বুধবার, ২০ এপ্রিল ২০১৬

ঝিনাইদহে কিলিং মিশনে নেমেছে সরকার

বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি আতিকুর রহমান বলেছেন, অবৈধ সরকারের রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। আর সেই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই পুলিশ দিয়ে নিরপরাধ ছাত্রজনতাকে হত্যা করছে। ঝিনাইদহে গণহত্যার নৃশংসতা দেখছে দেশবাসী। মূলত ঝিনাইদহতে কিলিং মিশনে নেমেছে সরকার।

তিনি আজ রাজধানীর এক মিলনায়তনে ছাত্রশিবির আয়োজিত সদস্য প্রার্থী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক মোবারক হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সেক্রেটারী জেনারেল ইয়াছিন আরাফাত। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন এইচ আর ডি সম্পাদক শাহীন আহাম্মদ খান ও মানবাধিকার সম্পাদক শাহ মো: মাহফুজুল হক সহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।

শিবির সভাপতি বলেন, অবৈধ সরকার ও তাদের সেবাদাস পুলিশ যৌথভাবে দেশে একের পর এক বর্বরতার নজির স্থাপন করে চলেছে। একদিকে গণতন্ত্র, মৌলিক অধিকার ও রাষ্ট্রীয় স্তম্ভগুলো ধ্বংস করছে অন্য দিকে শহর বন্দর গ্রাম প্রতিটি জনপদে সুপরিকল্পিতভাবে নির্বিচারে ছাত্রজনতাকে হত্যা করে চলেছে। সম্প্রতি ঝিনাইদহে গণহত্যা সংগঠিত করেছে অবৈধ সরকার। সেখানে অল্প সময়ের ব্যবধানে মাদ্রাসা শিক্ষক আবু হুরায়রা, শিবির নেতা আবু যর গিফরী ও শামিম হোসেনকে আটকের পর গুম করে হত্যা করেছে পুলিশ। বিগত সময়গুলোতে ঝিনাইদহে পুলিশ পরিচয়ে ২৭ জনকে অপহরণ করার পর ২৩ জনের লাশ পাওয়া গেছে। এক মাসের ব্যবধানে পুলিশ ৪ জনকে হত্যা করেছে। আজও গ্রেপ্তারের পর অস্বীকার করে ১০ দিন পর ঝিনাইদহে কলেজ ছাত্র সোহানুর রহমান সোহানকে খুন করে চুয়াডাঙ্গার মাঠে ফেলে রাখে পুলিশ। সরকার পরিকল্পিত গণহত্যার মাধ্যমে ঝিনাইদহকে এক মৃত্যুর উপত্যকাতে পরিণত করেছে। খুনের নেশায় ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েছে এই জালিম সরকার। এর আগেও সাতক্ষীরা, গাইবান্ধা ও রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে পরিকল্পিতভাবে কিলিং মিশন পরিচালনার মাধ্যমে অসংখ্য ছাত্র ও জনতাকে খুন করেছে সরকার।

তিনি বলেন, প্রতিটি হত্যার ধরণ একই। কলেজ ছাত্র সোহানকে অপহরণের সময় স্থানীয় জনতা তাদের বাধা দেয়। কিন্তু জনতাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে সোহানকে তুলে নিয়ে যায়। এ সময় প্রত্যক্ষদর্শীরা কালীগঞ্জ থানার এসআই নীরব ও এএসআই নাসিরকে চিনতে পারে। এ থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় যে, এটি একটি পরিকল্পিত হত্যাকান্ড এবং এতে পুলিশ সরাসরি জড়িত। কিন্তু সরকারের নির্দেশ ছাড়া শুধু পুলিশের পক্ষে এত বড় গণহত্যা চালানো কি সম্ভব? এটি এখন দিবালোকের মত স্পষ্ট সরকারের নির্দেশেই পুলিশ ঝিনাইদহে একের পর এক গণহত্যা চালাচ্ছে। তাই ভবিষ্যতে প্রতিফোটা রক্তের হিসাব আজকের ক্ষমতাশীনদের দিতে হবে।

তিনি বলেন, জাতির জন্য লজ্জার বিষয় হলো এই হত্যা মিশনে ভাড়াটে খুনির মত দায়িত্ব পালন করছে পুলিশ। এটি মানবাধিকারের সুষ্পষ্ট লঙ্ঘন। তিনি হুশিয়ার করে বলেন, অবৈধ সরকারের ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। খুনিরাও জনগণের দৃষ্টি সীমার বাইরে নয়। এমন জঘন্য খুনিদের জাতি ভূলবে না। সময়ের ব্যবধানে প্রতিটি খুনের কঠোর বিচার করা হবে। অবৈধ সরকারের সাথে সাথে তাদের সেবাদাস পুলিশ নামের কলঙ্ক ভাড়াটে খুনিরাও ছাড় পাবেনা।

তিনি সদস্য প্রাথীদের উদ্দেশ্যে বলেন, যে কোন সংকট মোকাবেলায় সর্বদা প্রস্তুত থাকতে হবে। জাতির প্রয়োজনে যে কোন ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। আমরা বাতিল শক্তিকে এই বার্তাই দিতে চাই, যতই হত্যা নির্যাতন করা হোক না কেন ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা তাদের লক্ষ্য থেকে এক চুল পরিমাণ পিছু হটবে না। ছাত্রশিবিরের ছাত্রসমাজকে সাথে নিয়ে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ত্ব বিরোধী সকল অপতৎপরতা রুখে দিতে বদ্ধপরিকর।

সংশ্লিষ্ট