এর আগে শরিয়তপুরে ছাত্রলীগ নেতা আরিফ হোসেন হাওলাদার ছয় নারীকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে সর্বত্র ছড়িয়ে দিয়েছে। অন্যদিকে বরিশালে ছাত্রলীগ নেতা সুমন হোসেন মোল্লা স্বামীকে আটকে রেখে নববধূকে ধর্ষণ করেছে এবং এই ধর্ষণের কথা সে আদালতে স্বীকারও করেছে।

বরগুনায় তরুণীকে ধর্ষণের পর হত্যা ও লাশ গুম করেছে পাথঘাটা কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতিসহ চার নেতা। আর রাজশাহীতে শিশু ও চুয়াডাঙ্গায় মদ্যপ অবস্থায় তরণীকে ধর্ষণ করতে গিয়ে গণধোলাই খেয়েছে ছাত্রলীগ নেতারা। দেশের বেশির ভাগ ধর্ষণ ও খুনের সাথে যে সরকার-দলীয় লোকজন জড়িত, তা বার বার গণমাধ্যমের কল্যাণে জনগন দেখেছে। এর আগেও জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের সেঞ্চুরী পালন করে ছাত্রলীগ নেতা জাতির জন্য কলঙ্কজনক অধ্যায় রচনা করেছিল। তাদের ধর্ষণ ও খুনের ধরণ এবং মাত্রা আইয়্যামে জাহেলিয়াতকেও হার মানাচ্ছে। অথচ এখন পর্যন্ত তার কোনটিরই সুষ্ঠ বিচার হয়নি। ফলে উৎসাহ পেয়ে সন্ত্রাসীদের লোমহর্ষক অপকর্ম বেড়েই চলেছে। যা গোটা জাতিকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। শিশু, তরুণী, শিক্ষার্থী এবং তাদের অভিভাবকরা শঙ্কায় দিন যাপন করছে।

নেতৃবৃন্দ আরো বলেন, সরকারের পাশ কাটানো ভূমিকায় মনে হয় তারা সন্ত্রাসীদের কাছে মা-বোনদের সম্ভ্রমহানীর লাইসেন্স দিয়েছে। কিন্তু এদেশের ছাত্রজনতা তা মেনে নিতে পারে না। সরকার তাদের বিচারহীনতা ও প্রশাসন যদি সন্ত্রাসীদের অনৈতিক মদদ অব্যাহত রাখে তাহলে অভিশপ্ত অপশক্তিকে মোকাবেলা করতে ছাত্রসমাজ দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে। আমরা সরকারের প্রতি আহবান রেখে বলতে চাই, আমরা চাই না এরকম দুঃস্বপ্ন আরও কোনও মা দেখুক। চাই না কোনও বোনের সঙ্গে ঘটতে থাকুক এসব ঘৃণ্য অপকর্ম। এসব কাপুরুষ অমানুষদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার সময়ের অপরিহার্য দাবী। আর একটা নারীও যেন ধর্ষণ, নির্যাতন ও নিপীড়নের শিকার না হন। শুধু চলমান অপরাধীরা নয় বরং সারাদেশে ইতিপূর্বে গ্রেফতারকৃত ও চিহ্নিতদের খুঁজে কঠিন বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। একই সাথে সকল প্রকার অশ্লীলতা বেহায়াপনা ও অপসংস্কৃতি বন্ধ করতে হবে। ইসলামী মূল্যবোধের ভিত্তিতে শিক্ষা ব্যবস্থা প্রনয়ণ করতে হবে।

ঢাকা মহানগর পূর্ব:

নারী ও শিশু ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং খুনের ঘটনাসমুহের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবীতে রাজধানীতে মানবন্ধনের আয়োজন করে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পূর্ব শাখা। সকাল ৮টায় অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সাহিত্য সম্পাদক রাজিবুল হাসান বাপ্পী। এসময় মহানগর সভাপতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকা মহানগর পশ্চিম:

নারী ও শিশু ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং খুনের ঘটনাসমুহের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবীতে রাজধানীতে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করে ছাত্রশিবির ঢাকা মহানগর পশ্চিম শাখা। সকাল ৯টায় মিরপুরে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম। এসময় মহানগর সভাপতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

রংপুর মহানগর:

নারী ও শিশু ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং খুনের ঘটনাসমুহের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবীতে মানবন্ধনের আয়োজন করে ছাত্রশিবির রংপুর মহানগর শাখা। সকাল ১০টায় অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মহানগর সভাপতি।এসময় মহানগরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সিলেট মহানগর:

একই দাবীতে মানবন্ধনের আয়োজন করে ছাত্রশিবির সিলেট মহানগর শাখা। সকাল সাড়ে ৯টায় নগরীর আম্বরখান এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করে নেতাকর্মীরা। এতে মহানগর সভাপতিসহ শাখার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা অংশ গ্রহন করে।

চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর:

নগরীতে নারী ও শিশু ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং খুনের ঘটনাসমুহের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবীতে মানবন্ধনের আয়োজন করে ছাত্রশিবির চট্টগ্রাম মহানগর উত্তর শাখা। এসময় মহানগর সভাপতিসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বগুড়া শহর:

নারী ও শিশু ধর্ষণ, যৌন নির্যাতন এবং খুনের ঘটনাসমুহের দৃষ্টান্তমূলক বিচারের দাবীতে মানবন্ধনের আয়োজন করে ছাত্রশিবির বগুড়া শহর শাখা। সকাল ১১টায় অনুষ্ঠিত এ মানববন্ধনে শাখা সভাপতিসহ বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ গ্রহণ করে।