মঙ্গলবার, ১০ এপ্রিল ২০১৮

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে পুলিশ ও ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদ

কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ অবস্থানে পুলিশ ও ছাত্রলীগের যৌথ হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে ছাত্রশিবিরের বিবৃতি

কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবীতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর পুলিশ ও ছাত্রলীগের যৌথ হামলার প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি প্রদান করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

এক যৌথ বিবৃতিতে ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইয়াছিন আরাফাত ও সেক্রেটারি জেনারেল মোবারক হোসাইন বলেন, শিক্ষা একটি জাতির অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির হাতিয়ার তা সবাই স্বীকার করছে। একই সাথে লাখো শিক্ষার্থীদের সাথে বৈষম্যমূলক প্রক্রিয়াও অব্যাহত আছে। বর্তমানে রাজধানীসহ সারাদেশে শিক্ষার্থীরা বৈষম্যমূলক কোটা পদ্ধতি সংস্কারের দাবীতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন করছে। এর আগেও গলায় সার্টিফিকেট ও হাতে ঝাড়ু নিয়ে শিক্ষার্থীরা তাদের শোচণীয় অবস্থার প্রকাশ করেছে। কিন্তু সরকার কোন ভাবেই তাদের দাবীর প্রতি কর্ণপাত করছে না। উল্টো গতকাল পুলিশ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের উপর নির্বিচারে হামলা চালিয়ে বহু ছাত্রকে আহত ও রক্তাক্ত করেছে। অন্যদিকে ছাত্রলীগ কোটা পদ্ধতি সংস্কারে আন্দোলনকারীদের পক্ষে অবস্থান না দিয়ে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সেক্রেটারির নেতৃত্বে ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীরা গভীর রাতে সাধারণ ছাত্রদের উপর নির্বিচারে হামলা চালিয়েছে। হামলা থেকে আন্দোলনরত ছাত্রীরাও রেহাই পায়নি। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসীদের নির্বিচারে হামলার মাধ্যমে তাদের আসল চরিত্র জাতির সামনে প্রকাশ পেয়েছে। এর আগেও আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা পুলিশ ও ছাত্রলীগের বর্বর হামলার শিকার হয়েছিল। যৌক্তিক দাবীতে বৈষম্যের শিকার শিক্ষার্থীদের উপর এমন বর্বর আচরণ কোন ভাবে মেনে নেয়া যায় না।

নেতৃবৃন্দ সাধারন শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে সমর্থন জানিয়ে বলেন, কোটা বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের প্রতিটি দাবী যৌক্তিক। ৫৬ ভাগ শিক্ষার্থী শুধু কোটা পদ্ধতিতেই নিয়োগ পাচ্ছে যা পৃথিবীর কোন দেশে নেই। আবার কোটায় যোগ্য প্রার্থী পাওয়া না গেলে হাজার হাজার পদ শুন্যই থেকে যাচ্ছে। কোটায় বিশেষ পদ্ধতিতে পরিক্ষা নিয়ে মেধাবীদের অবমূল্যায়ন করা হচ্ছে। অন্যদিকে চাকরির বয়সেও কোটাধারীদের ২ বছর বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এই অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক অনৈতিক প্রক্রিয়া লাখো মেধাবীকে দেশ গড়ার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছেই না বরং মেধাবীদের মূল্যহীন করে তুলছে। স্বাধীনতার পর থেকে বৈষম্যমূলক কোটা ব্যবস্থার মাধ্যমে মেধাবীদের সকল ক্ষেত্রে বঞ্চিত করা হচ্ছে। চাকরির সুযোগ লাভে সমতার যে সাংবিধানিক অঙ্গীকার, তার বিপরীতে যুগ যুগ ধরে ভিন্ন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। দেশে যেখানে লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত যুবক চাকরীর অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে সেখানে শুধু কোটা পদ্ধতির কারণে হাজার হাজার পদ শুন্য অবস্থায় ফেলে রাখা তামাশা ছাড়া কিছুই নয়। অবিলম্বে শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী পুলিশ ও ছাত্রলীগ সন্ত্রাসীদের দৃষ্টান্ত মূলক বিচার করতে হবে। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবী মেনে নিয়ে তাদের ক্লাসে ফিরিয়ে নিতে হবে। অন্যথায় লাখো শিক্ষার্থীকে বঞ্চিত করার প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকলে শিক্ষার পরিবেশ বিঘিœত হলে তার দায় সরকারকেই নিতে হবে।

সংশ্লিষ্ট